এফএনএস স্পোর্টস: ম্যাচের শুরুতেই পেনাল্টি হজমের ধাক্কা দারুণভাবে কাটিয়ে উঠল রিয়াল মাদ্রিদ। বিরতির আগে তিন মিনিটে করল অসাধারণ দুটি গোল। দ্বিতীয়ার্ধে আরও চাপ বাড়িয়ে রিয়াল সোসিয়েদাদের জালে গোল উৎসব করল কার্লো আনচেলত্তির দল। সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে গত শনিবার রাতে লা লিগার ম্যাচে ৪-১ গোলে জিতেছে রিয়াল। মিকেল ওইয়ারসাবালের গোলে পিছিয়ে পড়ার পর সমতা টানেন এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। পরক্ষণেই স্বাগতিকদের এগিয়ে নেন লুকা মদ্রিচ। দ্বিতীয়ার্ধে তাদের বাকি দুটি গোল করেন করিম বেনজেমা ও মার্কো আসেনসিও। পুরো ম্যাচে বল দখলে একচেটিয়া আধিপত্য করলেও প্রথমদিকে আক্রমণে ভুগছিল রিয়াল। তাদের প্রথম ছয় শটের একটিও ছিল না লক্ষ্যে। সেই তারাই পরের ১২ শটের আটটি রাখল লক্ষ্যে, তার চারটিই সফল। দুর্দান্ত এই পারফরম্যান্সের আত্মবিশ্বাস মনে গেঁথে চার দিন পর ইউরোপ সেরার মঞ্চে নামবে পিএসজি। সেখানে তাদের অপেক্ষায় তারকাসমৃদ্ধ পিএসজি। ঢিমেতালে শুরু ম্যাচের নবম মিনিটে প্রথম উলেখযোগ্য আক্রমণ শাণায় সোসিয়েদাদ এবং তাতেই পেয়ে যায় গোলের উপলক্ষ। ডি-বক্সে অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার দাভিদ সিলভাকে ডিফেন্ডার দানি কারভাহাল ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। পোস্ট ঘেঁষে স্পট কিকে দলকে এগিয়ে নেন আরেক স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড মিকেল ওইয়ারসাবাল। বল দখলে রিয়াল আধিপত্য করলেও ধারহীন আক্রমণে প্রতিপক্ষের জমাট রক্ষণ ভাঙতে পারছিল না। লক্ষ্যে কোনো শটই নিতে পারছিল না তারা। ৩৬তম মিনিটে একটা সুবর্ণ সুযোগ অবশ্য এসেছিল; কিন্তু বাঁ দিক থেকে লুকা মদ্রিচের গোলমুখে বাড়ানো ক্রসে প্রয়োজনীয় টোকা দিতে পারেননি কাসেমিরো। অবশেষে ৪০তম মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে সমতা টানেন কামাভিঙ্গা। মদ্রিচের পাস ধরে প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে আচমকা বুলেট গতির শট নেন ফরাসি মিডফিল্ডার। ঝাঁপিয়ে বলের নাগাল পাননি গোলরক্ষক। ওখান থেকেই যেন জেগে ওঠে রিয়াল। দুই মিনিট পরই জালে বল পাঠান বেনজেমা। রেফারির অফসাইডের বাঁশিতে যদিও গোল মেলেনি। পরের মিনিটেই অবশ্য আরেকটি চমৎকার গোলে দলকে উচ্ছ¡াসে ভাসান মদ্রিচ। বেনজেমার ছোট করে নেওয়া কর্নারে বল ধরে তাকেই ফেরত পাঠান কারভাহাল। ফরাসি স্ট্রাইকারের পাস ধরে মদ্রিচ এক ঝটকায় সামনের প্রতিপক্ষকে এড়িয়ে ৩০ গজ দূর থেকে নিলেন শট। দূরের পোস্ট দিয়ে বল খুঁজে নিল ঠিকানা। দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে বেনজেমার কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক আলেক্স রেমিরো। ৬১তম মিনিটে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতার আরেকটি শটও কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক। ৬৯তম মিনিটে আবারও জালে বল পাঠান বেনজেমা। কিন্তু হতাশা তার পিছু ছাড়েনি; এবার আক্রমণ গড়ে ওঠার পথে রদ্রিগো অফসাইডে ছিলেন। এর সাত মিনিট পর সফল স্পট কিকে হতাশা ঝেড়ে ফেলেন বেনজেমা। বাঁ দিক দিয়ে ভিনিসিউস জুনিয়র ডি-বক্সে ঢুকতেই ফাউলের শিকার হওয়ায় ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টি দেন রেফারি। আসরে বেনজেমার গোল হলো ২০টি। ৭৯তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন আসেনসিও। বাইলাইনের কাছ থেকে কারভাহালের কাটব্যাক পেয়ে প্লেসিং শটে গোলটি করেন দুই মিনিট আগেই রদ্রিগোর বদলি নামা স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। অসাধারণ এই লিগ টেবিলে সেভিয়ার চেয়ে ৮ পয়েন্টে এগিয়ে গেল রিয়াল। ২৭ ম্যাচে ১৯ জয় ও ৬ ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৬৩। সেভিয়ার অর্জন ৫৫ পয়েন্ট। ২৬ ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রিয়াল বেতিস। বার্সেলোনা ২৫ ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে আছে তাদের পরে। লা লিগায় টানা তিন জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে আগামী বুধবার পিএসজির মুখোমুখি হবে রিয়াল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠতে ঘরের মাঠের ওই ম্যাচে জিততেই হবে তাদের এবং ব্যবধান হতে হবে যথেষ্ট। গত মাসে প্যারিসের ক্লাবটির মাঠে ১-০ গোলে হেরে পিছিয়ে আছে ইউরোপের রেকর্ড চ্যাম্পিয়নরা।