এফএনএস: ভারতে গ্রেপ্তার আলোচিত রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর আল মানার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কবজি বিচ্ছিন্ন পুলিশ সদস্য জনি খানকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি এ কথা বলেন। চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আসামির দায়ের কোপে জনি খানের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়। আইজিপি বলেন, পি কে হালদারের বিরুদ্ধে মামলাটি দুদকের। আমরা দুদককে সহযোগিতা করছি। তাকে ভারতীয় ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এনসিবির মাধ্যমে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হয়। আর এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে ভারতের এনসিবির যোগাযোগ রয়েছে। গত ১৪ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অভিযান চালিয়ে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার করে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বাংলাদেশ থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তারের আগে ভারতে তার বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান পাওয়া যায়। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় পি কে হালদারের সহযোগী সুকুমার মৃধার কাছে এই অর্থের সন্ধান মেলে। ১৩ মে সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় ইডি। জনি খানকে দেখতে গিয়ে আইজিপি ‘পুলিশের চাকরিটাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়া’ উলেখ করে বলেন, পুলিশ সবসময় ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে। প্রতিবছর ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে গিয়ে শত শত সহকর্মী আমরা হারাই। তবে প্রতিটি ঘটনা থেকে আমরা শিখি ও সতর্ক হই। এর আগে আহত জনি খানের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। গত ১৫ মে সকাল ১০টার দিকে লোহাগাড়া থানার পদুয়া ইউনিয়নের লালারখিল এলাকায় আসামির ধারালো দায়ের কোপে পুলিশ সদস্য জনি খানের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ১৬ মে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আল মানার হাসপাতালে পুলিশ সদস্য জনি খানের হাতের কবজি টানা ১০ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় জোড়া লাগানো হয়। গত ১৯ মে দিবাগত রাতে কবজি বিচ্ছিন্নের মর্মান্তিক ঘটনায় মূল আসামি কবির আহমদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। আইজিপি বলেন, আলাহর অশেষ রহমতে আহত কনস্টেবল জনি ভালো আছেন। এই হাসপাতালের অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা প্রায় নয় ঘণ্টা ধরে বিচ্ছিন্ন কবজি অপারেশনের পর জোড়া লাগান। বাংলাদেশের যেসব চিকিৎসক এই অপারেশন করেছেন তাদের কাছে পুলিশ কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশের চিকিৎসাবিজ্ঞান অনেক এগিয়েছে এটিই তার প্রমাণ। আহত কনস্টেবলের জন্য আমরা দোয়া চাই। আর এই কাজটি যে আসামি করেছিল তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ কোনো জনগোষ্ঠী কিংবা কারও টার্গেট কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রধান বলেন, আমরা বিষয়টি এভাবে দেখি না। পুলিশ অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কাজ করে। যারা অপরাধী তারা ভয়ানক ও বিপজ্জনক। তাই তাদের আইনের আওতায় আনতে গেলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই পারে। তবুও আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা মেনেই অভিযান পরিচালনা করি এবং দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করি।