বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:০৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
এই প্রজন্মের প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করা প্রয়োজন: জামায়াতের আমির সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করবে নির্বাচন কবে: প্রেস সচিব হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনতেই হবে, ছেড়ে দেওয়া যাবে না: তারেক রহমান কারণে—অকারণে অবরোধ, ধৈর্যের সীমা শেষ করে দিচ্ছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুরনো চার বিভাগকে চারটি প্রদেশ করার সুপারিশ আখেরি মোনাজাতে শেষ হলো প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা লুট হওয়া পুলিশের অস্ত্র উদ্ধারে গতি নেই শ্যামনগরে বেড়েছে সরিষার চাষ, বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি শ্যামনগরে আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরনকালে আটক দুই কলারোয়ায় জাতীয় শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সম্পন্ন ও পুরষ্কার বিতরণ

পুরনো চার বিভাগকে চারটি প্রদেশ করার সুপারিশ

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

এফএনএস: ক্ষমতার প্রত্যর্পণ বিবেচনায় দেশে বিশাল জনসংখ্যার পরিষেবা ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ করার লক্ষ্যে দেশের পুরনো চারটি বিভাগের সীমানাকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার হাতে তুলে দেন কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়। কমিশন স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি সুপারিশ করে। প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু করা নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া এবং সরকারের কার্যপরিধি সুবিস্তৃত হওয়ার ফলে বর্তমান প্রশাসনিক ও স্থানীয় সরকার কাঠামো যথেষ্ঠ বলে প্রতীয়মান হয় না। অপরদিকে, এককেন্দ্রিক ব্যবস্থায় মন্ত্রণালয় পর্যায়ে খুঁটিনাটি বহু কাজ সম্পাদন করা হয়। ক্ষমতার প্রত্যর্পণ (ডেলিগেশন) বিবেচনায় দেশে বিশাল জনসংখ্যার পরিষেবা ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ করার লক্ষ্যে দেশের পুরাতন চারটি বিভাগের সীমানাকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। এর ফলে এককেন্দ্রীক সরকারের পক্ষে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার সুযোগ হ্রাস পাবে। পাশাপাশি রাজধানী ঢাকা শহরের ওপর চাপ হ্রাস পাবে। রাজধানী ঢাকা মহানগরীর জনসংখ্যা ও পরিষেবার ব্যাপ্তির কথা বিবেচনায় রেখে নয়া দিল্লির মতো ফেডারেল সরকার নিয়ন্ত্রিত ‘ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট’ বা ‘রাজধানী মহানগর সরকার’ (ঈধঢ়রঃধষ ঈরঃু এড়াবৎহসবহঃ) গঠনের সুপারিশ করা হলো। অন্যান্য প্রদেশের মতই এখানেও নির্বাচিত আইন সভা ও স্থানীয় সরকার থাকবে। ঢাকা মহানগরী, টঙ্গী, কেরানীগঞ্জ, সাভার ও নারয়ণগঞ্জকে নিয়ে ‘ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট’—এর আয়তন নির্ধারণ করা যেতে পারে। জেলা পরিষদ বাতিল: স্থানীয় সরকারের একটি ধাপ হিসেবে জেলা পরিষদ বহাল থাকবে কি না সে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা রয়েছে। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কখনোই নাগরিকদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হননি। কিছু জেলা পরিষদ বাদে অধিকাংশেরই নিজস্ব রাজস্বের শক্তিশালী উৎস নেই। ফলে অধিকাংশ জেলা পরিষদ আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। সেহেতু জেলা পরিষদ বাতিল করা যেতে পারে। জেলা পরিষদের সহায়—সম্পদ প্রস্তাবিত সংশ্লিষ্ট প্রাদেশিক সরকারকে হস্তান্তর করা যেতে পারে। পৌরসভা শক্তিশালীকরণ: পৌরসভার গুরুত্ব বিবেচনায় স্থানীয় সরকার হিসেবে একে অধিকতর শক্তিশালী করার জন্য সুপারিশ করা হলো। পৌরসভা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন ওয়ার্ড মেম্বারদের ভোটে। কারণ চেয়ারম্যান একবার নির্বাচিত হলে মেম্বারদের আর গুরুত্ব দেয় না। উপজেলা পরিষদকে শক্তিশালী করা: স্থানীয় সরকার হিসেবে উপজেলা পরিষদকে আরো শক্তিশালী করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। তবে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদটি বাতিল করা যেতে পারে। উপজেলা পরিষদকে আরো জনপ্রতিনিধিত্বশীল করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের মধ্য সদস্যদের এক—তৃতীয়াংশকে আবর্তন পদ্ধতিতে পরিষদের সদস্য হওয়ার বিধান করা যেতে পারে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে উপজেলা পরিষদের অধীনে ন্যস্ত না রেখে তাকে শুধু সংরক্ষিত বিষয় ও বিধিবদ্ধ বিষয়াদি যেমন আইনশৃংখলা, ভূমি ব্যবস্থাপনা, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ইত্যাদি দেখাশুনার ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ করা হলো। এর উদ্দেশ্য তাকে রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে রাখা। একজন সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার অফিসারকে উপজেলা পরিষদের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। ভূমি ব্যবস্থাপনাকে কার্যকর করার জন্য উপজেলা পর্যায়ে দ্বিতীয় শ্রেনীর একজন ভূমি ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার পদ সৃষ্টি করা যেতে পারে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় কর্মরত কানুনগোদের মধ্য থেকে পদোন্নতির মাধ্যমে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর অধীনে তাদের পদোন্নতি ও পদায়ন করা যেতে পারে। এরূপ পদোন্নতির পরীক্ষা পিএসসি—র মাধ্যমে হতে হবে। পরবর্তীতে তারা পদোন্নতি পেয়ে ২৫% সহকারী কমিশনার (ভূমি) হতে পারবে। ইউনিয়ন পরিষদের সংস্কার: ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সংখ্যা জনসংখ্যার অনুপাতে ৯— মধ্য ১১ করা যেতে পারে। প্রতিটি ওয়ার্ডে দুইজন সদস্য নির্বাচিত হবেন, যাদের মধ্যে একজন অবশ্যই মহিলা হতে হবে বলে বিধান করার সুপারিশ করা হলো। এর ফলে একদিকে মহিলাদের ৫০% প্রতিনিধিত্ব এবং তাদের কর্মএলাকা সুনিশ্চিত হবে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন মেম্বারদের ভোটে। কারণ চেয়ারম্যান একবার নির্বাচিত হলে মেম্বারদের আর গুরুত্ব দেয় না। ইউনিয়ন পরিষদকে অধিকতর দায়িত্ব দেওয়া: উপানুষ্ঠানিক ও মসজিদভিত্তিক উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদকে দেওয়া যেতে পারে। ইউনয়ন পর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কৃষি ও পানি বিষয়ক কমিটি গঠন করা মধ্য যেতে পারে। একইভাবে পরিষেবা সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা কমিটিসহ ও অন্যান্য কমিটি গঠন করা যেতে পারে। ইউনিয়ন পরিষদে বর্তমানে যে গ্রাম আদালত বা সালিশী ব্যবস্থা রয়েছে তাকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করা হলে গ্রাম পর্যায়ে মামলা—বিরোধ ইত্যাদি কমে আসবে। এলাকার জনসাধারণকে আমন্ত্রণ জানিয়ে গনশুনানির মাধ্যমে এসকল কমিটি গঠন করতে হবে এবং কমিটিসমূহের কার্যক্রমে তাদের উপস্থিত থাকার সুযোগ দিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com