বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
শ্যামনগরে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জিয়া স্মৃতি ভলিবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে মৃত্যুর চার মাস পর কবর থেকে গৃহবধুর মরদেহ উত্তোলন দেবহাটায় জামায়াতের আয়োজনে কুরআন শিক্ষায় মুহাদ্দিস রবিউল বাসার উচ্চতায় পৌছানো রুপসী ম্যানগ্রোভ দেবহাটা পর্যটন কেন্দ্র আলো ঝলমলে দ্যুতি ছড়ানো সৃষ্টিশীলতার অনন্য ক্ষেত্র কুলিয়ার টিকেট কালীপূজা পরিদর্শন করলেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ ভোমরায় টাস্কফোর্সের অভিযানে ৩ টন রসুন উদ্ধার সহ লাখ টাকা জরিমানা খলিশখালী সচেতনতামূলক নারী সমাবেশ বাস্তবায়ন সাতক্ষীরায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিল জেলা পুলিশ বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে শিবিরের ফ্রী ব্লাড গ্রুপ ক্যাম্পেইন নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে মহান বিজয় দিবস পালিত

পুরাতন-বিদায়ী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী মিলিয়ে সংসদীয় কমিটি গঠন

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

জি এম শাহনেওয়াজ ঢাকা থেকে ॥ একটি সংসদ গঠনের শুরুতেই আলোচনা তুঙ্গে থাকে নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাচ্ছেন কারা। এগারোই জানুয়ারি মন্ত্রিসভা গঠনের পর সংসদের বিরোধী দল কারা এবং জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলীয় নেতা-উপনেতা এবং সরকারি দলের প্রধান হুইপ-হুইপ কারা হচ্ছেন। এ পর্ব শেষ হয়েছে। বর্তমান সরকারি দলের ভিতর-বাইর ও সংসদজুড়ে আলোচনায় চাওর চলতি সংসদের কারা হচ্ছেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি। বর্তমান সরকার প্রধান ও সংসদ নেতা গুরুত্বপূর্ণ এই পদে কাদের রাখতে চাইছেন এ নিয়ে চলছে জোর গুঞ্জন ও আলোচনা। গত ৩০ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় এবং মূলতবি সংসদ ফের বসছে রবিবার বিকালে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত হয়ে যাবে কারা হচ্ছেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি। তবে এবার সংসদীয় কমিটি গঠনে কিছুটা ভিন্নতা থাকতে পারে এমন আভাস পাওয়া গেছে আওয়ামী লীগের দলীয় নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে আলাপে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, – ২০০৯ সালে ২৯ ডিসেম্বর বড় ম্যান্ডেড নিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করেন আওয়ামী লীগ। ওই সংসদে সরকারি দল, বিরোধী দল এবং ছোট ছোট দল থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে থেকে করা হয়েছিল সংসদীয় কমিটির সভাপতি। কিছুটা তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয় শেখ হাসিনার সরকার। ওই সংসদে পরিকল্পনা সংসদীয় কমিটির সভাপতি করা হয় এলডিপির সভাপতি কর্ণেল (অব.) আলে আহমেদকে। আর মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ সংসদীয় কমিটির সভাপতি করা হয় বিএনপির এমপি আশরাফুজ্জামান নিজামকে। কিন্তু সরকারে বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কারণে পরিকল্পনার সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় অলি আহমেদকে। এসব কারণে পুরো চিত্র বদলে যায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদের পর নতুন গঠিত সংসদে। বিদায়ী মন্ত্রিসভার (পুনরায় মন্ত্রী না করা) সব সদস্যকে করা হয় সংসদীয় কমিটির সভাপতি। টানা দু’সংসদ এভাবেই চলে এসেছে। এবার কিছুটা পরিবর্তন আনা হতে পারে সংসদীয় কমিটির সভাপতির পদে। বিরোধী দল এবং স্বতন্ত্র এমপিদের (সরকারের প্রতি অনুগত ও আস্থাভাজন) মধ্যে থেকে যারা অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সংসদ সদস্য আছেন তাদের মধ্যে থেকে দু-একজনকে করা হতে পারে সংসদীয় কমিটির সভাপতি। একই ভাবে, বিদায়ী মন্ত্রি ও পুরাতন সাবেক মন্ত্রীদের মধ্য থেকে যারা দক্ষ তাদেরকে এবার সংসদীয় কমিটির সভাপতি করার চিন্তা রয়েছে সরকারের। তবে, বিতর্কিত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের সংসদীয় কমিটির সভাপতি না করার বিষয়ে কিছুটা ভাবনা রয়েছে দলটির নীতি-নির্ধারকদের। আওয়ামী লীগের দলীয় এবং সংসদ সচিবালয়ের সূত্রমতে, দশম সংসদের মতো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। দশম সংসদ থেকে নতুন এই সংসদটি একটু ব্যতিক্রম। কারণ স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের সংখ্যা ৬২ জন। ফলে সংসদীয় কমিটি গঠন এবং কমিটির সভাপতি করার ক্ষেত্রে ভিন্ন আঙ্গীকে সাজানোর কথা ভাবছেন দলীয় প্রধান, সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রীদের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে (ওয়্যাচ ডগ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে সংসদীয় কমিটি। তাই এই পদে একাদশ জাতীয় সংসদে যারা মন্ত্রী- প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, আগের সংসদে মন্ত্রী ছিলেন এবং সংসদ বিষয়ে অভিজ্ঞ এসব এমপিদের কমিটির সভাপতি করায় নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি আনুগত্য থেকে এ চিন্তা করা হচ্ছে। একই ভাবে, সংসদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য বিরোধী দল (জাপা ছাড়াও) অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র এমপিদের মধ্যে অভিজ্ঞতা সম্পন্নদের করা হতে পারে সংসদীয় কমিটির সভাপতি। এ বিষয়ে সংসদ নেতার মৌন-সম্মতি রয়েছে বলেও দলটির ঘনিষ্টসূত্রে জানা গেছে। তবে, একাদশ জাতীয় সংসদে মন্ত্রিসভায় ছিলেন, কিন্তু বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে সমালোচিত হয়েছিলেন এবং মন্ত্রী হয়েও মন্ত্রণালয় পরিচালনায় দক্ষতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন; কমিটির সভাপতির পদ না-ও পেতে পারেন তারা। অর্থাৎ বিতর্কিতরা বাদ পড়তে পারেন এবার সংসদীয় কমিটির সভাপতির পদ থেকে। এ তালিকায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মো. নুরুজ্জামান, এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে মোমেন, কামাল আহমেদ মজুমদার, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ও যুব-ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হোসেন রাসেনসহ অনেকেই বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়া শারিরিক অসুস্থতার কারণে তোফায়েল আহমেদ ও বিদায়ী অর্থমন্ত্রী মুস্তুফা কামালকেও না রাখা হতে পারে। একাদশ জাতীয় সংসদের আলোচিত মন্ত্রীদের মধ্যে কমিটির সভাপতি হওয়ার ক্ষেত্রে দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন যারা তাদের মধ্যে, -সাবেক কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী শাহাবুদ্দিন ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এছাড়া মির্জা আজম, আ স ম ফিরোজ, আ ফ ম রুহুল হক, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, রাশেদ খান মেনন ও বীরেন শিকদার। কমিটির সভাপতির পদে নতুন মুখ হিসেবে কাজী নাবিল আহমেদ ও ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা। এছাড়া সাবেক মন্ত্রীদের মধ্যে মুজিবুল হকসহ দলীয় আনুগত্যে আস্থাভাজনদের সভাপতি করার চিন্তা রয়েছে দলটির। তাছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদে মনোনয়ন পাননি নৌকার অনেক এমপি এবং নৌকা পেয়েও অনেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও এমপি পরাজিত হয়েছেনদলীয় স্বতন্ত্রদের কাছে। ফলে বড় একটি গ্যাপ রয়েছে বিদায়ী সংসদের সঙ্গে চলতি সংসদের। ফলে সংসদীয় কমিটির পদে আমুল পরিবর্তন আসছে এটা অনেকটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। কমিটির সভাপতি করার ক্ষেত্রে কি ধরণের ব্যক্তিদের চিন্তা করা হচ্ছে জানতে চাইলে সরকারি দলের হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, পুরো চিন্তা ও পরিকল্পনার বিষয়টি দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভালো জানেন। তবে যতটুকু অনুমান করতে পারি বা করতে পারছি তার মধ্যে পুরাতন ও সদ্য বিদায়ী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীদের মধ্য থেকে করার চিন্তা রয়েছে। এছাড়া সংসদের ভারসাম্য ও স্বচ্ছতার জন্য বিরোধী দল ও স্বতন্ত্রদের মধ্যে সংসদ বিষয়ে দক্ষদের এবার সভাপতি করা হতে পারে। কারণ সংসদীয় কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ও মন্ত্রণালয়ের ওয়্যাচ ডগ হিসেবে কাজ করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com