শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৯ অপরাহ্ন

পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বালি

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩

এফএনএস বিদেশ: পৃথিবীতে পানির পর সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি রয়েছে বালি। উপস্থিতি যেমন বেশি অপচয়ও তেমন বেশি। ভেবে দেখেন তো এত বড় বড় ইমারতে যে থাকছেন আর নতুন এত অট্টালিকা তৈরি হচ্ছে, কী হবে যদি বালি না থাকে? এবার জানা যায় বালির রসায়ন। আধুনিক প্রযুক্তি তৈরির ক্ষেত্রে বড় ভ‚মিকা রয়েছে সিলিকনের। সিলিকনের সঙ্গে অ্যালুমিনিয়াম বা লোহা মিশিয়ে তৈরি করা হয় ডায়নামো, ট্রান্সফরমার প্লেটস, ইঞ্জিন বøকস, সিলিন্ডার, যন্ত্রের টুল, ডিঅক্সাইড ইস্পাত। এই সিলিকনেরও কিন্তু অন্যতম উপাদান হল বালি। বালির সঙ্গে চুনাপাথর-সহ আরও বেশ কিছু উপকরণ গলিয়ে, রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি হয় কাচ। সুতরাং, কাচ তৈরির অন্যতম উপকরণও হল বালি। তবে পৃথিবী থেকে বালি ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সমুদ্রসৈকত থেকে নিয়মিত তোলা হচ্ছে বালি। রোজ যত পরিমাণ বালি উত্তোলন করা হয়, তত পরিমাণ কিন্তু তৈরি হয় না। সেখানেই বাড়ছে সমস্যা। রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিবেশ প্রকল্প (ইউএনইপি) বলছে, গত দু’দশকে বালির চাহিদা আগের থেকে বেড়েছে তিন গুণ। ২০১৯ সালে পৃথিবীতে বালির চাহিদা ছিল পাঁচ হাজার কোটি টন। নির্মাণের ক্ষেত্রে এক টন সিমেন্টের সঙ্গে তার সাত থেকে আট গুণ বালি মেশাতে হয়। তবেই মজবুত হয় নির্মাণ। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ২০১২ সালে বালি দিয়ে যত নির্মাণ হয়েছে, তা যোগ করলে গোটা পৃথিবীর চারপাশে বিষুবরেখা বরাবর ৮৮ ফুট উঁচু প্রাচীর দেয়া যায়। তবে শিল্পায়ন এবং নগরায়ন করতে গিয়ে নির্মাণের জন্য পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে যথেচ্ছ বালি উত্তোলন করা হয়। যতটা প্রয়োজন, তার থেকে অনেক বেশি বালি উত্তোলন করা হয়। তার পর তার বেশির ভাগ নষ্ট হয়। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড (ডবøুডবøুএফ) বলছে, যথেচ্ছ বালি তোলার কারণে মাটি আলগা হয়ে যাচ্ছে। সে কারণে বন্যার প্রবণতা বাড়ছে।নদীগর্ভ থেকে ক্রমাগত বালি উত্তোলনও বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে পরিবেশকে। ডবøুডবøুএফ ভ‚তত্ত¡বিদ মার্ক গোয়চট জানিয়েছেন, নদীগর্ভে বালি থাকলে তা জলবায়ুর পরিবর্তনের মোকাবিলা করতে পারে। নদীর ব-দ্বীপে যথেষ্ট পলি, বালি থাকলে তবেই তা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উঁচুতে থাকে। এর ফলে সমুদ্রের নোনাজল ঢুকতে পারে না নদীতে। ২০১৪ সালে ইউএনইপি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে জানিয়েছিল, বালি হল বিরল এক প্রাকৃতিক সম্পদ। তাই এর ব্যবহার কমানো উচিত। যথেচ্ছ নির্মাণেও লাগাম টানার পরামর্শ দিয়েছিল তারা। গবেষকেরা মনে করছেন, পৃথিবীতে বালির সঞ্চয় ধরে রাখতে বালির পুনর্ব্যবহার প্রয়োজন। তবে নির্মাণ কাজে যে পরিমাণ বালি ব্যবহার করা হয় তাতে পুনর্ব্যবহারের সুযোগ কম। তবে স্ব-সচেতনতা মেনে চললে এই ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com