মাসুম প্রতাপনগর আশাশুনি প্রতিনিধিঃ আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নে প্রলঙ্করী ঘুর্ণিঝড় আম্ফানে ভেঙ্গে নদীতে পরিণত হওয়া সড়ক পুনঃ নির্মানের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার ১৫ জুলাই বেলা ১১ টায় প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভাঙ্গন কবলিত সড়কে এ মানবনন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। বেঁচে থেকে অশান্তি, মরেও যেন শান্তি নেই, ত্রাণ চাই না রাস্তা চাই, আমরা বাঁচতে চাই, আমরা পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতে চাই, আমরা বাড়ি থেকে বের হতে চাই। এমন স্লোগানের প্লাকার্ড নিয়ে পানিতে দাড়িয়ে রাস্তা পুনঃ নির্মাণের দাবিতে সোচ্চার মানববন্ধনে অংশ নেওয়া স্থানীয়রা। প্রতাপনগর ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে ভাঙ্গনে বিচ্ছিন্ন গ্রামবাসী ও এলাকার সর্বশ্রেণী পেশার মানুষের অংশ গ্রহনে সাংবাদিক মিলন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সমাজসেবক নূরে আলম সিদ্দিকী, স্থানীয় সাংবাদিক মাসুম বিল্লাহ, মাস্টার আলমগীর হোসেন, ভাঙ্গন কবলিত মানুষের পক্ষে মোহসেনা মনু, মাহবুবর রহমান প্রমুখ। বক্তাগণ বলেন, বিগত ২০২০ সালের ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পূর্ব নাকনা কুড়িকাহুনিয়া রাস্তাটি জোয়ারের পানিতে ভেঙ্গে গড়ুইমহল খালের সাথে মিশে একাকার হয়ে যায়। ফলে রাস্তার মাঝখানে তৈরি হয় কৃত্রিম খাল। কিন্তু ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে নদী ভাঙ্গনের পর দীর্ঘ ৪ বছর প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে সোনাতনকাটি, গোকুলনগর, কুড়িকাহুনিয়া, শ্রীপুর ও পূর্ব নাকনা গ্রামের হাজার হাজার মানুষের যাতয়াতের রাস্তাটি সম্পুর্নভাবে ভেসে গিয়ে গড়ুইমহল খালের সাথে একাকার হয়ে গিয়ে এলাকাবাসীকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। গ্রামের সকল মানুষ বিশেষ করে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী, রোগি, বৃদ্ধ-শিশু, গর্ভবতী মায়েরা এখন গ্রাম থেকে বের হতে গেলে খুবই কষ্টসাধ্য পথ অবলম্বন করতে হয়। বিল, ক্ষেত, মাঠ, খাল-পুকুর ঠেলে পায়ে হেটে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে সড়ক ভেঙ্গে নদীতে পরিণত হওয়া নদীর খেয়া পার হয়ে, কোথাও কোথাও নৌকা চেপে যাতয়াত করতে হয়। বর্ষা বাদলের দিনে পথ অতিক্রম করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। এলাকার মানুষ কর্মহীন ও অতিকষ্টে দিনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। আগে যাতয়াতের রাস্তাছিল। মানুষ সকল সুযোগ সুবিধা সহজে পেয়ে যেত। বর্তমানে চরম কষ্ট আর নিরাপত্তাহীনতার মধ্যদিয়ে সেখানকার মানুষকে দিন যাপন করতে হচ্ছে। কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের ভবানী বিশ্বাস বলেন, রাস্তার পাশেই আমাদের একটি শ্মশান ঘাট ছিল। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় রাস্তার সাথে সাথে শ্মশানটিও বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে কেউ মারা গেলে অন্য গ্রামে গিয়ে দাহ করতে হয়। রাস্তা না থাকার কারণে বেঁচে থেকে অশান্তি, মরেও যেন শান্তি নেই । দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও তাদের যাতয়াতের ভেঙ্গে যাওয়া রাস্তাটি পুনঃ নির্মানের ব্যবস্থা না হওয়ায় ভুক্তভোগি এলাকাবাসী বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। বক্তাগণ, জন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাটি দ্রুত সমাধানের নিমিত্তে সড়ক পুনঃ নির্মানের জন্য মাননীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসকসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।