এ্যাড: তপন কুমার দাস \ বিজয় দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হলো দুর্গোৎসব। সাতক্ষীরার ৫৯৭টি পূজা মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জনের সময় বিষাদের সুর ছড়িয়ে পড়লেও উৎসবের শেষ ছিল না। বাংলাদেশ ভারত বিভক্তকরন ইছামতি নদীতে দীর্ঘ দিনের উৎসব ছিল দৃশ্যমান। দুই দেশের মানুষের ভৌগলিকতা আর সীমারেখা ছিল কঠোর তবে উৎসব ছিল দৃশ্যমান। আন্তর্জাতিক এই নদীতে দীর্ঘকাল যাবৎ দুই দেশের নাগরিকরা একে অপরের কাছাকাছি এসে সীমান্তরেখা ভুলে প্রতিমা বিসর্জনে অংশ গ্রহন করলেও সা¤প্রতিক বছর গুলোতে স্ব স্ব সীমানায় সীমান্ত আইন মেনে প্রতিমা বিসর্জনের ঘটনা ঘটছে। গতকাল বিজয় দশমীতে তাই বাংলাদেশ এবং ভারত উভয় দেশ নিজ নিজ সীমানায় প্রতিমা বিসর্জন করে, প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্য অবলোকন করতে এবং ভক্ত ও দর্শনার্থীরা ইছামতি তীরে ভিড় করে। বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি এবং আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, পুলিশ বিজিবি ছিল সতর্ক। মাঝ নদী বরাবর স্ব স্ব সীমানায় বিজিবি ও বিএসএফ ছিল সতর্ক প্রহরায়। বিকাল চারটা হতে দেবহাটা, কালিগঞ্জ সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার পূজা মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ইছামতী সীমান্তের টাউনশ্রীপুরস্থ চরশ্রীপুর মিলনমেলা স্তম্ভে ও তার আশপাশে আনতে থাকে। সন্ধ্যার আগে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জনের উৎসব, চলে দীর্ঘ সময়। বিজয় দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম যে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের শেষ হলো তা আগামী বছর আবারও মারতে দেবী দূর্গা কৈলাস থেকে (শ্বশুর বাড়ী) মত্ত লোকে (পিতৃভূমিতে) আসবেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ হিংসা, লালসা বিসর্জন দেয়াই মূলত বিজয় দশমীর মূল তাৎপর্য। আর এমন প্রবৃত্তি গুলো বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য। শাস্ত্র মতে এবার দেবী দূর্গা কৈলাস হতে মত্তলোকে এসে ছিলেন গজে চড়ে আর চলে গেলেন নৌকায়। এদিকে সাতক্ষীরা শহরের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। (কাটিয়া) সার্বজনীন পূজা মন্দির প্রাণ সায়ের খালে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাটিয়া মন্দির কমিটির সভাপতি গৌর চন্দ্র দত্ত, সহ-সভাপতি সংকর রায়, সাধারন সম্পাদক কিরন্ময় সরকার, জেলা জুয়েলার্স সমিতির সাধারন সম্পাদক মনোরঞ্জন কর্মকার সহ মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল সার্বজনীন পূজা মন্দির প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় পাশ্ববর্তী পুকুরে এবং মায়েরবাড়ি মন্দিরের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় জমিদার বাড়ি পুকুরে। এদিকে সাতক্ষীরা শহরের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। বাঁকাল বারুইপাড়া পূজা মন্দির, সুলতানপুর পূজা মন্দির, বাটকেখালী পূজা মন্দির, ইটাগাছা কর্মকার পাড়া পূজা মন্দির, ঝুটিতোলা পূজা মন্দির, সুদুরডাঙ্গী পূজা মন্দির ও সাহাপাড়া পূজা মন্দির। উলেখ্য জেলায় ৫৯৭ টি মন্দিরের মধ্যে ৫৫২টি মন্দিরে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। বাকী ৪৫টি মন্ডপের প্রতিমা আজ অথবা কাল বিসর্জন দেওয়া হবে। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক জাহিদ বিন আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।