রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:২৫ অপরাহ্ন

প্রেসিডেন্ট ইউনকে অভিশংসনের দাবি দ. কোরীয় আইনপ্রণেতাদের

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

এফএনএস বিদেশ : দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক—ইওলকে অভিশংসন করতে গতকাল বুধবার দাবি জানিয়েছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আকস্মিকভাবে সামরিক শাসন জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হওয়ার পরই এ দাবি উঠল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েক দশকের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে সিউল। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতাদের একটি জোট প্রেসিডেন্টের অভিশংসনের জন্য গতকাল বুধবার প্রস্তাব তোলার পরিকল্পনা করেছেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ভোটাভুটির জন্য বিলটি উত্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। এবিষয়ে আইনপ্রণেতা হোয়াং উন—হা বলেছেন, অভিশংসনের প্রস্তাব দ্রুত পাশ করতে পার্লামেন্টের উচিত প্রেসিডেন্টের কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত করার ওপর মনোযোগ দেওয়া। প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফসহ সিনিয়র সেক্রেটারিরা একযোগে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। জাতীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইউন বলেছেন, পারমাণবিক শক্তিধর উত্তর কোরিয়া ও রাষ্ট্রবিরোধী উত্তর কোরীয়পন্থীদের হুমকি মোকাবিলায় দেশের সংবিধান রক্ষার জন্য সামরিক শাসন প্রয়োজন ছিল। তবে তিনি কোনও সুনির্দিষ্ট হুমকির কথা উল্লেখ করেননি। এসময় সংসদ ভবনে হেলমেট পরা সেনারা প্রবেশের চেষ্টা করেন। আকাশে সামরিক হেলিকপ্টার চক্কর দিতে থাকে। পার্লামেন্টে কর্মরত কয়েকজন ব্যক্তি অগ্নিনির্বাপক স্প্রে ছুঁড়ে সেনাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। পার্লামেন্টের বাইরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। সামরিক শাসন ঘোষণার পর রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম বন্ধ এবং গণমাধ্যম ও প্রকাশনা সামরিক কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে জানায় সেনাবাহিনী। তবে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পার্লামেন্টের ১৯০ সদস্যের সর্বসম্মত ভোটে সামরিক শাসন প্রত্যাহারের প্রস্তাব পাশ হয়। ওই সদস্যদের মধ্যে দক্ষিণ প্রেসিডেন্টের নিজ দলের ১৮ সদস্যও ছিলেন। এরপর সামরিক শাসনের ঘোষণাটি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট ইয়ুন। সামরিক শাসন প্রত্যাহারের পর পার্লামেন্টের বাইরে অপেক্ষারত আন্দোলনকারীরা বিজয়োল্লাস শুরু করেন। তাদেরকে ‘আমরা জিতেছি!’ বলে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এদিকে, গতকাল বুধবার আরও বড় বিক্ষোভ সমাবেশের সম্ভাবনা রয়েছে। দেশটির বৃহত্তম ট্রেড ইউনিয়ন সংস্থা, দ্য কোরিয়ান কনফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নস জানিয়েছে, তারা সিউলে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে ও ইউন পদত্যাগ না করা পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাবে। বিক্ষোভের এলাকাগুলো এড়িয়ে চলার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত নিজ নাগরিকদের সতর্ক করেছে মার্কিন দূতাবাস। নেভার কর্প এবং এলজি ইলেকট্রনিকসসহ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে, রাজনৈতিক অস্থিরতায় দক্ষিণ কোরিয়ার শেয়ারবাজারে ২ শতাংশ পতন ঘটেছে ও মুদ্রা বিনিময় হার দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশটির অর্থমন্ত্রী চোই সাং—মক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর রি চ্যাং—ইয়ং জরুরি বৈঠক করেছেন। বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে প্রয়োজনে সীমাহীন তারল্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে, মুদ্রার পতন রোধে বিদেশি মুদ্রা বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com