শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন

ফসল উৎপাদন বাড়াতে \ চরের বিপুল জমি চাষের আওতায় আনার উদ্যোগ

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৬ মার্চ, ২০২২

এফএনএস : দেশের চরাঞ্চলের বিপুল পতিত জমি চাষের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মূলত ফসল উৎপাদন বাড়াতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশের চরাঞ্চলে এক লাখ এক হাজার ৮৯২ হেক্টর পতিত জমি রয়েছে। ওসব পতিত জমি চাষের আওতায় আনা হলে কৃষির বাণিজ্যিকীকরণের পাশাপাশি গড়ে উঠবে নারী ও তরুণ উদ্যোক্তা। কৃষি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে প্রায় দুই হাজার ২২৫ বর্গকিলোমিটার চরাঞ্চল রয়েছে। সেখানে ১৫ লাখ মানুষের বসবাস। তাদের অধিকাংশই দরিদ্র। ওই বিশাল চরাঞ্চলের প্রায় ৬৭ শতাংশ উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত। যার পরিমাণ প্রায় দেড় হাজার বর্গকিলোমিটার। ওই চরাঞ্চলে ফসল ফলিয়ে চরের মানুষের ভাগ্য বদলাতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার প্রয়োজন। এছাড়া পতিত জমি ব্যবহারও জরুরি। ওই লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশের চর এলাকার উপযোগী আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২২৮ কোটি টাকা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সম্প্রতি প্রকল্প প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। কমিশন যাচাই-বাছাই করে ওই বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। অনুমোদনের পর প্রকল্পটি ৬ বছর মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। সূত্র জানায়, চরাঞ্চলে ফসল ফললেও তা কাক্সিক্ষত মাত্রায় হয় না। তার কারণ কৃষকরা প্রচলিত ও আদি কৃষিপদ্ধতি অনুসরণ করছে। সেখানে ভাল বীজের অভাবের পাশাপাশি কৃষি বিকেন্দ্রীকরণের কোন পদ্ধতি নেই। তবে উন্নত বীজ ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে চাষাবাদ করে ফলন বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। আর ওই সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে শস্যের নিবিড়তা বাড়িয়ে কৃষকের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই প্রকল্পটির প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের চরাঞ্চলে এক লাখ এক হাজার ৮৯২ হেক্টর পতিত জমি রয়েছে। ওসব জমির শস্য নিবিড়তা ১৪০ শতাংশ (কোন জমিতে এক ফসল হলে সেটির শস্য নিবিড়তা শতভাগ ধরা হয়, সে হিসেবে ১৪০ শতাংশ শস্য নিবিড়তার অর্থ ওই জমিতে এক ফসল এবং আরেক ফসলের অর্ধেকের মতো ফলে)। ওসব পতিত জমি চাষের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি, ফসলের উন্নত জাত ও কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমে ওসব এলাকার শস্য নিবিড়তা আরো ৫ শতাংশ বাড়বে। ওই লক্ষ্যে পতিত জমি ব্যবহারের জন্য ৪ হাজার ২৮১টি সোলার প্যানেলযুক্ত (সৌরশক্তিচালিত) আলোক ফাঁদ, ৪ হাজার ২৮১টি এলএনপি (লো লিফট পাম্প) বিতরণ করা হবে। চরে ১২১টি বিশাল শেড, ১২১টি সাবমার্সিবল পাম্প ও ১২১টি সোলার সিস্টেম স্থাপন করা হবে। সূত্র আরো জানায়, ‘বাংলাদেশের চর এলাকার উপযোগী আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের দক্ষতা উন্নয়নসহ নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। তার মধ্যে রয়েছে ৪ হাজার ২৮১টি ব্যাচে কৃষকের দক্ষতা উন্নয়ন; চারা উৎপাদন ও পানির হাউসে সবজি উৎপাদনকারী কৃষকের দক্ষতা উন্নয়ন এবং এক হাজার ২১০টি মাঠ দিবস, ৪১১টি কৃষিমেলা, ৩০টি সেমিনার ও ৩৬০টি উদ্বুদ্ধকরণ ভ্রমণের আয়োজন। ওই প্রকল্পের আওতায় ৮৮ হাজার ১৮১টি কৃষিপ্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রদর্শনী হবে। তাতে নানা ধরনের কৃষিপণ্য প্রদর্শিত হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com