বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:১৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
সখিপুর ইউনিয়নে তারুণ্যের ভাবনা বিষয়ক কর্মশালা “মাসজিদে কুবা” নামাজ আর ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি মানবতার মনোমুগ্ধতার উচ্চতায় দেবহাটার পাঁচটি ইউনিয়নে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন চাপের মুখে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক নলতা আহছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ আশাশুনি তথ্য অধিকার বুথ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রশিক্ষণ সম্পন্ন সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ নূরনগরে জামায়াতের সেটআফ প্রোগ্রাম ও মতবিনিময় শীতার্তদের মাঝে জামায়াতের কম্বল বিতরণ

ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্পগুলোতে বিরাজ করছে স্থবিরতা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৫

এফএনএস এক্সক্লুসিভ: গণঅভ্যুত্থানের আগে বিগত সরকারের গৃহীত ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্পগুলোতে বর্তমানে স্থবিরতা বিরাজ করছে। বর্তমান সরকার ওই মেগাপ্রকল্পগুলো একেবারে বন্ধ না করে দিলেও গুরুত্ব দিচ্ছে কম। দেশের আট মেগাপ্রকল্পকে ফাস্ট ট্র্যাক হিসেবে বিগত সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নে তালিকাভুক্ত করেছিলো। কিন্তু বর্তমানে অর্থ সংকটে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ধীরগতিতে এগোলেও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মেগাপ্রকল্পগুলোতে তার প্রভাব নেই। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে বিগত সরকারের তোড়জোড় ছিলো। সেজন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রেও ওসব প্রকল্পকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হতো। চলতি অর্থবছরের এডিপিতেও বরাদ্দের ক্ষেত্রে ওসব প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। পাশাপাশি প্রকল্পগুলো তদারকি বাড়াতে ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং কমিটিও গঠিত হয়। ওই মেগাপ্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আগে তিন মাস পর পর মনিটরিং কমিটির বৈঠক হলেও বর্তমান সরকারের মেয়াদ পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো বৈঠক হয়নি। এমনকি কোনো পর্যালোচনাও নেই। সূত্র জানায়, ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে বর্তমান সরকারের সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা নেই। একই সঙ্গে কমে গেছে তদারকিও। বরং অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ওসব প্রকল্প এখন সাধারণ অন্যান্য প্রকল্পের মতো বাস্তবায়িত হচ্ছে। এমনকি ওসব প্রকল্পে অর্থছাড়েও গতি নেই। ফলে বেশির ভাগ প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে থাকলেও তা এখন ধীরগতিতে চলছে। ওসব প্রকল্প বাস্তবায়নে তিন লাখ ১৩ হাজার ৫২০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ রয়েছে দুই লাখ আট হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। বাকি দুই লাখ ৮৪ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় করা হচ্ছে। শুরু থেকে গত নভেম্বর পর্যন্ত গড় ভৌত অগ্রগতি ৯০.৯৪ শতাংশ। প্রকল্পগুলোর আওতায় খরচ হয়েছে মোট বরাদ্দের ৭৮.১৬ শতাংশ অর্থ। সাত প্রকল্পের মধ্যে কয়েকটির কাজ শেষ হওয়ার পথে। বাকিগুলোও বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে। তবে তার মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) প্রতি মাসে ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত মেগাপ্রকল্পগুলো পরিদর্শন করে অগ্রগতি প্রতিবেদন তৈরি করে। আর ওই প্রতিবেদনের ওপর মনিটরিং কমিটির বৈঠক হতো। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর থেকে আইএমইডি প্রতিবেদন তৈরি করলেও মনিটরিং কমিটির কোনো বৈঠক হচ্ছে না। এতে তদারকি কমার পাশাপাশি কমেছে অর্থছাড়। তাতে প্রকল্পগুলো আগের গতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। এ নিয়ে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে তেমন তাড়া দেখা যাচ্ছে না। ফলে তুলনামূলকভাবে কমে গেছে ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন অগ্রগতির হার। এদিকে ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত আটটি প্রকল্পের মধ্যে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। চলমান সাতটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে মেট্রো রেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল মৈত্রী বিদ্যুৎ প্রকল্প, মহেশখালী—মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ এবং দোহাজারী—রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু—মায়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গল লাইন ডুয়াল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প। তার মধ্যে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভাগের রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৯৯.৫০ শতাংশ, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দোহাজারী—কক্সবাজার—ঘুমধুম রেলপথের কাজ শেষ হয়েছে ৯৮.৮০ শতাংশ। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ শেষ ৯৩.২২ শতাংশ, মেট্রো রেল লাইন—৬—এর কাজ হয়েছে ৯০ শতাংশ, মহেশখালী—মাতারবাড়ীর কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দে্রর কাজ এগিয়েছে ৯০.৪০ শতাংশ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দে্রর অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৬৭.৮১ শতাংশ। তবে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর মেগাপ্রকল্পগুলো মধ্যে অপ্রয়োজনীয় বিবেচনায় একটি রেল প্রকল্প বাদ দেয়া হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মায়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গল লাইন ডুয়াল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ’ প্রকল্প থেকে বাদ গেছে রামু—ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ অংশের নির্মাণকাজ। প্রকল্পটির রামু—ঘুমধুম অংশ বাস্তবায়নে এডিবির অর্থায়নে অপারগতা এবং মায়ানমারের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে ট্রান্স এশিয়ান রেল সংযোগ স্থাপন আপাতত সম্ভব নয় বলে বাদ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ওসব প্রকল্প বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনৈতিক বিবেচনায় নেয়া এবং কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হলেও বর্তমান সরকার সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে আগের সরকারের আমলে নেয়া অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্পগুলোর বিষয়ে গুরুত্ব কম পেতে পারে। তবে প্রত্যাশা থাকবে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন কাজ দ্রুত শেষ করার।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com