মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন

ফ্রান্সে অনুমোদন পেল বিতর্কিত পেনশন সংস্কার

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৩

এফএনএস বিদেশ : ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিতর্কিত পেনশন সংস্কার বিল দেশজুরে বিক্ষোভ উস্কে দিয়েছে। তবে বিলটি সাংবিধানিক পরিষদের সবুজ সংকেত পেয়েছে। শুক্রবারেই বিলটি অনুমোদন করেছে সাংবিধানিক পরিষদ। খুব শিগগিরই এতে স্বাক্ষর করে এটিকে আইনে পরিণত করার পাশাপাশি তা কার্যকরও করা সম্ভব হবে। নতুন আইন এবছর সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর করা হবে বলে ঘোষণা করেছে ফ্রান্স সরকার। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ পেনশন পাওয়ার বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করতে চেয়েছিলেন। তার প্রস্তাব নিয়ে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ভোটাভুটি হওয়ার কথা থাকলেও কিন্তু সেখানে বামপন্থিরাসহ মাক্রোঁ-বিরোধীরা এর বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে এ পরিকল্পনা আটকানোর সিদ্ধান্ত নেয়। অবসর নেওয়ার নূন্যতম বয়স সরকার বাড়াতে চাওয়ার কারণেই মূলত ফ্রান্সে এই পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে মানুষ। ফলে সে পরিস্থিতি এড়াতে ম্যাক্রোঁ সিদ্ধান্ত নেন যে, সরকার বিশেষ সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে ভোটাভুটি ছাড়াই বিল পাস করবে। পার্লামেন্টে এ-সংক্রান্ত ঘোষণা আসার সময়ই বিরোধী শিবির থেকে সরকারের পদত্যাগের দাবি ওঠে। অপরদিকে, ট্রেড ইউনিয়নগুলোর বিক্ষোভও আরও জোরাল হতে থাকে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে বেধে যায় সংঘর্ষ। ফ্রান্সের অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ ছড়ায়। এতদিন সব মিলিয়ে যেখানে সাড়ে ৪১ বছর কাজ করলেই অবসর নেওয়া যেত, সংস্কার পরিকল্পনা কার্যকর হলে সেখানে অন্তত ৪৩ বছর কাজ করলে প্রাপ্য পেনশনের পুরোটা পাওয়া যাবে। আর এর চেয়ে কম কাজ করলে কিছু তহবিল কাটা যাবে। ফ্রান্সে জনমত জরিপে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মানুষই সংস্কার পরিকল্পনার বিরোধী এবং সরকার পার্লামেন্টে ভোটকে পাশ কাটিয়ে এই বিল পাসের যে সিদ্ধান্ত নেয় সেটিরও বিপক্ষে বেশিরভাগ মানুষ। কিন্তু এই বিরোধিতার মুখেও ফ্রান্সের সাংবিধাকি পরিষদ বলেছে, সরকার যে পরিকল্পনা করেছে সেটি সংবিধানসম্মত। এর ভিত্তিতেই পরিষদ অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়টি অনুমোদন করেছে। একইসঙ্গে পেনশন সংস্কার প্রশ্নে গণভোট আয়োজনের জন্য বিরোধীরা যে প্রস্তাব দিয়েছিল তাও প্রত্যাখ্যান করেছে সাংবিধানিক পরিষদ। ফলে ফ্রান্সে স¤প্রতি কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান এবং কখনও কখনও সহিংস রূপ নেওয়া বিক্ষোভের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ও তার সরকার বড় ধরনের স্বস্তি পেল। জনগণের অসন্তোষের মুখে পেনশন সংস্কার চালুর বিষয়টি ঘোষণা না করার ট্রেড ইউনিয়নগুলোর অনুরোধ উপেক্ষা করে লেবার মন্ত্রী অলিভিয়া বলেছেন, প্রাথমিক পরিকল্পনা মোতাবেক আইনটি ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে। ফ্রান্সের সরকার বলছে, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ধসে পড়ার হাত থেকে বাঁচাতে এ সংস্কার প্রয়োজন। রাজকোষে যাতে আরও অর্থ আসে সে ব্যবস্থা করেতেই প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ পেনশন পাওয়ার বয়স দু’বছর বাড়াতে চেয়েছেন। এ ব্যবস্থা না নিলে আর্থিক পরিস্থিতি এবং ঘাটতি সামলানো যাবে না বলেই ভাষ্য সরকারের। তবে সরকার যাই বলুক, সাংবিধানিক পরিষদের ঘোষণা আসার পরই আবার শুরু হতে পারে বিক্ষোভ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com