সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
শুল্কমুক্ত সুবিধায় হাজার হাজার টন চাল আমদানিতেও বাজারে প্রভাব পড়েনি বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ শীতজনিত রোগীর চাপ রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি হাসপাতালে বাড়ছে সাতক্ষীরা পৌর—মেয়রের বরখাস্তের আদেশ অবৈধ: হাইকোর্ট স্কুল থেকে ফেরার পথে ট্রেনে কাটা পড়ে শিশুর মৃত্যু সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা নিহত মোবাইল—ইন্টারনেটে কর প্রত্যাহার না হলে এনবিআর ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি ভারত থেকে এলো ২৭ হাজার মেট্রিক টন চাল টিউলিপের উচিত ক্ষমা চাওয়া: ইউনূস বিজিবি—জনগণ ‘শক্ত অবস্থান’ নেওয়ায় ভারত পিছু হটেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৩

এফএনএস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, রমজানে ব্যবসায়ীদের কষ্ট ও কান্না সহ্য করা যায় না। আমি আগেই বলেছি- আমরা সাধ্যমতো সাহায্য করব। আমরা ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মূল্যায়ন করব। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তাঁর কাছে পদ্মা সেতু নির্মাণে নেয়া ঋণ পরিশোধের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে প্রায় ৩১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকার চেক হস্তান্তরকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। শেখ হাসিনা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, অগ্নিনির্বাপক যানবাহনের ক্ষতি করার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের অবশ্যই সনাক্ত করা হবে। তিনি আরো বলেন, যারা লাঠিসোঁটা নিয়ে ফায়ার ব্রিগেড সদর দপ্তরে প্রবেশ করে অগ্নিনির্বাপক যানবাহনের ক্ষতি করেছে তাদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্নিকাÐ শুরুর পরপরই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও দুপুরে একদল লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে ফায়ার ব্রিগেড অফিসে হামলা চালায়। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যাদের অগ্নিনির্বাপক যানবাহন, ফায়ারম্যান বা কোনো সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে হামলা করতে দেখা যাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। শেখ হাসিনা সতর্ক করে বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো হামলা সহ্য করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতকাল (গত মঙ্গলবার) পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি বড় সাফল্য অর্জন করেছে। তবে এই ভালোর সঙ্গে বঙ্গবাজারে অগ্নিকান্ডের একটি দুঃসংবাদও জাতি পেয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবাজারে অগ্নিকাÐে দোকান পুড়ে যাওয়া দেখাটা খুবই দুঃখজনক। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবাজারে এর আগে ১৯৯৫ ও ২০১৮ সালে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৮ সালে অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর তিনি বলেছিলেন যে- তাঁর সরকার পরিকল্পিতভাবে বঙ্গবাজার নির্মাণের ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তু হাইকোর্টে এর বিরুদ্ধে একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাজার নির্মাণের প্রক্রিয়া স্থগিত করায় তারা তা করতে পারেননি। তিনি বলেন, বাজারটি নির্মিত হলে হয়তো এমন অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটত না। শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে বাংলাদেশ যে কোনো বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাবে। পদ্মা সেতুর ঋণ পরিশোধের প্রথম কিস্তির চেক গ্রহণকালে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, জনগণ আমাদের পাশে থাকলে যে কোনো প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে আমরা এগিয়ে যেতে পারব। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ এর সেরা উদাহরণ। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঋণ পরিশোধের প্রথম কিস্তি হিসেবে প্রায় ৩১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে ঋণ স্থগিত এবং পরবর্তীকালে আরও কয়েকটি সংস্থা একই কাজ করায় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়ার পর তারা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী পদ্মা সেতু নির্মাণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে এ ঋণ নেয়া হয়। গত বছরের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের বৃহত্তম সেতু উদ্বোধন করেন। শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে তাঁর সরকারকে সার্বিক সমর্থন দেয়ায় জনগণকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে জনগণ যেভাবে সমর্থন দিয়েছে তেমনি দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পুরো জাঁতি সরকারের সঙ্গে হাত মেলাবে। তিনি বলেন, জনগণ আমাদের পাশে থাকলে দুর্যোগের মতো যেকোনো বাধা অতিক্রম করে আমরা দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে পারব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার প্রধান শক্তি জনগণের শক্তি। তিনি বলেন, আমাদের অটুট সমর্থন দিয়ে (বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর করে) অসম্ভবকে সম্ভব করার জন্য আমি দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাই। প্রধানমন্ত্রী তাদের তীব্র সমালোচনা করেন যারা মনে করেন অন্যের সাহায্য ছাড়া বাংলাদেশের উন্নতি সম্ভব নয়। তিনি বলেন, তবে, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশের সক্ষমতা প্রমাণ করেছি এবং বৈশ্বিক মর্যাদা ও সম্মান অর্জন করেছি। তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু শুধু একটি সেতু নয়, বাঙালি জাতির গর্ব ও সামর্থের প্রতীক। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য বাংলাদেশকে অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য যে ঋণ নেওয়া হয়েছে তা আমরা এখন টোল থেকে পরিশোধ করতে পারব। পদ্মা সেতুর মেয়াদ ১০০ বছরের বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে, তবে আগামী ৩৫ বছরে টোল থেকে এর নির্মাণ ব্যয় আহরণ করা সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সেতু বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও সেতু বিভাগের সচিব মো. মঞ্জুর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com