বিভিন্ন ক্ষেত পরিদর্শনে-কৃষি অফিসার -আবু বকর সিদ্দিক
বটিয়াঘাটা (খুলনা) অফিস ॥ বটিয়াঘাটা উপজেলার ৭ ইউনিয়নের মধ্যে সুরখালী, গঙ্গারামপুর,বটিয়াঘাটা সদর, জলমা ও ভান্ডারকোট ইউনিয়নের লবণাক্ত এলাকায় অসময়ের তরমুজে বাম্পার ফলনে কৃষকরা আশার আলো দেখছেন। বিভিন্ন ইউনিয়নে দায়িত্ব প্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি অফিসার যথাক্রমে সরদার আব্দুল মান্নান,দীপন কুমার হালদার, জীবানন্দ রায়,বিষাদ সিন্ধু মন্ডল,দিপংকর মন্ডল, পিন্টু মল্লিকসহ ২১ জন উপসহকারী কৃষি অফিসারের পরামর্শে লবণাক্ত এলাকায় ৩৭৫ বিঘা জমির ঘেরের আইলে আস্থা, পাকিজা, হানিকুইন, ব্লাকবেবি,ছক্কা, সাগর কিং ও হিরা ড্রাগন কিং জাতের তরমুজ চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে এ-অঞ্চলের তরমুজ চাষিরা। ঘেরের আইলের উপর মাচায় তরমুজ চাষে ব্যাপক ফলন দেখা যাচ্ছে। এছাড়া তরমুজের আবাদে সহজে সেচ দেয়ার ব্যবস্থাসহ আবাদ জমিতে তেমন সার ও সেচের প্রয়োজন হচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন তরমুজ চাষিরা। পাশাপাশি এখন তরমুজের দামও অনেক বেশি পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে অসময়ে তরমুজ চাষে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন গুনছেন চাষিরা। চলতি বছরে উপজেলায় সব থেকে বেশি চাষ এবং বাম্পার ফলন হয়েছে আস্থা জাতীয় তরমুজ চাষে। বিষয়টি নিয়ে কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর অসময়ে তরমুজ চাষে বেশি ফলন হয়েছে সুরখালী ইউনিয়নে। চাষি নারায়ন মন্ডল,আরিফুর রহমান,শেখর মন্ডল ও ইনামুল হক পৃথক পৃথক ভাবে বলেন,সুরখালী ইউনিয়নে দায়িত্ব প্রাপ্ত জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি অফিসার সরদার আব্দুল মান্নান স্যারের পরামর্শে আমরা লবণাক্ত জমির ঘেরের আইলে মাচায় তরমুজ চাষ শুরু করি। অল্প খরচে আমরা ব্যাপক লাভ পাচ্ছি। ২০২১-২২ অর্থ বছরে ক্লাইমেট স্মাট প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ টি প্রদর্শনীতে ৫/৬ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছিলো বর্তমানে ১০ টা প্রদর্শনীতে ৩০/৩৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হচ্ছে। আশা করছি আগামিতে আমাদের এলাকায় কোন ঘেরের পাড় ফাঁকা থাকবেনা। তবে মান্নান সাহেব রাতেও ফোন দিয়ে তরমুজ খেতের খবর নিয়ে থাকেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে,প্রতি বিঘা জমিতে তরমুজ চাষে খরচ হয় ১৮/২০ হাজার টাকা। প্রতিটা তরমুজ ৪/ ৫ কেজি ওজন হয়। যার বর্তমান বাজার মুল্য ৫০/৫৫ টাকা কেজি। সেক্ষেত্রে প্রতি বিঘা জমিতে ৬০/৭০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে। তাছাড়া তরমুজের ক্ষেতে পাশাপাশি সীম,বরবটি, উস্তে ও টমেটো চাষ হচ্ছে। তারা আরও বলেন, স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে ঘেরের আইলে আমরা অসময়ে তরমুজ চাষ করেছি, কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় খোঁজ খবর নেওয়ার কারণে অল্প খরচে অধিক লাভ হবে বলে আশা করছি । আগামীতে এই চাষ আরও ব্যাপক হবে। বটিয়াঘাটা সদরের কৃষক সমিরন জোয়ার্দার, সুজন মন্ডল ও অনিক গাইন বলেন,আমাদের এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার দিপন কুমার হালদার এর পরামর্শে আমরা ঘের কেটেছি, সেই ঘেরের আইলে তরমুজ চাষে অল্প খরচে অধিক লাভবান হয়েছি। তাছাড়া, তরমুজের পাশাপাশি সীম, বরবটি, উচ্ছে ও টমেটো চাষ করছি । এ সময়ে কোন শিলা বৃষ্টি হয়না, ফলে তরমুজ নষ্ট হওয়ার কোন ঝুঁকিও কম থাকে। কৃষকদের সেচ দেওয়া লাগেনা, ফলে উৎপাদন খরচও কম হয়। সার্বিক বিষয়ে বটিয়াঘাটা কৃষি অফিসার মোঃ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, অফসিজন তরমুজ চাষ করে কৃষকরা বিঘা প্রতি ৫০/ ৫৫ হাজার টাকা লাভ করছে। যার ফলে তাদের জীবন যাত্রার মানের অনেক পরিবর্তন ঘেটছে। আমরা আশা করছি সামনের দিনগুলোতে অফসিজন তরমুজ চাষ আরও বেশি বৃদ্ধি পাবে। আমার কৃষি অফিসের ২১ জন উপসহকারী কৃষি অফিসাররা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকের সার্বিক সহায়তার জন্য সর্বদা তাদের পাশে থেকে সহযোগিতা প্রদান করছে । যে কারণে অফসিজন তরমুজ চষের মাধ্যমে বটিয়াঘাটা উপজেলার কৃষিতে একটি নতুন বিপ্লব সংগঠিত হচ্ছে ।