এফএনএস: লঘুচাপের প্রভাবে স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত আড়াই ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ¡াসে প্লাবিত হয়েছে বাগেরহাটের মোংলার নিম্নাঞ্চলসহ পুরো সুন্দরবন এলাকা। অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে গেছে পশুর নদীর পাড়ের বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়ি। মোংলা বন্দর ও সুন্দরবনের পশুর নদীর পাড়ের এলাকার বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো আশপাশের অন্যের বাড়িঘর ও রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। জলোচ্ছ¡াসে উপজেলার চিলা, চাঁদপাই ও বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের পশুর নদীর পাড়ের বাসিন্দারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে রয়েছেন। চারদিক পানিতে প্লাবিত হওয়ায় অনেকেই তাদের গবাদিপশু নিয়ে এক ঘরেই বসবাস করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের কানাইনগর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানকার বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে রয়েছে। কানাইনগরের বাসিন্দা নার্গিস বেগম বলেন, আমরা পশুর নদীর পাড়ে বসবাস করি। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় নদীর পানি বেড়ে চারপাশ তলিয়ে গেছে। তাই গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি নিয়ে এক ঘরেই থাকছি। একই এলাকার মনোনিত্য আদিত্য বলেন, জলোচ্ছ¡াসে আমার থাকার ঘরটি তলিয়ে গেছে। দুদিন ধরে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে রাস্তা ও অন্যের ঘরের বারান্দায় থাকছি। এ ছাড়া যাওয়া ও থাকার তো কোনো জায়গা নেই। এদিকে আড়াই ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ¡াসে প্লাবিত হয়েছে পুরো সুন্দরবন এলাকা। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, চলমান বৈরী আবহাওয়ায় প্রচুর পরিমাণ পানি বাড়ছে। আড়াই ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ¡াসে সুন্দরবনের সব জায়গা তলিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, জলোচ্ছ¡াসে সুন্দরবন প্লাবিত হলেও এখন পর্যন্ত বন্যপ্রাণীর তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে সম্ভাব্য ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে গতকাল বৃহস্পতিবারও মোংলাসহ সংলগ্ন উপক‚লীয় এলাকায় তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত বহাল রয়েছে। মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ অমরেশ চন্দ্র ঢালী বলেন, লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে ভারতের মধ্যপ্রদেশে অবস্থান করছে। এর প্রভাব ও গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া পূর্ণিমার গোনের (সময়) কারণে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে অতিরিক্ত ২-৪ ফুট উচ্চতা কিংবা তার চেয়ে বেশি জলোচ্ছ¡াসে উপক‚লীয় এলাকা প্লাবিত হবে। তিনি বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত মোংলায় ১৬ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুক্রবার বিকেল ৩-৬টার পর থেকে এ বৈরী আবহাওয়া কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীকাল শনিবার থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলেও জানান আবহাওয়া অফিসের এ কর্মকর্তা।