সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
শুল্কমুক্ত সুবিধায় হাজার হাজার টন চাল আমদানিতেও বাজারে প্রভাব পড়েনি বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ শীতজনিত রোগীর চাপ রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি হাসপাতালে বাড়ছে সাতক্ষীরা পৌর—মেয়রের বরখাস্তের আদেশ অবৈধ: হাইকোর্ট স্কুল থেকে ফেরার পথে ট্রেনে কাটা পড়ে শিশুর মৃত্যু সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা নিহত মোবাইল—ইন্টারনেটে কর প্রত্যাহার না হলে এনবিআর ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি ভারত থেকে এলো ২৭ হাজার মেট্রিক টন চাল টিউলিপের উচিত ক্ষমা চাওয়া: ইউনূস বিজিবি—জনগণ ‘শক্ত অবস্থান’ নেওয়ায় ভারত পিছু হটেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বিএনপির আন্দোলনে খালেদা জিয়ার পরামর্শ নেই: ফখরুল

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৫ মে, ২০২৩

এফএনএস: সরকারবিরোধী চলমান আন্দোলন-কর্মসূচি নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কোনো পরামর্শ নেই বলে দাবি করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন গৃহবন্দি সুতরাং দলের কর্মসূচি নেওয়া ও পালনের ক্ষেত্রে তার পরামর্শ নেওয়ার সুযোগ নেই। তাকে বারবার ভিন্ন ট্র্যাকে নিয়ে আসছেন কেন? গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির মহাসচিব বলেন, আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে সরকারে ওপর যখন চাপ আসছে, তখন জিয়াউর রহমান ইস্যুতে ৫০ বছর আগের কিছু মিথ্যা তথ্য সামনে এনে মামলা করেছে সরকার। এর মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছে ক্ষমতাসীনরা। নাহিদ ইজার খান সরকারের সুবিধাভোগী একজন সংসদ সদস্য। তিনি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করেছেন। লিখিত বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব উল্লেখ করেন, নাহিদ ইজহার খান সম্ভবত তার নিজের মায়ের লেখা বইটাও পড়ে দেখেননি। যেখানে তার মা নীলুফার হুদা লিখিত গ্রন্থ ‘কর্নেল হুদা ও আমার যুদ্ধ’তে (১৩৪ পাতা) স্পষ্টভাবেই লিখে গেছেন কর্নেল হুদাকে হত্যার সময় কী পরিস্থিতি ছিল। সেখানে উপস্থিত মানুষদের জবানবন্দিই প্রমাণ দেয়, সেদিন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কর্নেল নওয়াজিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন খালেদ মোশাররফ, কর্নেল হুদা এবং মেজর হায়দারকে রক্ষা করার। দায়েরকৃত মামলার বাদী নাহিদ ইজহার খানের মায়ের লিখিত গ্রন্থের ১৩৪ পাতায় সুস্পষ্টভাবে হত্যাকাÐের পেছনে কর্নেল তাহেরের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে উঠে এসেছে। লিখিত বক্তব্যে ফখরুল বলেন, ১৯৭৫ সালে কর্নেল নাজমুল হুদা রংপুর সেনানিবাসে ব্রিগেড কমান্ডার ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সংঘটিত সামরিক অভ্যুথানের অন্যতম সহযোগী ছিলেন কর্নেল নাজমুল হুদা। অভ্যুথানে সক্রিয় নেতৃত্ব দিতে তিনি ঢাকা আসেন। উল্লেখ্য, খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে তাদের নেতৃত্বে তৎকালীন সেনাপ্রধান (পবর্তীতে রাষ্ট্রপতি) মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দি করা হয়। মূলত খালেদ মোশাররফ ও তার সহযোগীদের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের সুযোগে প্রথমত ইতিহাসের নৃশংস জেলহত্যাকাÐ সংঘটিত হয়। খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সংঘটিত অভ্যুত্থানের ফলে সেনাছাউনিতে চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। যে সুযোগের অপব্যবহার করে কর্নেল তাহের-ইনু গংয়ের নেতৃত্বে বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা ও জাসদ গণবাহিনীর নেতৃত্বে পাল্টা-অভ্যুত্থান সংঘটিত করে সেনাবাহিনীতে সেনা অফিসার-সৈনিক বিরোধ সৃষ্টি করে নির্মম সেনা অফিসার হত্যার সুদূরপ্রসারী দেশি-বিদেশী চক্রান্তে শামিল হয়। যার নির্মম শিকার হচ্ছেন খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সংঘটিত অভ্যুত্থানের অন্যতম সহযোগী কর্নেল নাজমুল হুদা। মির্জা ফখরুল বলেন, ইতিহাসের নির্মম পরিহাস হচ্ছে, কর্নেল হুদার মেয়ে নাহিদ ইজহার খান যিনি ফ্যাসিস্ট ভোটারবিহীন সংসদের এমপি হিসেবে তার পিতার হত্যাকারী জাসদ-গণবাহিনীর গণবাহিনীর উপপ্রধান হাসানুল হক ইনু এবং কর্নেল তাহেরের ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল একই সংসদের এমপি হিসেবে গলা ফাটাচ্ছেন। আর নিজের পিতার হত্যার হুকুমের আসামি করেছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে যিনি তার পিতাকে বাঁচানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, বস্তুত নাহিদ ইজাহার খান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে তার পিতার হত্যার হুকুম দাতা হিসেবে মামলা দায়ের করেছেন বর্তমান আওয়ামী গোষ্ঠীর একজন ক্রীড়াণক হিসেবে। এর পেছনে রয়েছে সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। যার প্রধান কারণ হচ্ছে চলমান ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন থেকে দেশি-বিদেশি গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানো। ফখরুল বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে দেশের চলমান ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে শেখ হাসিনা ও তার কুশীলবরা নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। নাহিদ ইজাহার খানের মামলা সেই লাগাতার ষড়যন্ত্রের একটি ঘৃণ্য উদাহরণমাত্র। গণবিচ্ছিন্ন এ দখলদার সরকারের তরফে আগামীতে এ ধরনের ষড়যন্ত্র চলমান থাকবে। বিশেষ করে সরকার পতনের সময়কাল যত এগিয়ে আসবে, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মাত্রা আরও বাড়বে। তিনি আরও বলেন, আমরা দ্বার্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির নেতৃত্বে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি নিরপেক্ষ তত্ত¡াবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সব ধরনের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেওয়া হবে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র কারণে সৃষ্টি দুর্যোগে দলের নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com