এফএনএস বিদেশ : ইউরোপের প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম যখন আকাশচুম্বী, তখন রাশিয়া প্রচুর পরিমাণে গ্যাস পোড়াচ্ছে। ফিনল্যান্ডের সীমান্তের কাছে একটি প্লান্টে প্রতিদিন প্রায় এক কোটি ডলার সমমূল্যের গ্যাস পোড়াচ্ছে রাশিয়া। গতকাল শুক্রবার বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগে এই গ্যাস জার্মানিতে রপ্তানি করা হতো। যুক্তরাজ্যে জার্মানির রাষ্ট্রদূত বিবিসি নিউজকে জানিয়েছেন, অন্য কোথাও বিক্রি করতে না পারায় রাশিয়া গ্যাস পোড়াচ্ছে। এভাবে রাশিয়া গ্যাস পোড়ানোয় বিজ্ঞানীরা প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং এর প্রভাব সম্পর্কে উদ্বিগ্ন। কারণ এতে আর্কটিকে বরফের গলে যাওয়ার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। রাইস্টাড এনার্জির বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রাশিয়া প্রতিদিন প্রায় চার দশমিক ৩৪ মিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস পোড়াচ্ছে। সেন্ট পিটার্সবার্গের উত্তর-পশ্চিম পোর্টোয়ায়ায় একটি নতুন তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) প্লান্টে এ গ্যাস পোড়ানো হচ্ছে। চলতি বছরের গ্রীষ্মের শুরুতে দিগন্তে একটি বড় অগ্নিশিখা দেখতে পেয়ে সীমান্তের কাছাকাছি ফিনিশ নাগরিকরা প্রথমে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিল। পোর্টোভায়া নর্ড স্ট্রিম ওয়ান পাইপলাইনের মাধ্যমে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে জার্মানিতে গ্যাস রপ্তানি করতো রাশিয়া। জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়। রাশিয়ানরা এর জন্য প্রযুক্তিগত সমস্যাকে দায়ী করেছিল। তবে জার্মানি বলছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর এটি ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক পদক্ষেপ। জুনের পর থেকে গবেষকরা প্লান্টটি থেকে পোড়ানো গ্যাসের মাত্রা উলেখযোগ্যভাবে বাড়তে দেখেছেন। যদিও প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্টে গ্যাস পোড়ানো সাধারণ ব্যাপার – সাধারণত প্রযুক্তিগত বা নিরাপত্তার কারণে করা হয় – তবে এই পোড়ার মাত্রা বিশেষজ্ঞদের বিভ্রান্ত করে ফেলে। ওহাইওর মিয়ামি ইউনিভার্সিটির স্যাটেলাইট ডেটার বিশেষজ্ঞ ড. জেসিকা ম্যাককার্টি বলেন, ‘আমি কোনো এলএনজি প্ল্যান্ট এতটা জ¦লতে দেখিনি। জুন থেকে শুরু করে, আমরা এই বিশাল চ‚ড়াটি দেখেছি এবং এটি কমেনি। এটি খুব অস্বাভাবিকভাবে উচ্চমাত্রায় রয়ে গেছে।’ যুক্তরাজ্যে জার্মান রাষ্ট্রদূত মিগুয়েল বার্গার বিবিসি নিউজকে বলেছেন, রাশিয়ান গ্যাসের উপর নির্ভরতা কমানোর জন্য ইউরোপীয় প্রচেষ্টা ‘রাশিয়ার অর্থনীতিতে শক্ত প্রভাব ফেলছে। তাদের গ্যাস বিক্রির জন্য অন্য কোন জায়গা নেই। তাই তাদের এটি পুড়িয়ে ফেলতে হচ্ছে।’