এফএনএস এক্সক্লুসিভ: উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে মামলাজটের শঙ্কা বাড়ছে। মূলত বিচারক সঙ্কটে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নতুন করে বিচারক নিয়োগের আগ পর্যন্ত আপিল বিভাগে দুই বেঞ্চের পরিবর্তে একটি বেঞ্চে বিচারকার্যক্রম পরিচালিত হবে। গত ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ছয় বিচারপতির মধ্যে একজন অবসর নেয়ার পরই আপিল বিভাগে বিচারক সংকট তৈরি হয়। বর্তমানে আপিল বিভাগের ১ নম্বর বেঞ্চে মামলা নিষ্পত্তির হার খুবই কম। আবার বিচারাধীন মামলার সংখ্যাও অনেক বেশি। এমন পরিস্থিতিতে বেঞ্চ একটি কমলে বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ আরো বাড়বে। উচ্চ আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দ্রুতই প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় আপিল বিভাগে এক থেকে তিনজন বিচারপতি নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ওই নিয়োগ প্রস্তাবিত বিচারপতি নিয়োগ কাউন্সিল বা কমিশন গঠনের আগে হবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। বিগত ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আপিল বিভাগে ছয়জন বিচারপতি দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দুই বেঞ্চে নিয়মিত বিচারকাজ পরিচালিত হচ্ছিল। ১ নম্বর বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ এবং বিচারপতি সৈয়দ মো. জিয়াউল করিম ২ নম্বর বেঞ্চের নেতৃত্বে ছিলেন। কিন্তু বিচারপতি সৈয়দ মো. জিয়াউল করিম অবসরে যাওয়ার পরই সংকট তৈরি হয়। সূত্র জানায়, আপিল বিভাগে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৮ হাজার ৯০১টি মামলা বিচারাধীন ছিলো। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৯৮৯টি দেওয়ানি, ১০ হাজার ৭১৫টি ফৌজদারি এবং ১৯৭টি অন্যান্য। প্রত্যেক বিচারপতির সামনে মামলার সংখ্যা ৫ হাজার ৭৮০টির বেশিও। এমন পরিস্থিতিতে মামলাজট দূর করতে আপিল বিভাগে দুটি বেঞ্চ গঠন করা জরুরি। প্রয়োজনে দুটির বেশিও বেঞ্চ গঠন করা যেতে পারে। কারণ বর্তমানে আপিল বিভাগের ১ নম্বর বেঞ্চে মামলা নিষ্পত্তির হার এমনিই কিছুটা কম। সেখানে যদি কেবল ওই বেঞ্চেই বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় তাহলে নতুন করে মামলাজট বাড়তে পারে। ফলে বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ বাড়বে। সূত্র আরো জানায়, সংবিধানে আপিল বিভাগে বিচারপতির কোনো সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়নি। ২০০৯ সালে আপিল বিভাগে সর্বোচ্চ ১১ জন বিচারপতি দায়িত্বরত ছিলেন। প্রধান বিচারপতির পরামর্শ ও প্রয়োজন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন সময়ে বিচারপতি নিয়োগ দিয়ে থাকেন। বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে সংবিধানের ৯৪ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোটের্রর আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারকের সংখ্যা নির্ধারণ ও নিয়োগ দেন। সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদে লেখা আছে, ‘প্রধান বিচারপতি এবং প্রত্যেক বিভাগে আসন গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতি যেরূপ সংখ্যক বিচারক নিয়োগের প্রয়োজনবোধ করিবেন, সেইরূপ সংখ্যক অন্যান্য বিচারক লইয়া সুপ্রিম কোর্ট গঠিত হইবে।’ সংবিধানে ৬৭ বছর বয়স পর্যন্ত বিচারপতি পদে থাকার বিধান রয়েছে। এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও স্পেশাল অফিসার মোয়াজ্জেম হোছাইন জানান, বর্তমানে আপিল বিভাগে পাঁচজন বিচারপতি রয়েছেন। তাই আপাতত একটি বেঞ্চে এ বিভাগের কার্যক্রম পরিচালিত হবে।