এফএনএস: বঙ্গবন্ধুর হাতেগড়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মর্যাদা লাভ করেছে। বিজিবি আজ একটি সুসংগঠিত, চৌকস, সুশৃঙ্খল ও পেশাদার দেশপ্রেমিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ৯৭তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম এসব কথা বলেন। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে অবস্থিত বিজিবি’র ঐতিহ্যবাহী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজে (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) বীর উত্তম মুজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মো. সাফিনুল ইসলাম বলেন, বিজিবি ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে দেশের চার হাজার ৪২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত সুরক্ষা, সীমান্ত ভ‚মি ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, সীমান্তে চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার রোধসহ সবধরনের সীমান্ত অপরাধ দমনসহ দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতা রক্ষার সুমহান দায়িত্ব অত্যন্ত দৃঢ়তা ও সফলতার সঙ্গে পালন করে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। তিনি বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দেওয়া, যেকোনো দুর্যোগময় মুহূর্তে জনগণের পাশে দাঁড়ানো এবং বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বিজিবি বিশ্বস্ততা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে সেবা ও কর্তব্য পরায়ণতার মাধ্যমে সমগ্র জাতির শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, সবাইকে মনে রাখতে হবে শৃঙ্খলাই সৈনিকের মূলভিত্তি। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সেই প্রকৃত সৈনিক। সততা ও কর্তব্যনিষ্ঠা, আনুগত্য ও নির্ভরযোগ্যতা, বুদ্ধিমত্তা ও কর্মতৎপরতা, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীন সৈনিকরা এসব গুণাবলির প্রতিফলন ঘটিয়ে বাহিনীর ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখবে। মনোবল, ভ্রাতৃত্ব-বোধ, শৃঙ্খলা ও দক্ষতা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের এই চার মূলনীতির কথা উলেখ করে মো. সাফিনুল ইসলাম বলেন, বিজিবি’র মূলনীতিতে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে বিজিবি’র ওপর অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব সুশৃঙ্খল ও সুচারুরূপে পালন করতে হবে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতা রক্ষার সুমহান দায়িত্ব পালনের প্রতি দৃঢ় থাকতে হবে। বিজিবি’র সার্বিক উন্নয়নে বর্তমান সরকারের বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মকান্ডের কথা উলেখ করে বাহিনীর প্রধান বলেন, বিজিবিকে একটি অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিজিবি’র সাংগঠনিক কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন এনে বিজিবিকে একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে উন্নীত করা হয়েছে। বিজিবি এখন জল, স্থল ও আকাশপথে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সক্ষম। এর আগে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ৯৭তম রিক্রুট ব্যাচের নবীন সৈনিকদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন, অভিবাদন গ্রহণসহ প্রশিক্ষণে বিজিটিসিঅ্যান্ডসিতে ৯৭তম রিক্রুট ব্যাচের সেরা চৌকস রিক্রুট ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেরাদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন তিনি। এ সময় অনুষ্ঠানে বিজিবি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় অসামরিক প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।