বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২২

এফএনএস : আজ শনিবার ৩ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে দেশব্যাপী পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর ওপর চূড়ান্ত হামলা চালানো হয়। সে দিন আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা দৃপ্ত প্রত্যয়ে গেরিলা হামলা শুরু করে। লক্ষ্য একটিই – পরাধীনতার নাগপাশ থেকে দেশমাতৃকাকে স্বাধীন করা। সারাদেশ যেন কেঁপে ওঠে বিজয়ের প্রসব বেদনায়। পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের খাতায় ‘পূর্ব পাকিস্তান’ থাকলেও এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ তা পুরোদস্তুর অস্বীকার করতে থাকে। বিভিন্ন স্থানে মুক্তিবাহিনীর গেরিলা হামলার ফলে পিছু হটতে থাকে পাকিস্তানী ফৌজ। নিশ্চিত পরাজয় আঁচ করতে পেরে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ভিন্ন পথ বেছে নেন। তিনি হস্তক্ষেপ কামনা করে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি পাঠান। বিজয়রে মাসের চতুর্থ দিনে পাকিস্তানী বিমান বাহিনী ভারতের আগ্রাসহ বিভিন্ন স্থানে গোলাবারুদ নিক্ষেপ করে। ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সৈন্যরা এ সময় সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়ায় দ্রুত বদলে যায় দৃশ্যপট। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর দুঃসাহসিক অভিযানের সূত্র ধরে ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানের উড্ডীয়মান প্রায় সকল বিমান ধ্বংস করে দেয়। এ সময় বাংলাদেশের দখলকৃত এলাকার পাকিস্তানের ১১টি সেভর জেট জঙ্গী বিমান গুলী করে ভূপাতিত করা হয়। এর মধ্যে ঢাকার আকাশ যুদ্ধে ৪টি শত্র“ বিমান সম্পর্ণ ভস্মীভূত হয়। এ ছাড়া যশোরে ৪টি এবং লালমনিরহাটে ৩টি হানাদার বিমানকে গুলী দিয়ে আলিঙ্গন করা হয়। আমাদের নবগঠিত বিমানবাহিনীর নব্য বৈমানিকগণও সাফল্যের সাথে আক্রমণ চালিয়ে যান। আমাদের নতুন শিক্ষাপ্রাপ্ত বৈমানিকগণ অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে বাংলাদেশের অধিকৃত অঞ্চলে দখলদার বাহিনীর ঘাঁটিগুলোর উপর সফল আক্রমণ চালিয়ে যান। এভাবেই বিজয়ের পথ ক্রমশ সহজ হয়। এদিকে এদিন ভারতের পূর্বাঞ্চল সামরিক কমান্ডার লে. জে. জগজীৎ সিং অরোরা কলকাতায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে দৃঢ়তার সাথে বলেন, বাংলাদেশ দখল করার ইচ্ছা ভারতের সেনাবাহিনীর নেই। বাংলাদেশের জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ যাতে বাংলাদেশের লোকায়ত সরকার গঠন করতে পারেন আমরা সেই চেষ্টাই করছি মাত্র। সেই উদ্দেশ্যে আমাদের সেনাবাহিনী প্রবেশ করেছে এবং মুক্তিবাহিনীকে সাহায্য করে যাচ্ছে। তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, বাংলার জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের পাশে আমরা আছি এবং থাকবো। অন্যদিকে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রতি তাদের সমর্থন বজায় রাখলেও কোনো সামরিক সাহায্যের ব্যাপারে তারা নীরব। পরাজয়, প্রাণহানি, পশ্চাদপসারণ ও আ—সমর্পণের ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলে। স্বাধীনতার জন্য উদগ্রীব মানুষ দারুণ কৌতূহলী হয়ে শুনে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, বৃটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (বিবিসি) ও ভয়েস অব আমেরিকা (ভোয়া)। উলে¬খ্য, ১৯৭১-এর এই দিনে গাইবান্ধার ফুলছড়ি, দিনাজপুরের ফুলবাড়ি, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর, চাঁদপুরের মতলব ও ল²ীপুর পাকিস্তানী দখলমুক্ত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com