বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
ইছামতির ভাঙ্গনে মৃত্যুমুখে দেবহাটার রূপসী ম্যানগ্রোভ পারুলিয়া বড়শান্তা সড়ক নির্মাণে অনিয়মের ছোয়া \ কর্তৃপক্ষ কি বলবেন? ঠিকাদারের গাফিলতিতে অতিষ্ট এলাকাবাসী ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোগে পল্লী উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পুকুরে গোসল করতে নেমে যুবকের মৃত্যু নিয়ন্ত্রন হারিয়ে যাত্রীবাহি বাস ধান ক্ষেতে \ পথচারী নারীর মৃত্যু একটি জাতিকে উন্নত শিখরে পৌঁছে হলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হবে- ডাঃ আব্দুল মজিদ পাইকগাছায় পলিথিন ও প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে বনজীবীদের দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালা আশাশুনি প্লাস্টিক ও পলিথিন দুষণ প্রতিরোধে গণশুনানি আশাশুনি মার্কেট লিংকেজ ও ভ্যালু চেইন নেটওয়ার্ক গঠন

বিতর্ক থাকা সত্ত্বেও বেড়েছে আদানির বকেয়া পরিশোধ ও বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫

এফএনএস এক্সক্লুসিভ: দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বতীর্ সরকারের আমলে বেড়েছে আদানির বকেয়া পরিশোধ ও বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ। যদিও বিগত সরকারের সময়ে বিশেষ আইনের আওতায় আদানির সঙ্গে করা চুক্তি বাতিলের জোর দাবি ওঠে। গত নভেম্বরে ওই ক্রয়চুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিটও করা হয়। তখন ওই লক্ষ্যে জাতীয় পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু তারপরও আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় ও বিল পরিশোধ বেড়েছে। বিগত সরকারের আমলে আদানিকে যেখানে মাসে গড় পরিশোধ করা হতো ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ডলার, অন্তর্বতীর্ সরকারের সময় তা বেড়ে ৮০—৮৫ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি অন্তর্বতী সরকার আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনা বাড়িয়েছে। চলতি মার্চেও বিপিডিবি আদানি পাওয়ারকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ ৯৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি বিল পরিশোধ করেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমান অন্তর্বতীর্ সরকার আদানির বকেয়া পরিশোধ ও বিদ্যুতের বাড়তি সরবরাহ নেয়া ছাড়া আর কিছু ভাবছে না। বরং বিদ্যুৎ বিভাগের প্রত্যাশা চলতি গ্রীষ্মে ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। বর্তমানে আদানি ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুটি ইউনিট থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানি করছে। প্রতি মাসে গড়ে আদানি পাওয়ারের কম—বেশি ৭০—৭৫ মিলিয়ন ডলার বিল আসে। আর গত অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে আদানি পাওয়ারকে পরিশোধ করা হচ্ছে গড়ে ৮৫ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট মাসের বিলের পাশাপাশি প্রদেয় বকেয়া বিলও রয়েছে। ছয় মাস ধরেই আদানি পাওয়ারকে এভাবে নিয়মিত বিলের পাশাপাশি কিছু পরিমাণে বকেয়াও পরিশোধ করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, আদানির বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ বিপিডিবির কাছে এখনো ৭০০ মিলিয়ন ডলার পাওনা বকেয়া রয়েছে। যদিও কয়লার দাম নিয়ে দ্বিমতের কারণে বিপিডিবির দাবি প্রদেয় ওই অর্থের পরিমাণ ৬৫০ মিলিয়ন ডলারের বেশি হবে না। গত অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ আদানি নিয়মিত বিল পাচ্ছে। তবে বকেয়ার ক্ষেত্রে খুব বেশি অগ্রগতি নেই। অতিসম্প্রতিও বকেয়া বিল নিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। আদানি ও বিপিডিবির হিসাবে বকেয়া বিলের পরিমাণ নিয়ে চলমান সংকট প্রসঙ্গেও দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে গত বছরের এপ্রিল থেকে আদানির বকেয়া জমে ৬ জানুয়ারির মধ্যে ৮৪০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। তবে বিপিডিবি বকেয়া বিলের উল্লেখযোগ্য অংশ এরই মধ্যে পরিশোধ করে ফেলেছে। এদিকে বকেয়া পরিশোধ নিয়ে আদানি ওবিপিডিবির মধ্যে চিঠি চালাচালি চলছে। বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার কারণে আদানির শীর্ষ কর্মকর্তারা দফায় দফায় বাংলাদেশ সফর করেছে। এমনকি বকেয়া বিলের কারণে কখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দেয়া, কখনো কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার মতো হুমকিও এসেছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরে বকেয়া বিল পরিশোধের ওপর ডিসকাউন্ট দেয়ার মতো অফারও দিয়েছে আদানি। তবে এখন পর্যন্ত নিয়মিত বিল পরিশোধ বাড়লেও বকেয়া বিলের সংখ্যা নিয়ে আদানি ও বিপিডিবির মধ্যে বড় ধরনের কোনো নিষ্পত্তি হয়নি। বিপিডিবির হিসাবে আদানির বিলে জটিলতা রয়েছে। সেগুলো নিরসনের বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে। সেগুলো পরিশোধের নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ভতুর্কির টাকা ছাড় হওয়া সাপেক্ষে বকেয়া বিল পরিশোধ করা হবে। তাছাড়া সরকার শুধু আদানি নয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সব বকেয়া দ্রুত পরিশোধ করতে চায়। এ নিয়ে নিয়মিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে। অন্যদিকে এ বিষয়ে বিপিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম জানান, আদানির বকেয়া সাধ্যমতো পরিশোধ করা হচ্ছে। তবে দ্রুত বা নির্দিষ্ট কোনো সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে, এমন কোনো কিছু নির্ধারিত নেই। বিষয়টি পুরোপুরি অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল। সেখান থেকে যেভাবে ভতুর্কির অর্থ পাওয়া যাবে, সেভাবেই পরিশোধ করা হবে। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যে ওভারডিউ রয়েছে, সেগুলো দ্রুত পরিশোধ করা চেষ্টা করা হচ্ছে। বিল পরিশোধের হার আগের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে। তা না হলে দুটি সমস্যা তৈরি হচ্ছে। প্রথমত, বিল পরিশোধের নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গেলে তার ওপর জরিমানা দিতে হয়। দ্বিতীয়ত, বকেয়া না থাকলে জ্বালানির দামে সাশ্রয়ী হওয়া যায়। পরিশোধ নিয়মিত থাকলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় সংকট হওয়ার সুযোগ থাকে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com