বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:২৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
সাতক্ষীরা শহর জামায়াতের রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে জেলে বাওয়ালীদের লাইফ জ্যাকেট বিতরণ ও রেসকিউ বোটের উদবোধন খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রা : রাস্তায় মানুষের ঢল কালিগঞ্জে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্র’র সাথে অনৈতিক কাজের অভিযোগ শ্যামনগরে এসওডির উপর পুনরূজ্জীবিতকরণ রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষন অনুষ্ঠিত কেশবপুরের হাসানপুরে তারুণ্যের ভাবনায় নতুন বাংলাদেশ শীর্ষক কর্মশালা, সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত আশাশুনি সিএস ও এসএ ম্যাপ অনুযায়ী নদী খননের দাবীতে মানববন্ধন কলারোয়ায় যুবদলের কর্মী সমাবেশ কলারোয়ায় স্কাউটস এর ত্রি—বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে বিদ্যুতের তার জড়িয়ে কৃষকের মৃত্যু

বিদেশে কাজ না পেয়ে ফেরত আসছে বাংলাদেশী কর্মীরা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৫

এফএনএস এক্সক্লুসিভ: বিদেশে কাজ না পেয়ে দেশে ফেরত আসছে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী কর্মী। অসংখ্য কর্মী প্রবাসে গিয়ে কাজ না পেয়ে তিন থেকে ছয় মাসের মাথায় স্বপ্নভঙ্গ হয়ে দেশে ফিরে আসছে। আর এভাবে কত কর্মী দেশে ফেরত আসছে বাংলাদেশ সরকারের কাছে তার সঠিক তথ্য নেই। যদিও ২০২৩ সালে তৎকালীন সরকার ছয় মাসের মধ্যে ফেরত আসা কর্মীদের জন্য ৫০ হাজার টাকা বীমা সুবিধা চালু করেছিল। আর ওই বীমা সুবিধার আবেদনের তথ্যানুযায়ী গত দুই বছরে বিশ্বের ১২টি দেশ থেকে এক হাজার ৯২৬ জন বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফেরত এসেছে। যার মধ্যে চলতি বছর ফেরত এসেছে এক হাজার ২০০ জন। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ৩৭ শতাংশ বেশি কর্মী ফেরত এসেছে। তাছাড়া চলতি বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে ৪০ হাজার ৩০৫ জন কর্মী আউটপাস নিয়ে ফেরত এসেছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, কাজ না পেয়ে বিদেশ থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশী কর্মীদের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করতে পারছে ন্ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের কর্মকর্তারাও। তবে চলতি বছর মালয়েশিয়ায় অভিবাসন প্রত্যাবাসন কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশে ফিরে আসতে ৩১ হাজার ৪১ জন বাংলাদেশি কর্মী নিবন্ধন করেছে। জনশক্তি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা কাজ না পেয়ে কর্মীদের দেশে ফিরে আসার পেছনে দূতাবাসের ব্যর্থতাকে দায়ি করছে। তাদের মতে, দূতাবাসের সত্যায়নের ওপর ভিত্তি করে পাঠানো কর্মীরা কেন কাজ পাচ্ছে তা প্রশ্নসাপেক্ষ। আর দূতাবাস সংশ্লিষ্টদের দাবি, কোম্পানি যাচাই—বাছাই প্রক্রিয়ায় ত্রুটি থাকে না। কিন্তু কোনো কোম্পানি ১০০ কর্মী নেয়ার কথা জানালে জনশক্তি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা ৩০০ কর্মী পাঠান। তখন বেশির ভাগ কর্মী কাজ পায় না। সূত্র জানায়, বিদেশে কাজ না পেয়ে ছয় মাসের মধ্যে দেশে ফেরত আসা কর্মীদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বীমা সুবিধা চালু করেছে। ওই বীমা সুবিধা পেতে আবেদনের তথ্যমতে, গত দুই বছরে ১২টি দেশ থেকে এক হাজার ৯২৬ জন কর্মী দেশে ফেরত এসেছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কর্মী ফেরত এসেছেন সৌদি আরব থেকে। দুই বছরে সৌদি আরব থেকে ৭৭৬ জন কর্মী ফেরত এসেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। চলতি বছর গত ৩১ মে ওই শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যায়। দেশটি থেকে দুই বছরে ২২১ জন প্রবাসী বাংলাদেশি ফেরত এসেছে। এরপর ফেরত আসা প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। ওই দেশটির শ্রমবাজার থেকে গত দুই বছরে ফেরত এসেছে ২২০ জন কর্মী। এর মধ্যে দেশটির প্রদেশ দুবাই থেকে ফেরত এসেছে ১৫৩ জন কর্মী আর আবুধাবি থেকে এসেছেন ৬৭ জন কর্মী। তাছাড়া ওমান থেকে ২১৬ জন, কাতার থেকে ১২২ জন, সিঙ্গাপুর থেকে ৮৭ জন, রুমানিয়া থেকে ৮৭ জন, কুয়েত থেকে ৭৪ জন, কিরগিজস্তান থেকে ৫২ জন, উজবেকিস্তান থেকে ৪৩ জন ও কাজাখস্তান থেকে ২৮ জন কর্মী দেশে ফেরত এসেছে। সূত্র আরো জানায়, বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের জনবল সংকটে অনেক সময় প্রত্যাশিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কোনো কর্মী কাজ না পাওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের দায়িত্ব। তবে কাজ না পেয়ে ফেরত আসা কর্মীদের জন্য বীমা সুবিধাসহ পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মূলত আমাদের শ্রমবাজারে কার্যকরী কোনো চুক্তি নেই। এখন প্রয়োজন দ্বিপক্ষীয় চুক্তি। বিষয়টি নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি দূতাবাসগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধি করা জরুরি, যাতে দূতাবাসগুলো কর্মীদের ভোগান্তির ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। এদিকে বিদেশে বাংলাদেশী কর্মীদের ভোগান্তির জন্য দূতাবাসের ব্যর্থতাকে দায়ী করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের সাবেক যুগ্ম—মহাসচিব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম জানান, কর্মীদের কাজ না পাওয়ার পেছনে দূতাবাসের বড় ধরনের ব্যর্থতা রয়েছে। দূতাবাস থেকে সত্যায়নের মাধ্যমে কোম্পানিতে কর্মী পাঠানো হয়। স্বাভাবিকভাবেই কর্মী যখন কাজ পাচ্ছে না তখন দূতাবাসের যাচাই—বাছাই ঠিকমতো হচ্ছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান করতে হলে দূতাবাসগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে যে কোম্পানিগুলো সমস্যা তৈরি করছে, তাদের কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। অন্যদিকে দূতাবাসগুলো এই অভিযোগ মানতে নারাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা জানান, মালয়েশিয়ায় এসে কাজ পাচ্ছে না, এ রকম ঘটনা রয়েছে। তবে তা অনেক বেশি নয়। অনেক সময় দেখা যায় কর্মীরা যে কোম্পানিতে আসছে, সে কম্পানি অনেক বেশি কর্মী নিয়ে আসছে। ফলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com