দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ বিদ্যুতের ঘাটতি নেই। অতীতের যে কোন সময় অপেক্ষা বিদ্যুৎ উৎপাদনে এগিয়ে দেশ। কিন্তু অব্যাহত লোডশেডিং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কে বিঘ্ন ঘটিয়ে চলেছে। কখন বিদ্যুৎ আসছে আর কোন সময়ে বিদ্যুৎ থাকছে না এমনটি বলা দুস্কর হিসেবের খাতায় উঠেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে, নিত্য দিনের জীবন যাত্রা তলানীতে পৌছেছে। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় প্রতি মুহুর্তে বিদ্যুৎহীনতায় কেবল জীবন যাত্রার স্বাভাবিক গতিপথ ক্ষুন্ন হচ্ছে তা নয় উৎপাদনে ও নেমেছে মারাত্মক ঢস হালকা ও কুটির শিল্পের শিল্পিরা বিদ্যুতের অভাবে অলসসময় অতিবাহিত করছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম খ্যাত চিংড়ী শিল্প বাজারজাত ও প্রক্রিয়াজাত করনের ভরসা বরফ উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটছে। সপ্তাহব্যাপী বিদ্যুতের অভাব হেতু জনসাধারন ঘরবাড়ীতে টিকতে না পেরে গাছ তলায় আশ্রয় নিচ্ছে। এতো দিনে গ্রীষ্মের তাপদাহ আর প্রখর সূর্যতাপ হতে রক্ষা পেতে ভূক্তভোগী লোকজন ইলিকট্রিক ফ্যান এর শীততাপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে কিছুটা স্বস্তি অনুভব করছিলো কিন্তু বিদ্যুতের লোডশেডিং অতীতের যে কোনসময় অপেক্ষা অধিকতর নাজুক পরিস্থিতিকে সম্পৃক্ত করায় জনগোষ্ঠী আরও এক ধাপ এগিয়েছে। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় বিপুল সংখ্যক গৃহিনী ইলেকট্রিক চুলায় রান্না বান্নার কাজ সারে কিন্তু বিদ্যু হীনতার কারনে গৃহিনীরা যথাসময়ে রান্নার কাজ সারাতে পারছে না। বিদ্যুতের অভাবে প্রকাশনাশিল্পের প্রকাশনা ব্যহত হচ্ছে। রাতেরও দিনের অধিকাংশ সময়গুলোতে বিদ্যুতের উপস্থিতি না থাকায় বিশেষ করে রাতে এক ঘন্টা, দুই ঘন্টা পর পর বিদ্যুতের আসা যাওয়া দীর্ঘ সময় অপেক্ষার প্রহর গুনতে হচ্ছে। বেহিসেবি লোডশেডিং এর যাতাকলে পৃষ্ট জেলার লক্ষ লক্ষ গ্রাহকরা। এক একজন বিদ্যুৎ গ্রাহকই কেবল ভোগান্তীর কবলে না প্রতিটি পরিবারসীমাহীন অস্বস্থিকর পরিস্থিতির সম্মুখিন। এতোদিনে শহর অপেক্ষা গ্রামীন জনপদে বিদ্যুতের লোডশেডিং কম থাকলেও সাম্প্রতিক সময় গুলোতে শহরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অতি লোডশেডিং এ পৌছেছে। বিদ্যুতের আসাযাওয়ার ধারাবাহিকতার কুফল কৃষি ব্যবস্থাতেও বিস্তৃত ঘটিয়েছে, কৃষি উৎপাদনে সেচব্যবস্থার বিকল্প নেই, অথচ বিদ্যুতের লোডশেডিং সেচ ব্যবস্থাকে প্রতিনিয়ত বাঁধা সৃষ্টি করছে। সাতক্ষীরার সবজি ক্ষেত গুলোতে বিদ্যুতের অনিয়মিততায় কাঙ্খিত পানি সরবরাহ করতে পারছে না যে কারনে কোন কোন সবজি ক্ষেত হলুদাভাব এর রুপ ধারন করেছে। বিদ্যুতের অভাব হেতু চিকিৎসা ব্যবস্থাতেও ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। প্যাথলজি পরীক্ষাসহ মানবদেহের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের মেশিনারিজ বিদ্যুৎ চালিত, কিন্তু বিদ্যুৎ নেই, আবার এসেই কিছু সময়ের মধ্যে বলে যাচ্ছে যে কারনে চিকিৎসা ব্যবস্থায় ভোগান্তী সৃষ্টি হচ্ছে। গতকয়েকদিন যাবৎ সাতক্ষীরা শহরের সৌরবিদ্যুৎ শোরুমগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে শহরের সীমানাপেরিয়ে মফস্বল তথা উপজেলা পর্যায়ের হাটবাজার গুলোতে সৌরবিদ্যুৎ চালিত ফ্যান সহ সৌর প্যানেল ক্রয়ের হিড়িক পড়েছে। সাতক্ষীরা বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মামুন রহমানের বরারবর বিদ্যুতের সীমাহীন লোডশেডিং বিষয়ে জানতে চাইলেতিনি দৃষ্টিপাতকে জানান সাতক্ষীরায় লোডশেডিং চলছে বিষয়টি অচিরেই সমাধান হবে। আমাদের পিক আওয়ারে চাহিদা ২২ মেগাওয়াট পাচ্ছি ১৫ মেগাওয়াট বাকিটা ঘাটতি থেকে যাচ্ছে, দুটি ফিডার বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বভাবিক হবে তবে কতোদিনে লোডশেডিং থাকবে বা কতদিন বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ হবে তা তিনি জানেন না এবং জানাতে অপারক। জেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ বিদ্যুতের বিপর্যয়কর লোডশেডিং হতে মুক্তি চায় স্বাভাবিক স্বস্তি দায়ক জীবন যাপন চায় আরতা সম্ভব নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ।