শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:২৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি \ অস্বস্তিতে ক্রেতারা আমদানীতে বেশি বেশি অংশগ্রহণ জরুরী \ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি রোধে মনিটরিং জরুরী কুলিয়া ও সখিপুর ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত সখিপুরে চাল শ্রমিক আজিজুলের মৃত্যু সাতক্ষীরায় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণী শ্যামনগরে কারিতাসের উদ্ভাবিত জুটিনসীট ঘর উদ্বোধন ও হস্তান্তর তালায় তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে দ্বিতীয় দিনের ক্রিকেট ওফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরা টেকনিক্যাল স্কুলে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা সাতক্ষীরায় চিংড়ি চাষের পুকুর প্রস্তুতি কর্মশালা দায়িত্বশীল ও কর্মী শিক্ষা শিবির সভা অনুষ্ঠিত নলতা শরীফে ৬১তম বার্ষিকী পবিত্র ওরছ শরীফ আগামী ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারী

বিদ্যুৎখাতে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৫

এফএনএস : দেশের বিদ্যুৎখাতে বিনিয়োগে ক্ষেত্রে নীতি বদল করেছে সরকার। এতোদিন দেশে বেসরকারি খাতের সব বিদ্যুৎ প্রকল্পে বাস্তবায়ন চুক্তি বা ইমপ্লিমেন্ট এগ্রিমেন্ট (আইএ) করার বাধ্যবাধকতা ছিলো। কিন্তু সমপ্রতি ১০টি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য আহ্বান করা দরপত্রে তা বাতিল করা হয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বাড়ারও শঙ্কা রয়েছে। তাতে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়তে পারে। তাছাড়া সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) লোকসানও বেড়ে যাবে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাস্তবায়ন চুক্তি বা ইমপ্লিমেন্ট এগ্রিমেন্টকে (আইএ) বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগের ঝুঁকি মোকাবিলা করার জন্য রাষ্ট্রের সার্বভৌম গ্যারান্টির মতো বা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) সম্পূরক চুক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের নিশ্চয়তা পায়। আর বাস্তবায়নকারী কোম্পানি স্বল্প সুদে ঋণসহ দাতা সংস্থা থেকে বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে থাকে। ফলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কম হয় এবং দামও কম থাকে। বিভিন্ন দেশে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) সম্পূরক চুক্তি হিসেবে আইএ করার বিধান রয়েছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে যতো বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে তার সবগুলোতেই আইএ ছিল। কিন্তু বর্তমানে আইএ বাতিল হওয়ায় বিদ্যুৎখাতে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। ফলে ওই খাতে বাধাগ্রস্ত হবে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)। ইতিমধ্যেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আইএ না থাকার কারণে বিদ্যুৎখাতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলার কথা জানিয়েছে। কারণ বাংলাদেশে বিনিয়োগকে তারা আর নিরাপদ মনে করছেন না। তাছাড়া আইএ বাতিল হলে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোও দেবে না ঋণ সহায়তা। তাতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে কোম্পানির ব্যয় বাড়বে। আর ওই বাড়তি ব্যয় উৎপাদন খরচের সঙ্গে যোগ হয়ে গ্রাহকের কাঁধে পড়বে। ফলে শিল্প খাতের উৎপাদন খরচও বাড়বে। সূত্র জানায়, সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে পিডিবিকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কম দামে বিক্রি করতে হবে। তাতে সংস্থাটির লোকসান বাড়বে ও ভতুর্কি বাড়বে। কারণ আইএ বিধান বাদ দেয়ায় দরপত্রে অংশ নেওয়ার সময়ই বিনিয়োগকারীদের ব্যয় বেশি দেখাবে। আর তাতে পিডিবি বিপাকে পড়বে। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর পিডিবি আইএ বিধান ছাড়া ৩২৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১২টি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে। আর চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরো ১০টি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্র অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন ও চালু হওয়ার পর সরকার ২০ বছরের জন্য একটি নির্দিষ্ট দামে বিদ্যুৎ কিনতে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) স্বাক্ষর করবে। কিন্তু সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বিদ্যুৎ খাতের বেসরকারি উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী এবং বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আইএ বাতিল করায় বর্তমান সরকারের বিদ্যুৎ খাতে নেয়া প্রকল্পগুলোর জন্য ডাকা দরপত্রে দেশিবিদেশি কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের অংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কার কথাও জানানো হয়েছে। এদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিউনিয়েবেল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আল মাহমুদ জানান, আইএ ও পিপিএ আন্তর্জাতিকভাবে একটি পরিচিত ব্যবস্থা। বিনিয়োগকারীরাও এর সঙ্গে পরিচিত এবং অভ্যন্ত। এরই মধ্যে ৪০টি কোম্পানি এ খাতে ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ নিশ্চিত করে এর ২০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে ফেলেছে। কিন্তু এই প্রকল্পগুলো রিভিজিট না করে দায়িত্বপ্রাপ্তরা অন্য ব্যবস্থায় চলে গেছেন। বিনিয়োগকারীদের আইএ না থাকলে এ খাতে বিনিয়োগে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। আইএ বাতিল হলে তারা আর বিনিয়োগে যাবেন না বলেও জানিয়েছে। কারণ তারা বিনিয়োগ করা নিরাপদ মনে করছে না। আর এ মুহূর্তে বিদেশি বিনিয়োগ ছাড়া এতো বড় লক্ষ্য অর্জনও সম্ভব না। কিন্তু সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার চাইলেও কাজ ও কথার মধ্যে মিল পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের (বিপা) সভাপতি জানান, আইএ বাদ দিয়ে সরকার খুব বেশি লাভবান হবে না। আবার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছেও বাংলাদেশের একেকবার একেক সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি নেতিবাচক বার্তা দেবে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাবে। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, সরকার এ দায়িত্ব আর নিতে পারছে না। আইপিপিগুলোকে টাকা দিতে পারছে না। সরকারের যে সার্বভৌম গ্যারান্টির প্রতিশ্রম্নতি তার মূল্য তো থাকতে হবে। এখন থেকে এমন কোনো প্রতিশ্রম্নতি দেয়া হবে না, যা সরকার রাখতে পারবে না।

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com