শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
নলতায় ঠান্ডা পানি, স্যালাইন ও তরমুজ বিতরণ নলতা আহ্ছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজ আবারও উপজেলার শ্রেষ্ঠ পাইকগাছায় আধা কেজি গাঁজাসহ যুবক আটক আশাশুনি উপজেলা নির্বাচনে ১৩ প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ আশাশুনিতে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ও নির্মাণ শ্রমিক ফেডারেশনের মে দিবস পালিত কয়রায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিন পদে ১৫ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা তালায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শ্রমজীবী মানুষের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ -সিটি মেয়র আসন্ন ষষ্ঠ শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিমা রানীর গণসংযোগ উপজেলা নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ করাই লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

বিনেরপোতা মৎস্য বাজারে পাতার বিড়ি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ অসহায়ত্ব জন্মান্ধ দুই সহদর

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

বিলাল হুসাইন নগরঘাটা থেকে ঃ ” অন্ধ জনে দেহ আলো ” এই প্রবাদটি যেন বাস্তবে রুপান্তরীত হলো। সাতক্ষীরার বিনেরপোতা মহস্য বাজারে পাতার বিড়ি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে চলেছে জন্মান্ধ দুই সহদর। ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিনেরপোতা বটতলায় বসে সাধারণ মানুষদের মত দিব্বি পাতার বিড়ি বিক্রি করে চলেছেন। অন্ধত্বের কথা ভেবে সহানুভূতি দেখিয়ে অনেকেই চলে আসেন বিড়ি কিনতে। ক্রেতাদেরকে বুঝে দেন কড়া গন্ডায় বিড়ি হিসাব করে। বিড়ি বিক্রি করার টাকা বুঝে নিতে তাদের মোটেও বেগ পেতে হয় না। হাতের ঘষার সাহায্যে বুঝতে পারেন কে কত টাকা দিয়েছেন। এই দুই সহদর হলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা লাবসা ইউনিয়নের বিনেরপোতা গ্রামের মৃত্যু নরেন মন্ডলের জন্মান্ধ পুত্র আশুতোষ মন্ডল( ৬৫ ) এবং বিকাশ মন্ডল (৫০)। বাবার পৈত্রিক ভিটাবাড়ী না থাকায় বিনেরপোতা পাকা ব্রীজের নিচে সরকারী সম্পত্তির উপর দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। আশুতোষ মন্ডল জানান ১৯৭৫ সালে ৩ ভাই ও ৩ বোনকে রেখে বাবা মারা যান। ৬ ভাই বোনদের মধ্যে আমরা দুই ভাই জন্মান্ধ। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে ভাই বোনদের দেখা শোনার দায়ীত্ব পড়ে যায় আমাদের দুই ভাইয়ের উপর। তাদের লালন পালন করা থেকে শুরু করে বিয়ে সাদি পর্যন্ত দিতে হয়েছে। তিনি জানান বর্তমানে আমার সংসারে ২ ছেলে আর ১ মেয়ে সন্তান রয়েছে। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে বিনেরপোতা মাছ বাজারে পাতার বিড়ি বিক্রি করে আসছি। কিন্তু আজও পর্যন্ত ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নেয়নি। পরিশ্রম করে খাবো কিন্তু ভিক্ষাবৃত্তি করবো না। বিকাশ মন্ডল জানান আমার সংসারে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। মেয়ে চন্দনা এবার এস,এস,সি পরীক্ষার্থী। ছেলে জয়ন্ত মন্ডল একটি বেসরকারী কোম্পানীতে জব করে। তিনি জানান অভাব অনাটনের সংসারে বিড়ি বিক্রি করে এখন আর সংসার চালাতে পারিনা। রৌদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিড়ি বিক্রি করে থাকি। তবে কোন দিন ১০০ টাকা আবার কোন দিন ১৫০ টাকা করে আয় হয়ে থাকে। আবার কোন দিন এর চাইতে কম বেশী হয়ে থাকে। এতে করে সংসার পরিচালনা করতে গিয়ে আমাদের দারুন কষ্ট ভোগ করতে হয়। বিকাশ মন্ডল জানান বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারণে সংসার চালাতে হিমছিম খেতে হচ্ছে। তারপর আবার মেয়ের পড়ালেখার বাড়তি খরচ জোগাতে গিয়ে পড়তে হচ্ছে বেশী সমস্যায়। তিনি আরও জানান পরিবারের সদস্যরা আমাদের দুই ভাইকে প্রতিদিন বাজারে নিয়ে আসে আবার সন্ধ্যা হলে বাজার থেকে বাড়ী নিয়ে যায়। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানায় এখানকার বাজারের লোকজন দুই ভাইকে প্রচন্ড ভালবাসেন। তবে বিশেষ কোন সমস্যা হলে সকলে মিলে তাদেরকে সাহায্যের পাশাপাশি সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে থাকেন। তারা অত্যন্ত আক্ষেপের সঙ্গে বলেন জীবনে কোনদিন পৃথিবীর আলো দেখতে পেলাম না। যে পৃথিবীটা কতটা সুন্দর। তাই জীবনের শেষ ইচ্ছা পুরণে স্থায়ী পূনঃবাসনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জন্মান্ধ দুই সহদর সরকারের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com