মীর আবু বকর ॥ বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন মহান স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতার মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতার। স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ আর দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রাম ও বাঙালি জাতির গৌরবগাথা ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য যুদ্ধ করেছিল। ১৯৭১ সালে এই দিনে বাঙালি ঘোষণা করেছিল আমরা মুক্ত হয়েছি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে আমাদেরকে শোষণ করতেন। বাঙালি জাতি ওই সকল শহীদদের শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস নামে পরিচিত। সারা দেশের ন্যায় সাতক্ষীরা ও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত হচ্ছে। প্রত্যুষে সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে ৩১ বার তব ধ্বনির মাধ্যমে দিবাসের শুভ সূচনা হয়। পরে শহরের খুলনার মোড়স্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকাল ৮ টায় সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন ফেস্টুন এবং শান্তির প্রতীক কবুতর উড়িয়ে মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ চাঁদ মোঃ আব্দুল আলীম আল রাজি,পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মতিউর রহমান সিদ্দিকী,নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ এম জি আজম, জেলা আলীগের সাধাঃ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ নজরুল ইসলাম,সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোশারফ হোসেন মশু,সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ সুফিয়ান রুস্তম। পরে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জেলা বাশীর উদ্দেশ্যে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানিদের হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করেছেন। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন একটি সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে। কিন্তু তিনি আমাদের মাঝে আর নাই। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে সাতক্ষীরা বাসি মেডিকেল কলেজ, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অর্থনৈতিক জন এবং রেললাইন বাস্তবায়নের অপেক্ষায়। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১৯৪১ সালের পূর্বেই বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। আমাদের যার যার অবস্থান থেকে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করতে হবে। পরে স্টেডিয়ামে শুরু হয় পুলিশ আনসার সহজ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপস্থাপনায় শরীর চর্চা প্রদর্শনী। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মনমুগ্ধ কর চিত্র পরিদর্শন। সাতক্ষীরা স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আমানুল্লাহ আল হাদী, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মাশরুবা ফেরদৌস, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম,অতিঃ পুলিশ সুপার প্রশাসন ও অর্থ মোঃ সজিব খান পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত, অতিঃ জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ সরোয়ার হোসেন, অতিঃ জেলা প্রশাসক রাজস্ব কাজী আরিফুর রহমান, অতিঃ জেলা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিষ্ণুপদ পাল,জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট মোরশেদা খানম, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাধন কুমার বিশ্বাস,জেলা জেলা কারাগারের সুপার হাসনে জাহান বিথী, সাতক্ষীরা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ড শিহাব উদ্দিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শামীম ভুঁইয়া, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন ইসমিন কারেমী, সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ফেরদৌস আরেফিন, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ ফরহাদ জামিল, জেলা তথ্য অফিসার মোঃ জাহারুল ইসলাম, সামাজিক বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জি এম মারুফ বিল্লাহ,সহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক কবর জিয়ারত করা হয়। পরবর্তীতে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সম্বর্ধনা প্রদান করা হয়। এছাড়া মহিলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সাতক্ষীরা টেনিস ক্লাবের টেনিস প্রতিযোগিতা। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সকল সরকারি হাসপাতাল সরকারি শিশু পরিবার উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসের সমাপ্তি হয়।