দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ শেষ শ্রাবনে বিরামহীন বৃষ্টিপাতে জনজীবনের স্বাভাবিক গতিধারাকে ছন্দপতন ঘটিয়েছে। পানিতে ভাসছে সাতক্ষীরা শহরের ব্যস্ততম সড়ক, জলাবদ্ধতায় আচ্ছন্ন বসতবাড়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাঠে ঘাটে পানি আর পানি, সীমান্ত নদী ইছামতি, কালিন্দী, রায়মঙ্গল এর পানি যেন উপচে পড়ার উপক্রম ঘটেছে। জেলার শত সহস্র চিংড়ী ঘের গুলো ডুবু পর্যায়ে পৌছেছে। গত তিন/চার দিনের বৃষ্টিপাত দৃশ্যতঃ চিংড়ী শিল্পের জন্য হুমকির কারনে পরিনত হয়েছে। সাতক্ষীরার কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থাপনাতে ও বিরুপ প্রভাব সৃষ্টি করেছে। সর্বত্র বর্তমান সময়ে আমন ধান রোপন চলছে। রোপন করা আমন ধান বৃষ্টির পানিতে কোন কোন এলাকাতে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সবজি বাগানে পানি জমাটবদ্ধ হয়ে উৎপাদনের পথরুদ্ধ করতে চাইছে। সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকাতে সা¤প্রতিক বছর গুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির সাদা মাছের বিপ্লব ঘটেছে। অতি বর্ষায় সাদা মাছের হ্যাচারী ও ঘেরগুলো ডুবতে বসেছে। বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানি বন্দী হয়ে পড়ায় এবং কাদাপানিতে পরিপূর্ণতা পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক চলাচল বিঘিœত ঘটছে সেই সাথে স্বাভাবিক পাঠপরিক্রমার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। গত দুই দিন অতি বৃষ্টির কারনে আমন ধান রোপনে সমস্যায় পড়েছে কৃষকরা। শহরের অভ্যন্তরের একাধিক হাটবাজারের সড়ক গুলোতে পানি জমাট হওয়ায় বেঁচা কেনার স্বাভাবিকতা ক্ষুন্ন হচ্ছে। শহরের পাশাপাশি মফস্বলের হাটবাজার গুলোতেও পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অতি বৃষ্টির কারনে অস্থায়ী টং দোকানগুলো যেমন খুলতে পারছে না অনুরুপ ক্রেতার অভাব দেখা দিচ্ছে। শহরের ফুটপথের ব্যবসায়ীরা হাত বা গোটো করে অলস সময় অতিবাহিত করছে। ভ্রাম্যমান দোকানী ও হকার শ্রেনির ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারছে না, শ্রমিক শ্রেনী, দ্বীনমজুর ও কায়িক পরিশ্রমি মানুষগুলো কাজের অভাবে অর্থ উপার্জন করতে না পেরে জীবন জীবিকায় আঘাতে আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হচ্ছে। বৃষ্টির পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে গত দুই দিনে বৃষ্টিপাত থামেনি ধারাবাহিক ভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে। সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সড়কের একাধিক স্থানে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। খানাখোন্দক এলাকায় পানি জমে আরও অধিকতর খানা খোন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। সাতক্ষীরা শহরের জনসাধারন বিশেষ ভাবে দুর্ভোগের কবলে পড়েছে। পৌরসভার উলেখযোগ্য সংযোগ সড়কে পানি জমে যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে কষ্টকর করে তুলেছে। শহরের মুনজিতপুর অভ্যন্তরের সড়কে ডাঃ শাহআলমের চেম্বার এলাকা, একাডেমিক মসজিদ ও ঈদগাহ চত্বর, কদমতলা, মধুমলারডাঙ্গি, কালেক্টর ও আদালত চত্ত¡র, কামালনগর এলাকা, আদালতের বিপরীত এলাকার সবুজ বাগ এলাকা, স্টেডিয়াম এলাকা, কেষ্টময়রার মোড় এলাকা, বাস টার্মিনালের পশ্চিম পাশের এলাকা, মেহেদীবাগ, টিভি টাওয়ার এলাকা, পলাশপোল এর সংযোগ সড়ক, সড়কের পাশাপাশি শহরের উলেখযোগ্য আবাসিক এলাকাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে পানি বন্দী হয়ে পড়েছে শহরবাসির বৃহৎ অংশ। শহরের কাটিয়া, মাঠপাড়া, মধুমলারডাঙ্গী, নিউমার্কেটের বিপরীত আবাসিক এলাকা, খড়িবিলা কামালনগরের পশ্চিম এলাকা, বাকাল দৌলতপুর, পুলিশ লাইনস এর আশপাশ, রসুলপুরের এক অংশের আবাসিক এলাকায় পানিতে থৈ থৈ করছে। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, রান্নাবান্না সারতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। শহরের পানি নিষ্কাষন ব্যবস্থা প্রায় অকেজো অথবা দুর্বল যে কারনে যথাযথভাবে পানি নিষ্কাষন হচ্ছে না ফলশ্র“তিতে সড়কে সড়কে পনি জমছে আবাসিক এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। জনসাধারন চরম ভোগান্তী আর বিড়ম্বনার মধ্য দিয়ে সময় অতিক্রম করছে। অবিলম্বে পানি নিষ্কাষনের মাধ্যমেই জনদূর্ভোগ হতে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।