দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ পৃথিবীর ইতিহাসের ইসরাইলি বাহিনী গাজায় নিষ্ঠুরতম হত্যাযজ্ঞ চলছে। প্রতিদিনই নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে নিরীহ সব ফিলিস্তীনিরা। একদিকে ইসরাইলি বিমান হামলা ও স্থল অভিযান অন্যদিকে ইসরাইলি বাহিনীকে প্রতিরোধ যুদ্ধে হামাস। ফিলিস্তীনিরা কেবলমাত্র হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে তা নয়, দখলদার বাহিনীর সদস্যরাও প্রতিনিয়ত এবং প্রতিমুহুর্তে হামাস সদস্যদের দ্বারা হামলার শিকার হচ্ছে ও নিহত হচ্ছে। এমনকি হামাস যোদ্ধাদের হামলায় ইসরাইলের ঐতিহ্যবাহি ও গর্ব এবং মর্যাদার মাধ্যম হিসেবে খ্যাত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ট্যাংক ও সাজোয়া যান ধ্বংস হচ্ছে। সর্বাপেক্ষা বিপর্যয় কর পরিস্থিতির মধ্যে অবস্থান করছে দখলদার বাহিনী গাজার খান ইউনিস এলাকাতে, অন্তত পনের দিনের অধিক সময় যাবৎ খান ইউনিসে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী ও হামাস যোদ্ধাদের সাথে চলছে লড়াই। উল্লেখ্য ইতিপূর্বে দখলদার বাহিনীর সদস্যরা খান ইউনিসে হামাস যোদ্ধাদের সাথে সংঘর্ষে টিকতে না পেরে অবস্থান ত্যাগ করে। পরবর্তিতে কয়েক হাজার সেনা প্রযুক্তি সমৃদ্ধ অত্যাধুনিক ট্যাংক ও সাজোয়া যান নিয়ে ইসরাইলি সেনারা খান ইউনিসে প্রবেশ করে এর পূর্বে খান ইউনিসের চারিদিক দিয়ে ঘেরাও করে বিমান হামলা পরিচালনা করে। একদিকে বিমান হামলা অন্যদিকে হামলার পর স্থল অভিযান পরিচালনা করছে দখলদার বাহিনী। গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানাগেছে খান ইউনিসে চলছে দুই পক্ষের মধ্যে মুহুর মুহুর লড়াই এদিকে দখলদার ইসরাইল হঠাৎ করেই গাজার মধ্য অঞ্চলে যুদ্ধ বিরতি ঘোষনা করেছে। ইসরাইলের একতরফা যুদ্ধ বিরতির ঘটনা নিঃসন্দেহে বর্তমান গাজা ইসরাইল যুদ্ধের মাঝে ব্যাপক ভিত্তিক আলোচিত বিষয়। পশ্চিমা মিডিয়াগুলো গতকাল ইসরাইলের এক তরফা যুদ্ধ বিরতির ঘটনায় নানামুখি বিশ্লেষন করেছে। পশ্চিমা মিডিয়া দৃষ্টিতে বলা হয়েছে ইসরাইল কর্তৃক গাজার নিরীহ ও বেসামরিক ফিলিস্তীনিদের হত্যাকান্ডে বিশ্বময় ইসরাইলের সমর্থন দানকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে যে কারনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছায় ইসরাইল গাজার মধ্য এলাকাতে যুদ্ধ বিরতি ঘোষনা দিয়েছে। অন্য খবরে বলা হয়েছে যেহেতু হামাস কোন অবস্থাতেই ইসরাইলের সাথে আলোচনায় বসবে না এমন ঘোষনা দেওয়ায় হামাসের সাথে আলোচনায় বসার ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশর ও কাতারের প্রত্যাশায় ইসরাইলের যুদ্ধ বিরতির ঘোষনা, অন্যদিকে হামাসের পক্ষ হতে বলার চেষ্টা করা হয়েছে তারা লড়াই করে না পারায় এই সিদ্ধান্ত। এদিকে কাতার এবা নতুন ভাবে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব আনায়ন করেছে উক্ত প্রস্তাবে বলা হয়েছে হামাস যোদ্ধারা নির্বাচনে যাবে এ সময়ের পূর্বে তারা তাদের হাতে থাকা ইসরাইলি বন্দীদের মুক্তিদেবে তারপর ইসরাইল স্থায়ী যুদ্ধ বিরতির ঘোষনা দেবে ও তা বাস্তবায়ন করবে। গতকাল হামাসের নেতৃবৃন্দ এমন প্রস্তাবকেও প্রত্যাখান করে বলেছে হামাস যোদ্ধারা প্রতিজন এক একজন ফিলিস্তীনি তারা কোন অবস্থাতেই গাজা ত্যাগ করবে না, কারন গাজাতেই তাদের জন্ম এবং গাজাতেই তাদের মৃত্যু হবে। হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কাসেম ব্রিগেড তাদের নিজস্ব টেলিগ্রাম বার্তায় বলেছে হামাস যোদ্ধারা গাজা ছেড়ে অন্যত্র কোথাও যাবে না। তারা মরবে নতুবা দখলদার বাহিনীর সদস্যদেরকে মারবে। গাজার মধ্য এলাকাতে ইসরাইল যুদ্ধ বিরতির ঘোষনা দিলেও উপত্যকাটির উত্তর ও দক্ষিন এলাকাতে গতকালও বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান পরিচালনা করেছে দখলদার বাহিনী বিশেষ করে উত্তরের কয়েকটি ভবনে তারা ব্যাপক হামলা চালিয়ে গত চব্বিশ ঘন্টায় অন্তত পঞ্চাশ জনের অধিক নিরীহ ও নিরস্ত্র ফিলিস্তীনিদের কে হত্যা করেছে। গাজায় চলতি সপ্তাহে অতি বৃষ্টিপাতের কল্যান আল জাবালিয়া আশ্রয় শিবিরে পানি প্রবেশ করলে সেই সময়ের দূর্ভোগ আর দুর্ষিত পানি প্রভাবে আশ্রয় শিবিরটিতে নানান ধরনের রোগ বালাই ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের কারনে দক্ষিন আফ্রিকা ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে যে মামলা দায়ের করে উক্ত মামলার শুনানী গতকাল শুরু হয়েছে। দক্ষিন আফ্রিকার দায়ের করা মামলায় পুরোপুরি সমর্থন জানিয়েছে ওআইসি ভূক্ত দেশগুলো। ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার পক্ষ থেকে ইতিপুর্বে ইসরাইলের হামলার নিন্দা ও অবিলম্বে হামলা বন্ধের আহবান জানান। এদিকে গতকাল হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা লেবাননের অভ্যন্তরে হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরাইলের ভূ-খন্ডে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলের ভূ-খন্ডে হামাস যোদ্ধারাও বৃষ্টিরমত রকেট নিক্ষেপ করেছে। সময় ইসরাইলের পক্ষ হতে সাধারণ ফিলিস্তীনিদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য সাইরেন বাজায়, এদিকে ধারনা করছে পশ্চিমা মিডিয়া আন্তর্জাতিক আদালতের শুনানী শেষে ইসরাইলের জন্য ভয়াবহ পরিনতি বহন করতে পারে। ইসরাইলের অধিকাংশ হাসপাতাল ধ্বংস করে দেওয়ায় চিকিৎসা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে। জাতিসংঘ আবারও ইসরাইল কে হুশিয়ারী করে বলেছে আগামী দিনগুলোতে যদি হামলা ও হত্যাকান্ড অব্যাহত তাকে তাহলে ইসরাইলকে করুন পরিনতি ভোগ করতে হবে।