শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১০:২২ অপরাহ্ন

বোরো মৌসুমে সার নিয়ে শঙ্কিত কৃষক

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

এফএনএস এক্সক্লুসিভ: বোরো মৌসুমে সার নিয়ে শঙ্কিত কৃষক। বেশি দামেও মিলছে না সার। এখন বোরো ধান চাষের ভরা মৌসুম। কিন্তুফসল উৎপাদনে প্রয়োজনীয় সারের সংকটে দিশাহারা কৃষকরা। এরই মধ্যে সংকটের কারণে এলাকাভেদে বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সারের দাম। সামনের দিনগুলোতে সারের দাম আরো বাড়ার শঙ্কায় সারের আগাম মজুত করছে সচ্ছল কৃষকরা। তাতে নষ্ট হচ্ছে বাজারের ভারসাম্য। ফলে প্রান্তিক কৃষকরা একদমই সার পাচ্ছে না। আর সারের সংকট হলে কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়ার পাশাপাশি কমবে উৎপাদনও। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কৃষক। কৃষক এবং কৃষিখাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের বিভিন্ন স্থানেই দ্বিগুণ বা তারও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সার। এক বস্তা ডিএপি সারের সরকারি বিক্রয়মূল্য ১ হাজার ৫০ টাকা হলেও কোথাও কোথাও তা ২১শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তারপরও কৃষকরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী সার পাচ্ছে না। সার কিনতে গেলে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা কৃষকরা সার সংকটের কথা বলছে। কিন্তু দাম বেশি দিলেই পাওয়া যাচ্ছে সার। ফলে অপেক্ষাকৃত অবস্থাবান কৃষকরা সার ডিলারদের কাছ থেকে বস্তাপ্রতি ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা বেশি দরে ২০ থেকে ৩০ পার্সেন্ট সার সংগ্রহ করতে পেরেছে। কিন্তু প্রান্তিক ও বর্গাচাষিরা ছিটেফোঁটা সারও কিনতে পারেনি। সূত্র জানায়, প্রয়োজনীয় সার সংগ্রহ করতে না পেরে বোরো চা নিয়ে কৃষকদের মাঝে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ কৃষকরা প্রয়োজনের ১০ ভাগের এক ভাগ সার সংগ্রহ করতেই হিমশিম খাচ্ছে। টিএসপি বাজারে নেই। ডিএপির দাম বেশি। আর দিনে সার না থাকলেও রাতে আছে। আর সারের জন্য এসে কৃষকরা ঘুরে যাচ্ছে। অথচ ইতিমধ্যে আগাম বোরো ধানের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ দিন হয়ে গেছে। এ অবস্থায় সারের প্রয়োজন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সরকারি দামের চেয়ে বস্তাপ্রতি এক থেকে দেড়শ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। কোথাও কোথাও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সার ডিলাররা সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে প্রতি বস্তায় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকারও বেশি আদায় করছে। যদিও সারের ডিলার ও ব্যবসায়ীদের অজুহাত, সারের বরাদ্দ কম পাওয়ায় চাহিদা বেড়েছে। ফলে দাম কিছুটা বাড়ছে। আর কৃষকদের অভিযোগ, অনেক ডিলারের কাছে ডিএপি সার পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও যাদের কাছে আছে তারা ১ হাজার ৫০ টাকার ডিএপি সারের বস্তা প্রতি ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা নিচ্ছে। অন্যান্য সারেও অতিরিক্ত মূল্য আদায় করা হচ্ছে। এদিকে কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে দেশের রাসায়নিক সার কারখানাগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়িয়ে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি করা জরুরি। কারণ বোরো ও রবি মৌসুমে রাসায়নিক সারের ৭০ শতাংশের বেশি ব্যবহৃত হয়। আর সময়মতো সার না পেলে খাদ্য সংকটের শঙ্কা আছে। অন্যদিকে কৃষি কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশে সারের কোনো সংকট নেই। আমদানিকৃত সার সমুদ্রপথে আসতে যে সময় লাগে সেটা ছাড়া সার নিয়ে কোনো সংকট নেই। এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান জানান, দেশে সারের কোনো সংকট নেই। কোথাও যানবাহনের কারণে সার পৌঁছাতে দেরি হতে পারে। আর কোথাও হয়তো কেজিতে সর্বোচ্চ ৫ টাকা পর্যন্ত সারের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com