এফএনএস স্পোর্টস: টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পর হাল ধরলেন আহরার আমিন ও শিহাব জেমস। দুজনেই করলেন ফিফটি। এরপরই ব্যাটিংয়ে ধস। তাতে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও বড় ব্যবধানে হেরে গেল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে সোমবার যুব ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ৮০ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান। ২৪৫ রানের লক্ষ্যে ৮১ বল বাকি থাকতে ১৬৪ রানে গুটিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। রান তাড়ায় ¯্রফে ৯ রানের মধ্যে শেষের ৫ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। শেষ ৪ উইকেট পড়েছে শূন্য রানে! এর আগে ৩৮ রানে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন প্রথম চার ব্যাটসম্যান। শুরু ও শেষের এই ব্যাটিং বিপর্যয়েই মূলত ম্যাচটি হারল বাংলাদেশ। আগের ম্যাচেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করা সফরকারীরা শেষ ম্যাচ জিতে ব্যবধান করল ৪-১। তৃতীয় ম্যাচটি জিতেছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক হামজা নাওয়াজ। পাঁচ নম্বরে নেমে শেষ বলে আউট হওয়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ৭২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন। বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার ধসিয়ে দেওয়া বোলিংয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন দুই স্পিনার আলি আসফান্দ ও আরাফাত আহমেদ। বাঁহাতি পেসার সাজ্জাদ আলির শিকার টপ-অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান। দারুণ ফর্মে থাকা শাহজাইব এদিন করেন ৬৭ রান। সিরিজে দুই ফিফটি ও এক সেঞ্চুরিতে এই বাঁহাতি ওপেনারের রান ২৬৪। সিরিজ সেরার পুরস্কার উঠল তার হাতে। একমাত্র আনঅফিসিয়াল টেস্টেও ১৭৪ রান করেছিলেন তিনি। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আযান আওয়াইসের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ৮৮ রান যোগ করেন শাহজাইব। আরিফুল ইসলামের বলে আযান কট বিহাইন্ড হলে ভাঙে জুটি। শাহজাইবের মতোই দারুণ ছন্দে থাকা আযান করেন ৪১ রান। সব মিলিয়ে দুই ফিফটি ও এক সেঞ্চুরিতে তার সংগ্রহ সিরিজের সর্বোচ্চ ২৬৯ রান। এরপর ওয়াহাজ রিয়াজ ও মির্জা সাদ বেগ দ্রæত ফিরে গেলে একশর আগে ৩ উইকেট হারায় পাকিস্তান। চাপ সামাল দেন শাহজাইব ও হামজা। তবে জুটি বড় করতে পারেননি তারা। ৯৩ বলের ইনিংসে ৮ চার ও ১ ছক্কা মেরে জিসান আলমের বলে বোল্ড হন শাহজাইব। পঞ্চম উইকেটে আরাফাতের সঙ্গে জুটি বেঁধে ৭৫ রান যোগ করেন হামজা। চল্লিশ ছুঁয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরেন আরাফাত। এরপর দলকে আড়াইশর কাছাকাছি নিয়ে যান হামজা। ৬৮ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর ৮ বলে করেন আরও ২২ রান। শেষ ওভারে দুই ছক্কা মারেন তিনি। শেষ বলে ফের ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন মাহফুজুর রহমান। রান তাড়ায় পাওয়ার প্লের ভেতরে আউট বাংলাদেশের প্রথম চার ব্যাটসম্যান- আশিকুর রহমান (৫), মইনুল ইসলাম (০), জিসান (১৪) ও আরিফুল (৪)। পঞ্চম উইকেট জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন আহরার ও শিহাব। দুজনের জুটিতে আসে ৮৩ রান। আহমেদ হুসাইনের বলে ¯øগ সুইপে বিশাল ছক্কা মেরে ফিফটি স্পর্শ করেন আহরার। এরপর আর বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি। ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৫৮ বলে ৫৩ রান করে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আহরারের বিদায়ের পর জাকারিয়া ইসলামকে নিয়ে এগোতে থাকেন শিহাব। ৩০ ওভারে দেড়শ স্পর্শ করে বাংলাদেশ। ৩২তম ওভারে জুটি ভাঙেন ওয়াহাজ রিয়াজ। লোপ্পা ফুল টসে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন জাকারিয়া। সেখান থেকেই শুরু শেষের ধসের। ৩৫তম ওভারে পয়েন্ট থেকে আরাফাতের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হন শিহাব। ৯ চারে ৭৯ বলে ৫৬ রান করেন তিনি। এরপর আর কোনো রান যোগ না করেই ড্রেসিং রুমে ফেরেন বাকি তিন ব্যাটসম্যান। একই মাঠে বুধবার একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৫০ ওভারে ২৪৪/৮ (আজান ৪১, শাহজাইব ৬৭, ওয়াহাজ ৩, সাদ ৪, হামজা ৭২, আরাফাত ৪০, হুসাইন ৪, ইবতিসাম ৭, আসফান্দ ১*; একান্ত ৭-০-৪৭-২, ইকবাল ৯-১-৪৫-০, জিসান ৯-০-৪৬-১, আরিফুল ১০-০-২৬-১, ওয়াসি ৬-০-৩৬-০, মাহফুজুর ৯-১-৪২-৪)
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৩৬.৩ ওভারে ১৬৪ (আশিকুর ৫, মইনুল ০, জিসান ১৪, আরিফুল ৯, আহরার ৫৩, শিহাব ৫৬, জাকারিয়া ৯, মাহফুজুর ৩, ওয়াসি ০, একান্ত ০, ইকবাল ০*; আসফান্দ ৭-৩-২৪-৩, সাজ্জাদ ৬-০-৩৪-২, আরাফাত ৭.৩-১-২০-৩, ইবতিসাম ৫-১-৩১-০, তাহির ৪-০-২২-০, হুসাইন ৫-০-২৫-০, ওয়াহাজ ২-০-৭-১)
ফল: পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল ৮০ রানে জয়ী
সিরিজ: পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল ৪-১ ব্যবধানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: হামজা নাওয়াজ
ম্যান অব দা সিরিজ: শাহজাইব খান