এফএনএস স্পোর্টস: শতরানের দুয়ারে শুবমান গিলকে রেখে ভারত ইনিংসের ইতি টেনে দিল বৃষ্টি। সে সময়ে ম্যাচের ভবিষ্যৎ নিয়েই জেগেছিল শঙ্কা। তবে শেষ পর্যন্ত ঠিকঠাকভাবেই শেষ হলো ম্যাচ। সেখানে আরেকটি হতাশার ব্যাটিংয়ে বড় ব্যবধানে হেরেই হোয়াইটওয়াশড হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ত্রিনিদাদে বুধবার তৃতীয় ওয়ানডেতে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ১১৯ রানে জিতেছে ভারত। তিন ম্যাচের সিরিজ ঘরে তুলেছে ৩-০ ব্যবধানে। দুই দফায় বৃষ্টির মুখে পড়ে ভারত ইনিংস। প্রথমবার ২৪তম ওভার শেষে বৃষ্টি নামে। সে সময় সফরকারীদের রান ছিল ১ উইকেটে ১১৫। লম্বা সময় খেলা বন্ধ থাকায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ৪০ ওভারে। ৩৬তম ওভার শেষে আবার বৃষ্টি নামলে সেখানেই শেষ হয়ে যায় ভারতের ইনিংস। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পায় নতুন লক্ষ্য, ৩৫ ওভারে ২৫৭। এর ধারেকাছেও যেতে পারেনি নিকোলাস পুরানের দল। ভারত ইনিংসের সমাপ্তি টানার সময়ে দুই ছক্কা ও সাত চারে ৯৮ বলে ৯৮ রানে ব্যাট করছিলেন গিল। চমৎকার এই ইনিংসের জন্য তিনিই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। তিন ম্যাচে ২০৫ রান করে সিরিজ সেরাও তরুণ এই ওপেনার। পোর্ট অব স্পেনের কুইন্স পার্ক ওভালে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ভারতকে ভালো শুরু এনে দেয় উদ্বোধনী জুটি। পঞ্চাশ ছুঁয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন শিখর ধাওয়ান। শতরান ছুঁয়ে সামনের দিকে যাচ্ছিল জুটি। ভালো শুরুটা বড় করতে পারেননি এই সিরিজে দলেক নেতৃত্ব দেওয়া ধাওয়ান। লেগ স্পিনার হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়রের বলে মিডউইকেটে ধরা পড়েন তিনি। ৭৪ বলে ৭ চারে ৫৮ রান করেন ধাওয়ান। তার বিদায়ে ভাঙে ১১৩ রানের শুরুর জুটি। এর একটু পরেই বৃষ্টির জন্য বন্ধ হয়ে যায় খেলা। আবার শুরু হওয়ার পর প্রথম ওভারেই ১৮ রান নিয়ে শ্রেয়াস আইয়ার ও গিল বুঝিয়ে দেন, শেষ ১৬ ওভারে ঝড় তোলার মানসিকতা নিয়েই নেমেছেন তারা। টি-টোয়েন্টি ঘরানার ব্যাটিংয়ে শ্রেয়াস ও গিল রান তুলতে থাকেন দ্রুত। আকিল হোসেন ছাড়া আর কোনো বোলার যেন বল ফেলার জায়গা পাচ্ছিলেন না। ৩৪ বলে ৪৪ রান করা শ্রেয়াসকে ফিরিয়ে ৮৬ রানের জুটি ভাঙেন বাঁহাতি স্পিনার আকিল। বেশিক্ষণ টেকেননি সূর্যকুমার যাদব। সাঞ্জু স্যামসনকে নিয়ে দলকে আড়াইশ ছাড়ানো সংগ্রহ এনে দেওয়ায় চোখ রেখেছিলেন গিল। কিন্তু আবার বৃষ্টি নামলে সেঞ্চুরির চেষ্টা করার সুযোগ পাননি তিনি। দুই বিরতির মাঝে ১২ ওভারে ভারত যোগ করে ১১০ রান। ৩৫ ওভারে ২৫৭ সহজ কোনো লক্ষ্য নয়। এই রান তাড়ায় প্রয়োজন ছিল টপ অর্ডারের কারো বড় ইনিংস। কিন্তু তাদের দাঁড়াতেই দেননি সফরকারী বোলাররা। দ্বিতীয় ওভারে তিন বলের মধ্েয কাইল মেয়ার্স ও শামার ব্র“কসকে বিদায় করে দেন মোহাম্মদ সিরাজ। শেই হোপ এক ছক্কায় ২২ রান করে যুজবেন্দ্র চেহেলের বলে স্টাম্পড হয়ে যান। মিডল অর্ডারে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দলকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেন পুরান ও ব্র্যান্ডন কিং। তবে দুই জনই বিদায় নেন বড় ইনিংসের সম্ভাবনা জাগিয়ে। ৩২ বলে ৪২ রান করেন অধিনায়ক পুরান। কিং ৩৭ বলে করেন ৪২। দুই জনের বাউন্ডারি সমান, পাঁচ চারের পাশে ছক্কা একটি। ক্যারিবিয়ানদের শেষ ৬ ব্যাটসম্যানের মাত্র একজন যেতে পারেন দুই অঙ্কে। দশে নেমে ওয়ালশ জুনিয়র করেন ১০। হতাশার ব্যাটিংয়ে ৯ ওভার বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। ১৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ভারতের সফলতম বোলার রিস্ট স্পিনার চেহেল। দুটি করে উইকেট নেন সিরাজ ও শার্দুল ঠাকুর। সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত: ৩৬ ওভারে ২২৫/৩ (ধাওয়ান ৫৮, গিল ৯৮*, শ্রেয়াস ৪৪, সূর্যকুমার ৮, স্যামসন ৬*; হোল্ডার ৬-০-৪৩-০, সিলস ৭-০-৫০-০. পল ৬-০-২৩-০, আকিল ৮-০-৪৩-১, ওয়ালশ জুনিয়র ৮-০-৫৭-২, মেয়ার্স ১-০-৮-০)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ: (৩৫ ওভারে লক্ষ্য ২৫৭) ২৬ ওভারে ১৩৭ (হোপ ২২, মেয়ার্স ০, ব্র“কস ০, কিং ৪২, পুরান ৪২, কার্টি ৫, হোল্ডার ৯*, আকিল ১, পল ০, ওয়ালশ জুনিয়র ১০, সিলস ০; হুডা ৪-১-১৬-০, সিরাজ ৩-০-১৪-২, আকসার ৬-০-৩৮-১, প্রসিধ ৪-০-৩০-১, চেহেল ৪-০-১৭-৪, শার্দুল ৫-০-১৭-২)। ফল: ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ভারত ১১৯ রানে জয়ী। সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ভারত ৩-০তে জয়ী। ম্যান অব দা ম্যাচ: শুবমান গিল। ম্যান অব দা সিরিজ: শুবমান গিল।