মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
ধুলিয়াপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হলেন আশিক সাতক্ষীরা রেড ক্রিসেন্টের ফুড প্যাকেজ বিতরণ আছিয়া হত্যার প্রতিবাদে মহিলা জামায়াতের মানববন্ধন আশাশুনি পলিথিন ও প্লাস্টিক দুষণ প্রতিরোধে করণীয়তা নিয়ে কর্মশালা আইন—শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আশাশুনি থানা পুলিশের বিশেষ মহড়া কয়রায় হরিণের মাংস ফেলে পালালো শিকারীরা নারী ও শিশু ধর্ষনের প্রতিবাদে কয়রায় মানববন্ধন কয়রায় বিএনপির মতবিনিময় সভা তালায় চাঞ্চল্যকর শিক্ষক বিপ্লব হত্যাকান্ড এমপি, এসপি, দু’ওসিসহ আসামিদের এজাহার গ্রহণের নির্দেশ নূরনগরে অতি দরিদ্র পরিবারের মাঝে ভিজিএফ এর চাউল বিতরণ

ভারতীয় মিডিয়া বিশ্বে বাংলাদেশের বদনাম ছড়াচ্ছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

এফএনএস: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ভারতীয় মিডিয়া বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ সম্পর্কে নানা রকম মিথ্যা তথ্য তুলে ধরে বদনাম ছড়াচ্ছে। এ বিষয়ে দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সত্য বিষয় নিয়েও তারা (ভারতীয় মিডিয়া) তিলকে তাল করছে। কিন্তু অন্যান্য দেশ এসব কথা বিশ্বাস করছে না। গতকাল সোমবার রাজধানীর পল্টন টাওয়ারে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সত্য খবর একবার প্রকাশ করে আপনারা (গণমাধ্যম) দায়িত্ব শেষ করবেন না। ফলোআপ করতে হবে। এলডিসি থেকে উত্তরণের সময়সীমা পেছানো উচিত হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক আগে থেকেই বিষয়টি জানা, উত্তরণের জন্য আগের সরকার ও ব্যবসায়ীরা তেমন কিছুই করেনি। ২০২৬ সালেই আমরা এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন করব। এখান থেকে পেছানোর সুযোগ নেই। তিনি বলেন, দেশে এখন অর্থ সংকট চলছে, এ জন্য রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। ট্যাক্স—জিডিপি রেশিওতে লজ্জাজনক অবস্থায় আছে বাংলাদেশ। এখান থেকে আমাদের উত্তরণ ঘটাতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পূর্ণ সদিচ্ছা আছে দেশের জন্য ভালো কিছু করার। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, তুলাকে কৃষিপণ্য ঘোষণা এবং দেশে তুলা উৎপাদন বাড়াতে দুই মাসের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে সরকার। দেশীয় তুলার ওপর আরোপিত ট্যাক্স জরুরিভিত্তিতে প্রত্যাহার করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আহ্বান জানান মো. তৌহিদ হোসেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তামাক চাষের কারণে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। তামাক চাষের জমির কিছু অংশে তুলা চাষ করলে কৃষকও লাভবান হবেন, আবার দেশও অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে। দেশের জন্য ভালো তা কোন গোষ্ঠীর বিপক্ষে গেলেও সেই সিদ্ধান্ত নিতে পিছুপা হবে না ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার। এক্ষেত্রে নীতি সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। ওমান প্রবাসীরা পাসপোর্ট নিয়ে সমস্যায় আছেন। এসব প্রবাসীদের কষ্ট লাঘবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, পাসপোর্ট নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা অর্ধেকে নেমে আসবে বলেও উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তুলা রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র শুল্কারোপ করছে। তবে, বাংলাদেশ এর বাইরে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে। এলডিসি থেকে উত্তরণের সময় সীমা পেছানো উচিত হবে না বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, উত্তরণের জন্য সরকার ও ব্যবসায়ীরা আগে তেমন কোনো প্রস্তুতি নেয়নি। তাই বলে থেমে থাকা যাবে না। উত্তরণ পরবর্তী তিন বছর সময় পাওয়া যাবে তখনই ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নেবে। আমদানি ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়ায় দেশিও তুলাকে প্রণোদনা দেওয়া উচিত সেখানে ট্যাক্স ভ্যাট বসানো হয়েছে। দেশিও তুলার ওপর আরোপিত এ ট্যাক্স কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে সুপারিশ করা কথা জানান এনবিআর—এর সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন (কাস্টম বন্ড)। এবং দ্রুতই দেশিও তুলার ওপরে আরোপিত ট্যাক্স—ভ্যাট প্রত্যাহারের সুখবর আসবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এনবিআর সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন। বাংলাদেশ কটন জিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সাবের বলেন, বাংলাদেশে তামাক কৃষি পণ্য অথচ তুলাকে এখনো কৃষি পণ্য হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এর ফলে তুলা চাষি ও জিনার্সরা কৃষি ঋণ নেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। ঋণ নিতে দিতে হয় বাড়তি সুদ। সরকারের নীতি সহায়তা পেলে অন্তত দুই লাখ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ করে আমদানিকৃত তুলার চার ভাগের এক ভাগ দেশে উৎপাদন করা সম্ভব বলেও জানান তিনি। তুলা আমদানিতে চীনকে হটিয়ে বাংলাদেশ এখন শীর্ষ দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, চামড়ার মৌসুমে ট্যানার্সদের যেভাবে স্বল্প সুদের ঋণ দেওয়া হয়। তুলাতেও স্বল্প সুদের ঋণ দেওয়া হলে কৃষকরা তুলা উৎপাদন করে দাম পাওয়ার অনিশ্চয়তা থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। দেশে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার তুলা আমদানি করতে হয়। বিপুল এ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে এক—চতূর্থাংশ দেশে উৎপাদন করা সম্ভব বলে মনে করেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী পরিচালক ড. ফকরে আলম ইবনে তাবিব। তিনি বলেন, ধানের জমিতে তুলা চাষ হয় না। তুলা মূলত চরাঞ্চল, বরেন্দ্র এলাকা, দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত এলাকা, পাহাড়ি এলাকাকেসহ উচুঁ জমিতে তুলা চাষ করা হয়। নীতি সহাযোগিতা দেওয়া হলে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যাহত না করেই দেশে ২০ থেকে ২৫ লাখ টন তুলা উৎপাদন করা সম্ভব। তুলা বীজ থেকে ভোজ্য তেল ও গবাদি পশুর খাদ্য খৈল পাওয়া যায়। ফলে তুলা চাষ বাড়লে আমদানি নির্ভর ভোজ্য তেল ও খৈল আমদানি কমবে; বলেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক। বাংলাদেশ সুদান কটন জিনিং ইন্ডাস্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সুদানে তুলা চাষে সফল প্রবাসী উদ্যোক্তা মো. আবুল খায়ের বলেন, বাংলাদেশে তুলা চাষ বাড়াতে সহায়তা করবেন। এরই মধ্যে উচ্চ ফলনশীল তিনটি উন্নত জাতের তুলা বীজ পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়েছে। এ নতুন জাতের চাষাবাদ শুরু হলে কম জমি থেকে বেশি তুলা উৎপাদন করার সম্ভব। সভাপতির বক্তব্যে ইআরএফ—এর সভাপতি দৌলত আক্তার মালা বলেন, তুলা এখনো কৃষি পণ্য নয় বা দেশি তুলার ওপর বৈষম্যমূলক কর আছে অনেকে তা জানতো না। দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ খাতটিকে বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় নীতি সহযোগিতা দেওয়া প্রয়োজন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইআরএফ—এর সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইআরএফ, বাংলাদেশ কটন জিনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ সুদান কটন জিনিং ইন্ডাস্ট্রিজ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com