এফএনএস বিদেশ : ভারতের বহুল আলোচিত আরজি কর মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে গতকাল শনিবার। ৫ মাস ৯ দিন পর আলোচিত ধর্ষণ-খুনের মামলায় রায় ঘোষণা হলো শিয়ালদহ আদালতে। পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর মেডিকেল কলেজে কর্তব্যরত চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় গ্রেপ্তার সঞ্জয় রায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। তার সাজা ঘোষণা করা হবে আগামী সোমবার। গত বছর অগাস্টে কলকাতায় এই চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা পুরো ভারতকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। ঘটনার বিচার চেয়ে চিকিৎসকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের আন্দোলনে পশ্চিমবঙ্গ বেশ কয়েক মাস উত্তাল ছিল। রায় ঘোষণা করেন বিচারক অনির্বাণ দাস। তিনি সঞ্জয় ঘোষের উদ্দেশে বলেন, ‘সিবিআই এবং সাক্ষীদের বয়ানের ভিত্তিতে যা মনে হয়েছে তাতে দোষী সাব্যস্ত করা হবে আপনাকে। আপনার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে মৃত্যুদÐ।’ তখন সঞ্জয় বলেন, ‘আমি কিছু করিনি। আমার কথা একবার শুনুন।’ এরপর বিচারক রায় ঘোষণা করে বলেন, ‘সোমবার আপনার কথা শুনব।’এ দিন সঞ্জয় রায় আরো বলে, ‘আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ছিল। সেক্ষেত্রে তা ওখানে পড়ে থাকত। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’ বিচারক বলেন, ‘সব প্রমাণ জমা পড়েছে। সেই প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে।’আদালত সূত্রের খবরে বলা হয়েছে, গত বছর ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উদ্ধার হয় এক নারী চিকিৎসকের মরদেহ। তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিহত চিকিৎসক টানা ৩৬ ঘণ্টার ডিউটিতে ছিলেন, ওইদিন রাতে সহকর্মীদের সঙ্গে খাবার খেয়ে তিনি পালমোনোলজি বিভাগের সেমিনার হলে বিশ্রাম নিতে যান। পরদিন সকালে তার জুনিয়র সহকর্মীরা সেই হলের ভেতরেই তার অর্ধনগ্ন মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। নিহত তরুণীর পরিবার জানায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ তাদের প্রথমে জানিয়েছিল তাদের মেয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছে। পরে জানা যায় তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে উত্তাল হয়ে উঠেছিল পুরো ভারত। পরে তীব্র ক্ষোভের মুখে পুলিশ এই ঘটনায় খুন ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করে। সেদিন ভোরে সঞ্জয় রায় নামের সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করে কালকাতা পুলিশ। এ ছাড়া এ ঘটনার পর হাসপাতালটির দুর্নীতির অভিযোগে কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও সংশ্লিষ্ট টালা থানার ওসি অভিজিৎ মÐলকেও গ্রেপ্তার করে সিবিআই। আরজি কর মামলায় মোট ৫০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে নি¤œ আদালতে। সেই তালিকায় রয়েছেন নিহত চিকিৎসকের পিতা, সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার, কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী অফিসার, ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ এবং নিহতের কয়েক জন সহপাঠী। আরজি করের চিকিৎসক ধর্ষণ এবং হত্যা মামলায় বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয় গত বছরের ১১ নভেম্বর। ঘটনার ১৬২ দিনের মাথায় আজ রায় ঘোষণা করলেন আদালত। সূত্র : এই সময়, হিন্দুস্থান টাইমস।