এফএনএস: বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন কারাগারে এক হাজার ৮৫০ জন বাংলাদেশি বন্দি আছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই পদ্ধতিগত কারণে অনিয়মিত অবস্থানের দায়ে অভিযুক্ত বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। গতকাল রোববার জাতীয় সংসদে এমপি দিদারুল আলমের (চট্টগ্রাম-৪) লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশের ৩০টি জেলার সঙ্গে ভারতের সীমানা বিদ্যমান। সামাজিক যোগাযোগ, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন, অর্থনৈতিকসহ নানাবিধ কারণে উভয় দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। আব্দুল মোমেন বলেন, কোনো সোর্স সূত্রে খবর পেলে ভারতে বাংলাদেশের মিশনসমূহ তা যাচাইপূর্বক কারাগারে আটক বাংলাদেশির বিষয়ে নিশ্চিত হয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দিয়ে থাকেন। মিশনসমূহ ভারতের সংশ্লিষ্ট কারাগার, পুলিশ স্টেশন/থানা, হাত ও ডিপোর্টেশন সেন্টার নিয়মিত পরিদর্শন করে থাকে এবং সেখানে আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের আটকের কারণ উদঘাটন, আইনি সহায়তা প্রদান, জেল কোড অনুযায়ী স্বাস্থ্য সেবা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি বিষয়ে নিয়মিত ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। ‘আটকরা বিচারাধীন আসামিদের মামলা যেন দ্রুত নিষ্পত্তি হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়াসহ সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মুক্তি পায় তার ব্যবস্থাও নিয়ে থাকে। ক্ষেত্র বিশেষে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মধ্যস্থতা করে তাদের মুক্তকরণপূর্বক দেশে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’ মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে মিয়ানমারে বাংলাদেশি হিসেবে বিবেচিত মোট ৬৩ জন আটক রয়েছেন। যারা অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত। তাদের সাজার মেয়াদ শেষ হলে প্রত্যাবাসন করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের অনেকেই প্রতিক‚ল আবহাওয়া, নৌ ও সমুদ্রসীমা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকা, মাছ ধরার নৌকায় নেভিগেশনের ব্যবস্থা না থাকাসহ অন্যান্য কারণে মিয়ানমারের সীমানায় প্রবেশ করে। পরে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক আটক হন। মিয়ানমারে আটক ৬৩ জনের মধ্যে ১০ জনের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অবশিষ্ট ৫০ জনের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া চলমান। তিনি বলেন, মিয়ানমারে বন্দি বা সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ দূতাবাস সক্রিয়। দেশের সীমান্ত রক্ষাবাহিনীর মধ্যে নিয়মিত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মিয়ানমার হতে কারামুক্ত বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসনে ব্যবস্থা করা হয়। গত ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ৪১ জন ও ১ জুন চার কারামুক্ত বাংলাদেশিকে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে।