এফএনএস: আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে নাগরিকরা যাতে অবাধে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেই লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, “আমাদের কমিটমেন্ট হচ্ছে— একটা ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ইলেকশন জাতিকে উপহার দেওয়া— যেটা এতোদিন জাতি বঞ্চিত হয়েছে।” গতকাল রোববার আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে বক্তব্য দিচ্ছিলেন সিইসি নাসির। তিনি বলেন, “আমি প্রায়ই বলি— আমাদের যারা বঞ্চিত কর্মকর্তা, তারা জনপ্রশাসনে যাচ্ছে, আন্দোলন করছে, তাদের বঞ্চনার তথ্য তুলে ধরছে; দেশের ১৮ কোটি বঞ্চিত মানুষ কোথায় যাবে? ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত ১৮ কোটি মানুষ। তারা আসবে আমাদের কাছে। তাদের এ বঞ্চনার দুঃখ শোনার জন্য আমরা আছি। সিইসি নাসির বলেন, আমরা দায়িত্ব নিয়েছি, ইনশাহ আল্লাহ তাদের (নাগরিকদের) বঞ্চতা যেন ঘোচাতে পারি। তারা যে বঞ্চিত হয়েছে, যে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে— সেটা ঘোচাতে চাই। বঞ্চনার কষ্ট দূর করতে চাই। আমাদের কমিটমেন্টে অটল আছি। সবার সহযোগিতা চাই। দেশে বর্তমানে প্রায় ১২ কোটি ৩৬ লাখের বেশি ভোটার রয়েছে, যার মধ্যে ২ জানুয়ারি যুক্ত হয়েছে ১৮ লাখের বেশি নতুন ভোটার। এর মধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে। সেই লক্ষ্যে তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারদের ‘প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ’ অনুষ্ঠান গতকাল রোববার উদ্বোধন করা হয়। ধাপে ধাপে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর পৌনে একলাখ জনবল তৈরি করা হবে এ কর্মসূচির আওতায়। নাসির উদ্দিন বলেন, “ক্রিটিক্যাল টাইমে নতুন সরকার ক্ষমতা নিয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে; আমরাও ক্রান্তিকালীন সময়েরই একটা নির্বাচন কমিশন। “দায়িত্ব ছাড়াও দেশবাসীর প্রত্যাশা সরকারের কাছেও বেশি, আমাদের কাছেও বেশি। ১৫টি সংস্কার কমিশন হয়েছে। অতীতকে বদলে বর্তমান বিদ্যমান চাহিদার সাথে খাপ খায় এমন সংস্কার যাতে হয়, পুনর্গঠিত হয়। সংস্কার প্রতিবেদন অনুযায়ী আইন—কানুনে বিভিন্ন জায়গায় হাত দিতে হবে; সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। সব সংস্কারের বড় সংস্কার ‘নিজের আত্মাকে’ সংস্কার করা মন্তব্য করে তিনি বলেন, মন মগজ সংস্কার না হলে আখেরে ভালো কিছু বয়ে আনবে না। আমাদের মন—মানসিকতায় সংস্কার আনতে হবে। ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের সংস্কার কাজের অনেক কিছুই বাস্তবায়ন না হওয়ার কথাও তুলে ধরেন সিইসি নাসির। তিনি বলেন, “এবার তো আমাদের চারদিকে যে চিন্তাভাবনা দেখছি; যে প্রেসার, রিফর্মস মানে রিফর্মস প্রপোজাল নয়। এগ্রিড প্রপোজালগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারের তরফ থেকে উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছি। “সরকার চাচ্ছে— যেগুলোতে ঐক্যমত হবে, সেগুলো মোটামুটিভাবে যাতে অধিকাংশ বাস্তবায়ন করা যায়— সেজন্য কাজ করছে। আমাদের এখানেও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন রয়েছে। তারা যে সুপারিশ দেবে, তাতে আমাদের বিধিবিধান, আইন—কানুনে পরিবর্তন আনতে হবে।” সিইসি ছাড়াও প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী আয়োজনে অংশ নেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, বেগম তাহমিদা আহমদ, আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ।