শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:০৮ অপরাহ্ন

ভোট উৎসব দেখতে চায় ইসি

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • সভা সমাবেশ বন্ধে স্বরাষ্ট্রের জননিরাপত্তা বিভাগে চিঠি যাচ্ছে
  • ভোটার নিরুৎসাহিত হয় এমন কমকান্ড থেকে বিরত রাখার তাগিদ ও নিদেশনা
  • স্বচ্ছতা নিশ্চিতে চিঠি দিতে পারেঃ সাবেক সিইসি হুদা
  • মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন হবে ঃ সুজন সম্পাদক
  • এতে চলমান আন্দোলনে প্রভাব পড়বে নাঃ বিএনপি

জি এম শাহনেওয়াজ ঢাকা থেকে ॥ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ভোট উৎসব হিসেবে দেখতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য নির্বাচন বজন করা দল বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর বিদ্যমান রাজনৈতিক কামসূচি ও সভা-সমাবেশ দিয়ে ভোট উৎসবে বাগড়া দিতে চায়। পাশাপাশি হরতাল ও অবরোধ কমসূচি অব্যাহত রেখেছে। এর ফলে ভোট উৎসবে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এমন আশঙ্কা করছে কমিশন। তাই এ ধরণের কমকান্ডের কারণে ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগে নিরুৎসাহিত না হয় এবং ভোট আয়োজনে নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে এগুলো বন্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন-নিরাপত্তা বিভাগে চিঠি দেয়া হচ্ছে। সিইসিসহ চার কমিশনারের সস্মতিতে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। সাংবিধানিক পদধারীদের স্বাক্ষর হওয়া সাপেক্ষে বুধবারের মধ্যে ইসির এক উপ-সচিব স্বাক্ষরিত এ চিঠি যাবে স্বরাষ্ট্রে। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত খসড়া চিঠির অনুমিত মিলেছে। খবর ইসির নিভরযোগ্য সূত্রের। সাবেক প্রধান নিবাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা জানান, ভোট উৎসব আয়োজনের জন্য কমিশনের যা যা করণীয় তাই করছে এবং করবে। কারণ তফসিল ঘোষণার পর সভা-সমাবেশ এর নামে জ্বালাও পোড়াও বক্তব্য চলতে থাকলে নিরুৎসাহিত হবেন সাধারণ ভোটাররা। তাই কমিশন থেকে যদি এ ধরণের চিঠি দিয়ে থাকেন, সেটা স্বচ্ছতার জন্য। সংশ্লিষ্টরা যদি পদক্ষেপ নেন তাহলে ইসির জন্য ইতিবাচক হবে। তবে দ্বিমত পোষণ করেছেন সু-শাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, রাজনৈতিক কমসূচি ও সভা-সমাবেশ যেকোনো মানুষের নাগরিক অধিকার। সেটা বন্ধে উপযাজক হয়ে সরকারের মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া শিষ্টাচার বহির্ভূত। এতে যারা নৈতিক ও গণতান্ত্রিক ধারা ও সুষ্ঠু ভোটের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম ও সভা-সমাবেশ করছে তাদের অধিকার ক্ষুন্ন হবে। সুষ্ঠু পরিবেশ এবং সবাইর অংশগ্রহণে ভোট হলে ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিবেন তখন সভা-সমাবেশ থাকলেন ভোটে খুব বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। ইসির দায়িত্বশীল কমকর্তারা জানান, ভোট বিরোধী সমাবেশ বন্ধ চেয়ে যে ধরণের কঠোর শব্দ ও ভাষা প্রযোগ করে জননিরাপত্তা বিভাগে পত্র দিতে চেয়েছিল কমিশন, সে চিন্তা থেকে সরে এসেছে। মঙ্গলবার নতুন করে খসড়া চিঠিতে সংশোধনী এনে ভাষা প্রয়োগে নমনশীল অনুসরণ করা হয়েছে। সেখানে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিশালী দলের নাম উল্লেখ করা হয়নি বলে দায়িত্ব এক ব্যক্তি নিশ্চিত করেছে। তবে তফসিল ঘোষণার পর এ পযার্য়ে ভোট বিরোধী সভা-সমাবেশ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ভোটারদের মধ্যে যাতে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়ার মতো পরিবেশ পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতেও নিদের্শনা থাকছে। কমিশন মনে করছে, সভা-সমাবেশ, শান্তিপূর্ণ কমসূচি এবং অসিংহ আন্দোলন যেটাই হোক ভোটে ভোটারকে নিরুৎসাহিত করতে পারে। এদিকে, ইসির সভা-সমাবেশ বন্ধে চিঠির খসড়া অনুমোদন পাওয়ার আগেই এ ধরণের অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চচা বন্ধে ব্যবস্হা নিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আহবান জানিয়েছেন। ইসির সূত্র জানিয়েছে, যেসব রাজনতৈকি দল নিবাচনে অংশ নিয়েছে আচরণ বিধি ভঙ্গ বা সভা সমাবেশের কারণে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে কমিশন। ইতিমধ্যে অনেক হেভিওয়েট প্রাথীর বিরুদ্ধে শোকজ ও তলব করেছে। কিন্তু যারা নিবাচনে নেই কিংবা অনবিন্ধতি দল ও সংগঠনরে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই সাংবিধানিক সংস্থার। এছাড়া নির্বাচন বিরোধী রাজনতৈকি সভা-সমাবশেরে কারণে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে ভোটারদের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্ক দেখা দিতে পারে। এতে কম উপস্থিত হতে পারে কেন্দ্রে ভোটার। এদিকে, নিবাচন ভন্ডুলের চেষ্টায় তৎপর বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। গত ২৮ অক্টোবর ছিলো দলটির মহাসমাবেশ। এ সমাবেশ ঘিরে নৈরাজ্যকর থেকে ছিটকে যায় প্রচলিত ধারার আন্দোলন থেকে। এর পর হরতাল -অবরোধ কমসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন পর গত ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ঢাকায় মানববন্ধন করে তারা অবস্থান থেকে সরেনি তা জানান দেয়। এর আগে ৮ ডিসেম্বর হেফাজত খোলস ছেড়ে বাইরে এসে ২৯ ডিসেম্বর সমাবেশের ডাক দিয়েছে। এতে বিচলিত ইসি। পাশাপাশি নড়েচড়ে বসে কমিশন। কারণ ভোটের দিন ঘনিয়ে আসছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে নিরুৎসাহিত হতে পারেন ভোটাররা। বিএনপি নিবাচনে না থাকায় ভোটারের বড় একটি অংশ নিষ্ক্রিয়। এর পর আন্দোলন চলতে থাকলে আরও নিরুৎসাহিত হবেন সাধারণ ভোটাররা। ফলে ভোট উৎসবে ভাটা পড়তে পারে। গত ১৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা হয়। আগামী ১৭ তারিখ প্রাথিতা প্রত্যাহার এবং ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ থেকে প্রচারণা শুরু হবে। ভোট ৭ জানুয়ারী। এ নিবাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পাটিসহ ২৯টি রাজনতৈকি দল অংশ নিচ্ছে। বিএনপি ইসলামী আন্দোলনসহ ১৫টি রাজনতৈকি দল এ নর্বিাচনে অংশ নেয়নি। এসব দল বিভিন্ন ধরনরে র্কমসূচি দিয়ে আসছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল হলেও দলটি বিএনপির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন কমসূচি পালন করে আসছে। এগুলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে বাধা বলে মনে করছে কমিশন। তাই জন-নিরাপত্তা বিভাগে চিঠি দিয়ে সভা-সমাবেশ বন্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠাচ্ছে কমিশন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির রাজধানী কেন্দ্রীক একনেতা বলেন, এই চিঠি তাদের অবস্থান কমসূচি থেকে হটাতে পারেব না। আর চিঠির উদ্দেশ্য ইসি ও সরকারের চাওয়ার ফসল।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com