মধ্যবিত্তকে এতো ভাবতে নেই
রক্তে ভেজা ব্যাগ থেকে বের হলো
আলু, পটল, কাঁচামরিচ
আর এর সাথে বাজারের এক ফর্দ।
মধ্যবিত্ত লোকের বাজারের ব্যাগে
এসব ছাড়া কিইবা থাকবে?
আমার মতো আর কিছু লোক
এক্সিডেন্টে পড়ে থাকা লোকটার
আশে পাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে
কেই ছবি তুলছে, কেউ ভিডিও
লাইভেও গেছে কেউ কেউ।
কিন্তু একটা রিক্সা বা অটো ডেকে
হাসপাতালে নেয়ার কথা
কেউ বলছে না।
‘এসবে বড্ড ঝামেলা
বুঝলেন ভাই সাহেব
থানা পুলিশও হতে পারে’
আমার পাশে দাঁড়ানো
এক অতি বিজ্ঞ জন
হাত নেড়ে নেড়ে বলছিলেন।
আমি চুপ করে শুনলাম
আমিও এক মধ্যবিত্ত
নিত্য টানাপোড়নে সংসার চলে
মাসের বিশ তারিখের পরে
কড়ে আঙ্গুল গুণে গুণে
সংসার চালাই।
বিশ টাকার শাকের আঁটি
দর কষাকষি করে আঠার টাকায়
কিনতে পারলে ভাবি যে
দুই টাকা লাভ হলো।
রিক্সা চড়ি না সহজে
যদিও বা চড়ি
দরদাম করতেই
আধা ঘন্টা চলে যায়।
সেই আমার কী
ভূতে ধরেছে যে
কোথাকার কোন লোককে নিয়ে
হাসপাতালে দৌড়াবো!
আবার থানা পুলিশ হলে
বাবা গো এসব ঝক্কি সামলাবে কে!!
কর্মক্লান্ত আমি বাসায় ফিরি
অসহ্য গরমে গায়ের জামা ভিজে জবজবে
দরজায় টোকা দিতেই
মেয়েটা দৌড়ে আসে
– ‘বাবা এসেছো?’
পানির গ্লাস আর তোয়ালে হাতে
পাশে দাঁড়ায় প্রিয়তমা পত্নী।
ক্ষণিকের মধ্যে মনে হয়-
ঐ যে লোকটা ঘরে ফিরলো না,
ওর স্ত্রী, সন্তান তারা তো অপেক্ষায় আছে
যদি সে আর কোন দিন না ফেরে?
যদি আমি এভাবে কোন দিন না ফিরি?
আমি আর ভাবি না
ভাবতে চাই না
মধ্যবিত্তকে এতো ভাবতে নেই!