এফএনএস: মাঙ্কিপক্স নিয়ে এখনও আমাদের দেশের মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে এর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি ও সচেতনতার পরামর্শ ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের। গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ডা. মিলন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বক্তারা মাঙ্কিপক্সের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শফিকুল আলম চৌধুরী, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক, ঢামেক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. দেবেশ চন্দ্র তালকদার, বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসক নার্সসহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা বলেন, আমাদের এখনই পেনিক (আতঙ্ক) হওয়ার দরকার নেই। কিছু দেশের মানুষের শরীরে এটি শনাক্ত হলেও আমাদের দেশে এটি এখনও আসেনি। তবে আমাদের মন্ত্রণালায়সহ স্বাস্থ্য সেক্টরগুলো প্রস্তুত রয়েছে। আমাদের আইইডিসিআরও প্রস্তুত রয়েছে। সেখানেও পিসিআর টেস্ট করা যাবে। তিনি বলেন, আমাদের সচেতন থাকতে হবে। আর টেস্টের মাধ্যমে কারোর শরীরে এটি শনাক্ত হলে চিকিৎসার পাশাপাশি ৫ থেকে ২১দিনে কোয়ারাইন্টাইন বা আইসোলেশনে থাকতে হবে। মাঙ্কিপক্সের জন্য আমাদের আলাদা করে এখনও কোনো গাইড লাইন দেওয়া হয়নি। তবে বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন আছে, আমরা তা ফলো করতে পারি। তিনি বলেন, আমরা যারা ছোটবেলাতে স্মল পক্সের টিকা নিয়েছি তারা খুশি হবার কারণ নেই। নতুন এই ভাইরাসে আমরাও আক্রান্ত হতে পারি। গর্ভবতী নারী, ছোট শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তিদের আরো সতর্কভাবে রাখতে হবে। অধ্যাপক ডা. দেবেশ চন্দ্র তালুকদার বলেন, মাঙ্কিপক্স নিয়ে আমাদের দেশে আজকে এটি ৩য় সেমিনার। আমরা এখনও জানি না এটি আমাদের দেশে এলে কতটা ভয়াবহতা নিয়ে আসবে। তবে আমরা কোভিড ১৯, চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গুর মোকাবিলা করেছি। তবে তা থেকে আমরা ওভারকাম করেছি। মাঙ্কিপক্সও যেই ফর্মেই বা ভেরিয়েশনেই আসুক আমরা এর মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত আছি। হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, আজকে এই সভার উদ্যেশ্য সচেতনতা তৈরি করা। হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আউট ডোর, মেডিসিন বা অন্য কোনো বিভাগে এমন লক্ষণ নিয়ে কোনো রোগী এলে আমরা যেন সচেতন থাকি, যাতে সঙ্গে সঙ্গে সেটি শনাক্ত করতে পারি। পরে ওই রোগীকে যেন অন্য কোথাও গিয়ে এটি শনাক্ত করতে না হয়। হজের পর হাজিরা দেশে ফিরলে তাদেরকেও টেস্ট করাতে হবে। আবার আসন্ন ঈদেও বর্ডার দিয়ে বিভিন্ন গবাদি পশু আমাদের দেশে আসবে। সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোনো পশুর মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে না পড়ে। সভার বক্তারা মাঙ্কিপক্সের সক্রামণের ধরন, মাধ্যম সম্পর্কে আলোচনা করেন। ঢাকা মেডিকেলেও পিসিআর রয়েছে। সেখানেও প্রয়োজনীয় সামাগ্রী সরবাহর করলে এই টেস্ট করানো সম্ভব বলে জানান তারা। এই ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়তে হয় নবজাতক ও ছোটছোট শিশুদের। সাধারণ সাস্থ্য সুরক্ষার মতো সবাইকে মাস্ক পড়ে থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এ ছাড়া সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করারও পরামর্শ তাদের।