ডিপিএলের ম্যাচ চলাকালীন ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকের পর থেকে হাসপাতালে ভর্তি আছেন তামিম ইকবাল। তবে হার্টে রিং পরানোর পর থেকে ধীরে ধীরে সেরে উঠছেন তামিম। বর্তমানে খুবই ভালো আছেন তামিম, জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তামিমের হার্টে রিং পরানো হয়েছিল সাভারের কেপিজে হাসপাতালে। পরে ২৬ মার্চ সেখান থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে তামিমকে। গত বৃহস্পতিবার সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তামিমের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বেশ ভালো আছেন তামিম ইকবাল। সংবাদ সম্মেলনে এভারকেয়ার হাসপাতালের গ্রুপ মেডিক্যাল ডিরেক্টর আরিফ মাহমুদ বলেছেন, ‘তামিম খুবই ভালো আছেন। খাওয়াদাওয়া করছেন, সবার সঙ্গে কথা বলছেন। আজকে সিসিইউ থেকে রুমে চলে যাবেন। এরপর এক বা দুই দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তারপর তিনি বাসায় যেতে পারবেন।’ হার্ট অ্যাটাকের পর থেকেই সমর্থকদের মনে প্রশ্ন ছিল, তামিম কি আর খেলায় ফিরতে পারবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে এভারকেয়ার হাসপাতালের কার্ডিওলোজি বিভাগের সিনিয়র কনসাল্টেন্ট প্রফেসর ডাঃ শাহাবুদ্দিন তালুকদার জানিয়েছেন, ‘কিছুক্ষণ আগে আমরা ইকোকার্ডিওগ্রাফ করেছি। হার্টের মুভমেন্ট সামান্য কমেছে। অন্যান্য সবকিছু যেমন আছে, তিনি খুব ভালো জীবনযাপন করতে পারবেন। ক্রিকেটে তিনি ফিরবেন কি ফিরবেন না, সেটা ৩—৪ মাস পর আমরা কার্ডিয়াক টিম ও ফিজিও বসে, তামিমের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে বলতে পারব।’ এছাড়া তামিমের জীবনযাপনের ধরনে পরিবর্তন আনার পরামর্শ দিয়ে শাহাবুদ্দিন আরও বলেছেন, ‘এমন হার্ট অ্যাটাকের পর এসব রোগীদের খুবই সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তাদের এটা হওয়ার প্রবণতা আবার থাকতে পারে। ব্লক না হলেও হতে পারে। তাই ওনাকে অ্যাসেস করতে হবে, নিয়মিত ফলোআপে থাকতে হবে। লাইফস্টাইল বদলাতে হবে, মোটিভেশন করতে হবে। ডায়েট, ডিসিপ্লিন ও ড্রাগস্তÑমিমের টিম ও তামিমের পরিবার এবং তামিমকে নিজেরও আমাদের সঙ্গে কো—অপারেট করতে হবে।’ পাশে ছিলেন আরেক চিকিৎসক আরিফ মাহমুদ। অল্প বয়সে এমন হার্ট অ্যাটাক তামিম মানতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন আরিফ। সে কারণে তামিমের জন্য একজন মনোবিদও রাখা হয়েছে জানান তিনি। আরিফ বলেছেন, ‘তামিমের যেটা হলো, ও এটাকে (হার্ট অ্যাটাক) নিতে পারছে না। সাইকোলজিক্যালি মানতে পারছে না। এটা হবে, সে কল্পনা করতে পারেনি। তবে এটার কিন্তু অনেক ইতিহাস আছে। অনেক খেলোয়াড় মাঠে খেলার সময় মারা গেছে, অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছে। মানসিক অবস্থার জন্য আমরা একজন কাউন্সিলর সম্পৃক্ত করেছি। এটার সঙ্গে কীভাবে মানিয়ে নেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে (কাউন্সিলর) ওর জিজ্ঞাসাগুলো শুনবে, ওর প্যানিক শুনবে। তারপর সেভাবে ওই কাউন্সিলর নির্দেশনা দেবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই বয়সে হার্ট অ্যাটাক হবে, সে এটা কীভাবে মানবে! মাত্র ৩৬ বছর বয়স। মেনে নেওয়া খুব কঠিন। তবে মানিয়ে নিতে হবে। এজন্যই আমরা কাউন্সিলিং শুরু করেছি। আমরাও কার্ডিয়াক কাউন্সিল করছি, পুনর্বাসন চলছে। আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।’ ২৪ মার্চ সাভারে ডিপিএলের ম্যাচ চলাকালে বুকে ব্যথা অনুভব করেছিলেন তামিম। পরে করেন হার্ট অ্যাটাকও। সিপিআর এবং ডিসি শক দেওয়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে তামিমের হার্টে রিং পরানো হয়। এরপর সাভারের কেপিজে হাসপাতালের সিসিইউতে ছিলেন তামিম। ২৬ মার্চ সাভার থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে তামিম ইকবালকে। বর্তমানে সেখানেই আছেন তিনি।