দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সাথে হামাসের আলোচনা চলছে। কাতার ও মিশরের মধ্যাস্থতায় চলমান আলোচনা অগ্রগতিতে পৌছাতে চলেছে বলে জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা। একদিকে হামাসের সাথে আলোচনা চলছে অন্যদিকে দখলদার বাহিনী গাজা উপত্যকায় একের পর এক বিমান হামলা ও স্থল অভিযান পরিচালনা করে ফিলিস্তিনি নিধন যজ্ঞে মেতে উঠেছে। গতকাল ও উত্তর ও মধ্যগাজায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনী নিষ্ঠূরতা দেখিয়েছে। ইসরাইলের সমর্থনকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন দশ দেশের জোট লোহিতও ভু-মধ্যসাগরে হুতিদের নির্মূল ও নিয়ন্ত্রনের লক্ষে অভিযান পরিচালনা করলেও ইরান সমর্থিত হুতিদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট কোন অবস্থাতেই নির্মূল বা নিয়ন্ত্রন করতে পারছে না। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা জানিয়েছেন হুতিদের নির্মূল ও নিয়ন্ত্রনের পরিবর্তে প্রতিনিয়ত সাগরে ইসরাইল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেন্দ্রীক জাহাজ ও উল্লেখিত দেশ সংশ্লিস্ট জাহাজগুলোতে হুতিরা বীর বিক্রমে হামলা পরিচালনা করছে। হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে অবস্থানরত মার্কিন রনতরিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। হুতিযোদ্ধাদের মুখপাত্র ইয়াহিয়া জানিয়েছে সোমবার তারা লোহিতসাগরে ও ভারত মহাসাগরে অবস্থানকরা দুটি মার্কিন রনতরিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। হুতি মুখপাত্র আরও নিশ্চিত করে বলেন, তারা যে দুটি রনতরিতে হামলা চালিয়েছে তার নাম সহ ক্লোডেম এবং এমএমসি ওরিয়ন। হামলায় আক্রান্ত জাহাজ দুটির তাৎক্ষনিক ক্ষয়ক্ষতি জানা সম্ভব হইনি। দুটি মার্কিন রনতরিতে হামলার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ হতে তাৎক্ষনিক ভাবে কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া জানানো হইনি। এদিকে কাতারে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে আলোচনা রত পক্ষগুলো উভয় পক্ষের ইতিবাচক মনোভাবের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও বলা হয়েছে বা হচ্ছে হামাস যোদ্ধারা যুদ্ধ বিরতি ও পণ বন্দী মুক্তির বিষয়ে দুটি শর্তে অনঢ় আর সেই শর্ত দু’টি হলো গাজা হতে ইসরাইলি সেনাদেরকে অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে এবং গাজায় স্থায়ী যুদ্ধ বিরতি কার্যকর করতে হবে। উল্লেখ্য ইসরাইল গত সাতমাস যাবৎ গাজায় প্রতিমুহুর্তে হামলা, হামাসের স্থাপনায় বিমান হামলা সহ সুড়ঙ্গের অভ্যন্তরে হামলা ও অনুসন্ধান পরিচালনা করেও দখলদার ইসরাইলি বাহিনী যেমন হামাসের শক্তি খর্ব বা ধ্বংস করতে পারেনি অনুরুপ ভাবে পন বন্দীদেরকে উদ্ধার করতে পারেনি। হামাস যোদ্ধারা মাঝে মাঝে পন বন্দীদের ভিডিও প্রকাশ করে বলেছে। চলতি সপ্তাহে দখলদার বাহিনীর আটক দুই পন বন্দীর ভিডিও প্রকাশ করার মাধ্যমে হামাস যোদ্ধারা দখলদার ইসরাইলি বাহিনীকে জানান দিলো যে হামাসের সক্ষমতা, শক্তি আর সামর্থ সামান্যতম খর্ব করতে পারেনি আধুনিক বিশ্বের মানবতা বিরোধী রাষ্ট্র ইসরাইল, এদিকে গতকাল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ব বিদ্যালয়গুলোতে মানবতা হত্যাকারী ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে শিক্ষার্থীরা। পশ্চিমা মিডিয়া এএফপি ও রয়টার্স জানিয়েছে ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ উত্তাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব বিদ্যালয়গুলো। আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সপ্তাহব্যাপী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের গ্রেফতারের সংখ্যা নয় শত ছাড়িয়ে গেছে। একাধিক বিশ্ব বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব স্থগিত করেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। গতকালও ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিব সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহরে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সরকারের পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ হয়েছে। লাখ লাখ ইসরাইলি হামাসের হাতে পন বন্দী ইসরাইলিদেরকে মুক্ত না করার ব্যর্থতা তোলে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীূর বিরুদ্ধে। এদিকে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী গাজার অন্যতম বৃহত্তম শরনার্থী শিবির নুসিরত আশ্রয় শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি সেনারা উক্ত হামলা পরিচালনা করে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা তিন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। গতকাল ইসরাইলি সেনারা খান ইউনিস রাফা শহরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা কালে হামাস সদস্যরা প্রতিরোধ হামলা পরিচালনা করে এ সময় কয়েকজন ইসরাইলি সেনা হতাহতের শিকার হয়। গাজায় গত মাসের অধিক সময় যাবৎ ইসরাইলি হত্যাকান্ড জাতিসংঘ বারবার হামলা ও হত্যাবন্ধের আহবান জানানোর পাশাপাশি নিন্দা জানিয়ে আসছে। বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলোও ইসরাইলের অমানবিকতা ও নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকায় নেমেছে। দৃশ্যতঃ ইসরাইলি আধুনিকও সভ্য পৃথিবী হতে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। দখলদার ইসরাইলি বাহিনী নিরীহ ও নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদেরকে হত্যাকরেই কেবল হিংস্রতা দেখাচ্ছে তা নয় তারা ফিলিস্তিনিদেরকে নির্বিচারে গণগ্রেফতার ও তাদের অর্থ সম্পদ, লুটপাট করছে। গাজায় বর্তমান সময়ে হত্যা আতঙ্কের পাশাপাশি না খেয়ে মৃত্যু শঙ্কা অনেকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে।