রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
অর্থ পাচার রোধে দ্বৈত নাগরিকত্বধারী সরকারি চাকরিজীবীদের সন্ধান চলছে আড়াই লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে একটি পরিবার ও তাদের সহযোগীরা: গভর্নর মার্চে ৫৮৭ সড়ক দুর্ঘটনায় ৬০৪ মৃত্যু এক তৃতীয়াংশই মোটরসাইকেলে ঘোষণাপত্র পাঠ ও মোনাজাতের মাধ্যমে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি পালিত বাগেরহাটে ২৪ কেজি হরিণের মাংস জব্দ মহাকাশ প্রযুক্তিতে সহযোগিতা বাংলাদেশ ও তুরস্কের জন্য লাভজনক হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু রাশিয়া—ক্রোয়েশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরলেন সেনাপ্রধান বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ ও বিচারসেবা প্রদানে দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় বিষয়ক সেমিনার পারুলিয়ার চারকুনিতে অগ্নিকাণ্ড \ জমায়াত আমীরের পরিদর্শন ও আর্থিক সহায়তা প্রদান

মার্চে ৫৮৭ সড়ক দুর্ঘটনায় ৬০৪ মৃত্যু এক তৃতীয়াংশই মোটরসাইকেলে

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫

এফএনএস: বিদায়ী মার্চ মাসে দেশে ৫৮৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬০৪ জন। অন্তত ১ হাজার ২৩১ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের এক তৃতীয়াংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হন। নিহতদের মধ্যে ৮৯ জন নারী, শিশু ৯৭ জন। গতকাল শনিবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান সই করা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ মাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হন ২৩৩ জন, যা মোট প্রাণহানির ৩৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। পথচারী নিহত হয়েছেন ১০৯ জন (১৮ দশমিক ৪ শতাংশ) এবং যানবাহনের চালক ও সহকারী ৯৮ জন (১৬ দশমিক ২২ শতাংশ)। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্চে ছয়টি নৌ দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ১৪ জন। পাশাপাশি ১৬টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং চার জন আহত হন। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২৫৮টি (৪৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ) হয়েছে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে ১৫৩টি (২৬ দশমিক ৬ শতাংশ) এবং পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দিয়ে ঘটেছে ১১৩টি (১৯ দশমিক ২৫ শতাংশ) দুর্ঘটনা। আর সময়ের বিচারে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে সকালে ২৬ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং বিকালে ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে মোটরসাইকেল আরোহীদের মধ্যে। এর সংখ্যা ২৩৩ জন। এরপর থ্রি—হুইলার যাত্রী ১১৯ জন, ট্রাক—পিকআপ—ট্রলি ইত্যাদির আরোহী ৫৬ জন, বাসযাত্রী ৩২ জন, প্রাইভেটকার—মাইক্রোবাস—জিপ আরোহী ১৭ জন, স্থানীয় যানবাহনের যাত্রী ২৭ জন এবং বাইসাইকেল বা রিকশা আরোহী ১১ জন। তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় মহাসড়কে ২২৮টি (৩৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ), আঞ্চলিক সড়কে ২৫৬টি (৪৩ দশমিক ৬১ শতাংশ), গ্রামীণ সড়কে ৭২টি এবং শহরের সড়কে ৩১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। দেখা গেছে, ১৮২টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৮৪ জন। আর সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে কম। সেখানে ২৪টি দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত হয়েছেন। আর একক জেলা হিসেবে বগুড়ায় সবচেয়ে বেশি নিহত হন ৩২ জন। ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৮২টি দুর্ঘটনায় ১৮৪ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২৪টি দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত হন। একক জেলা হিসেবে বগুড়ায় ২৭টি দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম নেত্রকোনা জেলায়। এই জেলায় কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি ঘটেনি। এছাড়া রাজধানীতে ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত এবং ৫৩ জন আহত হয়েছেন। যেসব কারণে ঘটেছে দুর্ঘটনা: প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার ১০টি প্রধান কারণ উল্লেখ করে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে– ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকের অদক্ষতা ও শারীরিক সমস্যা, ট্রাফিক আইনের অজ্ঞতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও চাঁদাবাজি। এমন অবস্থায় দুর্ঘটনা রোধে ১০ দফা সুপারিশ দিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে রয়েছে, দক্ষ চালক তৈরি, চালকের কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি, ট্রাফিক আইনের কঠোর প্রয়োগ, মহাসড়কে স্বল্পগতির যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং রেল ও নৌপথ সংস্কারের কথা। প্রতিবেদন বলছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৫৯৬টি দুর্ঘটনায় ৫৭৮ জন নিহত হয়েছিলেন। প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিলেন ২০ দশমিক ৬৪ জন। মার্চ মাসে প্রতিদিন গড়ে নিহত হন ১৯ দশমিক ৪৮ জন। এই হিসেবে প্রাণহানি কমেছে ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। তবে প্রাণহানি কমার এই সূচক সড়ক নিরাপত্তার কোনও টেকসই উন্নতি নির্দেশ করছে না। অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে অতিরিক্ত গতির কারণে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। এই গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারী এবং চালকদের মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ দরকার। যানবাহনের বেপরোয়া গতি এবং পথচারীদের অসচেতনতার কারণে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে। এ জন্য সরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জীবনমুখি সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন মনে করে, পেশাগত সুযোগ—সুবিধা বিশেষ করে, নিয়োগপত্র, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকায় যানবাহনের অধিকাংশ চালক শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ। তারা সবসময় অস্বাভাবিক আচরণ করেন এবং বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালান। ফলে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হন। তাই সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে হলে পরিবহন শ্রমিকদের পেশাগত সুযোগ—সুবিধা এবং সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com