এফএনএস: সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত জায়গায় তাকে দাফন করা হয়। এর আগে বাদ জুমা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মাহবুব তালুকদারের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে মাহবুব তালুকদারকে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। মাহবুব তালুকদারের জানাজায় অংশ নেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। উপস্থিত ছিলেন মাহবুব তালুকদারের জামাতা শোভন মাহমুদসহ আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্খী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। জানাজা শেষে মাহবুব তালুকদারের মরদেহ বারিধারার বাসায় কিছুক্ষণ রাখা হয়। পরে বিকেলে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়। গত ২৪ আগস্ট রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাবেক নির্বাচন কমিশনার। শুধু নির্বাচন কমিশনার বা আমলা হিসেবেই নয়, লেখক ও কবি হিসেবেও তার খ্যাতি ছিল বেশ। উপন্যাস, গল্পগ্রন্থ, কাব্যগ্রন্থ, শিশুসাহিত্য, ছড়ার বই ও ভ্রমণকাহিনি মিলিয়ে মাহবুব তালুকদারের বইয়ের সংখ্যা ৪৮। ২০১২ সালে তিনি লাভ করেন বাংলা একাডেমি পুরষ্কার। মাহবুব তালুকদারের রচিত উলেখযোগ্য কয়েকটি বই হলো ‘বঙ্গভবনে পাঁচ বছর’, ‘আমলার আমলনামা’, ‘বধ্যভ‚মি’, ‘চার রাজাকার’, ‘সুপ্রভাত আমেরিকা’, ‘কবিতাসমগ্র’, ইত্যাদি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। তখন ভারতে গিয়ে প্রবাসী সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন মাহবুব তালুকদার। ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী তাকে উপসচিবের পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির স্পেশাল অফিসার নিযুক্ত করেন। রাষ্ট্রপতি মুহম্মদ উলাহর জনসংযোগ কর্মকর্তাও ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর মাহবুব তালুকদার তার সহকারী প্রেস সচিবের (উপসচিব) দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তাকে তদানীন্তন ক্যাডার সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা পরে বিসিএস প্রশাসন হিসেবে রূপান্তরিত হয়। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের পর মাহবুব তালুকদারকে ওএসডি করা হয়। বঙ্গবন্ধুর কাছাকাছি থেকে কাজ করাই ছিল তার অপরাধ। মাহবুব তালুকদার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয়ে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে যোগ দেন। ২০১৭ সালের ফেব্র“য়ারিতে নির্বাচন কমিশনারের হিসেবে দায়িত্ব পান মাহবুব তালুকদার। চলতি বছরের ফেব্র“য়ারিতে কমিশনার হিসেবে তার মেয়াদ শেষ হয়। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দেশেজুড়ে বেশ প্রশংসিত হন মাহবুব তালুকদার।