এফএনএস : পবিত্র মাহে রমজানের আজ ষোঢ়শ দিবস। মাগফিরাত বা ক্ষমার দশকের ষষ্ঠ দিন। মহান আলাহর ক্ষমা লাভ করতে পারলেই বান্দা জান্নাত প্রাপ্ত হবে। তাই আজ আমরা আলোচনা করবো সিয়াম বা রোজা পালন কিভাবে একজন বান্দাকে জান্নাত পাওয়ার জন্য যোগ্য করে তোলে। মহান আলাহ পবিত্র কুরআন শরীফে বলেছেন, মানুষ যাতে পরহেজদারী অর্জন করতে পারে সে জন্য রোজা ফরজ করা হয়েছে। অর্থাৎ রোজার মাধ্যমে মানুষ তাকওয়া অর্জন করতে পার্েব এবং তাকওয়া হলো জান্নাত লাভের মাধ্যম। সুরা আহযাবের ৩৫ আয়াতে আলাহ ঘোষণা করেছেন , নিশ্চয়ই মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদি পুরুষ ও সত্যবাদি নারী, সবরকারী (ধের্যশীল) পুরুষ ও সবরকারী নারী , বিনীত পুরুষ ও বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, রোজাদার পুরুুষ ও রোজাদার নারী, লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী নারী, লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী পুরুষ এবং আলাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও অধিক স্মরণকারী নারীদের জন্য আলাহ তায়ালা মাগফিরাত ও বিরাট পুরস্কার রেখেছেন। এগুলোই হচ্ছে জান্নাত লাভের জন্য মহান আলাহ নির্ধারিত গুণাবলী। মহানবী হজরত মুহাম্মাদ সালালাহু আলাইহি ওয়াসালামও বিভিন্ন সময় জান্নাত লাভের যোগ্যতা সম্পর্কে বলেছেন। সকল হাদীস গ্রন্থেই এই বর্ণনা স্থান পেয়েছে। রোজা রাখবে, নিজের সম্ভ্রম হেফাজত করবে এবং যে স্ত্রী লোক নিজের স্বামীকে মান্য করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তিরমিজি শরীফে রয়েছে, যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েও তাঁর গুনাহ মাফ করিয়ে নিতে পারলো না সে দুর্ভাগা অর্থাৎ সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না – হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালামের এমন প্রস্তাবে রসলুুলাহ সালালাহু আলাইহিস সালাম আমীন বলে সায় দিয়েছেন। ইবনে হিকাম গ্রন্থে রয়েছে, এক ব্যক্তি রসুলুলাহ (সা:)কে জিজ্ঞেস করলেন, আমি আলাহর ইবাদত করি এবং হজরত মুসা (আ:) এর প্রতি বিশ্বাস পোষণ করি। নামাজ আদায় করি, যাকাত দিই এবং রমজান মাসে রোজা রাখি। তাহলে আমি কার সঙ্গী হব? আমার প্রতিদান কি হবে? মহানবী (সা:) বললেন, তুমি নবী রসুল ও শহীদদের সঙ্গী হবে অর্থাৎ তুমি জান্নাতে প্রবেশ করবে। সুনানে তিরমিজী শরীফের কিতাবুল ঈমান গ্রন্থে রয়েছে, আলাহর প্রতি ঈমান রাখা, তার সাথে কাউকে শরীক না করা, তার রসুলের প্রতি ঈমান আনা, দিনে পাঁচ বার নামাজ আদায় করা, যাকাত আদায় করা, রমজান মাসে রোজা পালন করা জান্নাতে প্রবেশের পূর্বশর্ত। সুনানে নাসায়ী গ্রন্থে রয়েছে, হজরত আবু উমামা রসুলের কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, আমি কি কাজ করলে জান্নাতে যেতে পারবো ? আলাহর রসুল জবাব দিলেন, তুমি রোজা রাখ এর মতো অন্য কিছু নাই। সহী বুখারী শরিফের কিতাবুস সিয়ামে বলা হয়েছে, রমজান মাসে জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানকে বেঁধে রাখা হয়। অপর এক হাদীসে রয়েছে, জান্নাতে রাইয়ান নামে একটি দরজা রয়েছে। শুধুমাত্র রোজাদাররা এই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। যারা রোজা পালন করেনি তাদের জন্য এ দরজা খোলা হবে না। আলাহ আমাদেরকে রাইয়ান দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের যোগ্যতা অর্জনের তওফীক দিন।