এফএনএস : পবিত্র মাহে রমজানের অষ্টদশ দিবস আজ। রমজান মাসের দ্বিতীয় দশক অর্থাৎ মাগফিরাতের দিনগুলো চলে যাচ্ছে আমাদের কাছ থেকে। মাহে রমজানের সিয়াম সাধনার ফজিলত বা কল্যাণ অপরিসীম-অপরিমেয়। আলাহর রসুল (সাঃ) বলেছেন, মানুষ যদি জানতো মাহে রমজান কত বড় নিয়ামত,তাহলে তারা সারা বছর রমজান মাস থাকার আকাক্সক্ষা করতো। তিনি আরও বলেছেন, রমজানের রোজা ও প্রতি মাসে তিনটি করে রোজা অন্তরের ময়লা – কালিমা দূর করে দেয়। তাই রোজা ভঙ্গের অনুমতি থাকা সত্তে¡ও সাহাবায়ে কেরাম জিহাদের সফরেও রোজা ত্যাগ করতেন না। এমন কি মুসলিম শরীফের বর্ণনা অনুযায়ী কোন কোন সফরে সাহাবায়ে কেরাম দুর্বল হয়ে বেহুস হয়ে পড়েছেন। অবশ্য মহানবী (সাঃ) অধিক কষ্টের সফরে রোজা না রাখাকে উত্তম বলেছেন। হযরত সালমান ফারসী রাদিআলাহ আনহু বলেছেন, নবী করীম (সাঃ) শাবান মাসের শেষ দিনে উপদেশ দিয়ে বলেছেন, তোমাদের মাথার উপর এমন একটি মর্যাদাশীল মোবারক মাস ছায়া স্বরুপ আসছে, যার মধ্যে লাইলাতুল কদর নামে একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। আলাহ তায়ালা সেই রাত্রে ইবাদত বন্দেগি করাকে তোমাদের জন্য অধিক সওয়াবের কাজ হিসেবে দিয়েছেন। তাছাড়া যে ব্যক্তি এই মাসে একটি নফল ইবাদতের মাধ্যমে আলাহর নৈকট্য লাভের আকাক্সক্ষা করবে সে অন্য সময়ের একটি ফরজ আদায়ের সওয়াব পাবে। আর এ মাসে একটি ফরজ আদায়ের সওয়াব অন্য সময়ের সত্তর গুণ হবে। মাহে রমজান সবরের মাস , ধৈর্য্যরে মাস। আর সবরের প্রতিদান হচ্ছে জান্নাত। মাহে রমজান হচ্ছে মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশের মাস। এমাসে বেশি বেশি দান খয়রাত, জাকাত সদকা প্রদানের জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে। তবে জাকাত সদকার অর্থ বা সম্পদ অবশ্যই হালাল উৎসের রোজগার হতে হবে। এই মাসে চারটি কাজ আলাহর রসুল (সাঃ) বেশি বেশি করতে বলেছেন। প্রথম দুটি কাজ হচ্ছে আলাহর সন্তুষ্টির জন্য। এগুলো হচ্ছে অধিক পরিমাণে কালেমা তাইয়েবা ও ইস্তেগফার পাঠ। দ্বিতীয় দুটি কাজ হচ্ছে বেশি বেশি জান্নাত কামনা ও জাহান্নাম থেকে পানাহ চাওয়া। এই মাসে দরিদ্রকে আহার করানো অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। রসুল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে ইফতার করাবে ,সে তাঁর সমান সওয়াব পাবে কিন্তু রোজাদারের সওয়াবের কোন কমতি করা হবেনা। যে ব্যক্তি এমাসে কোন রোজাদারকে পান করাবে,আলাহপাক কিয়ামতের দিন তাকে হাউজে কাউসার থেকে পান করাবেন। এরপর জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত তার আর পিপাসা লাগবেনা। মাহে রমজান হচ্ছে মর্যাদা ও কল্যাণময়তার দিক থেকে শ্রেষ্ঠ মাস। মহান আলাহ এই মাসের সকল কল্যাণ আমাদের দান করুন!