শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৭ অপরাহ্ন

মাহে রমজানের সওগাত

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০২২

এফএনএস : মাহে রমজানের আজ তৃতীয় দিবস। আল­াহর রহমতের অমিয় ধারা বর্ষণের তৃতীয় দিবস। সিয়াম সাধনা বা রোজা ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি। কালেমা, নামাজ বা সালাত, রোজা বা সিয়াম, হজ্জ ও যাকাত। এই পাঁচ স্তম্ভের উপর ইসলামের কাঠামো দন্ডায়মান। ইরানী বা ফার্সি ভাষার প্রভাবে আমাদের এই উপমহাদেশে রোজা বলা হলেও এর আরবী প্রতিশব্দ হচ্ছে সাওম। পবিত্র কুরআন শরীফে আল­াহ রাব্বুল আলামিন সাওমই উলে­খ করেছেন। এর অর্থ হচ্ছে কোন কাজ থেকে বিরত থাকা, আÍসংযম, কঠোর সাধনা, অবিরাম চেষ্টা করা ইত্যাদি। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় আল­াহর নৈকট্য লাভের মানসে সাওম বা রোজা পালনের নিয়তে সুবহে সাদেক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার, যৌনাচার, পাপাচার এবং সব ধরনের অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার নাম সিয়াম বা রোজা। সিয়াম বা রোজা পালনের মাধ্যমে মানুষের আধ্যাÍিক উৎকর্ষতা বিকশিত হয়। রোজা একজন মানুষকে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিকভাবে পবিত্র করে। মানুষের আÍশুদ্ধির জন্য সিয়াম অন্যতম হাতিয়ার। ইসলামের একটি মৌলিক ইবাদত হচ্ছে এই সিয়াম সাধনা। মুসলিম মিল­াতের তাকওয়া অর্জনের জন্য মহান আল­াহ রাব্বুল আলামীন রোজাকে ফরজ করে দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনুুল করীমের সুরা বাকারার ১৮৩ থেকে ১৮৭ পর্যন্ত চারটি আয়াতে রোজা সম্পর্কে সরাসরি উলে­খ পাওয়া যায়। তাছাড়া পবিত্র কুরআনের আরো কিছু আয়াতে সিয়াম সম্পর্কে পরোক্ষ নিদের্শনা রয়েছে। সিয়াম বা রোজার অধিকাংশ মাসআলা মাসায়েল মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল­াল­াহু আলাইহি ওয়াসাল­ামের বাণী অর্থাৎ হাদীস থেকে পাওয়া যায়। পৃথিবীতে মানুুষের আদি পিতা হজরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে আজ পর্যন্ত সিয়ামের বিধান চলে আসছে। অবশ্য বিভিন্ন নবী রসুলের সময় সিয়াম বিধানে দিনক্ষণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে। সিয়াম পালন মানুষের স্বভাবসিদ্ধ এক ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় মহান আল­াহর আনুগত্য সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং মানব মন্ডলীর ওপর মুমিন বান্দাদের নেতৃত্ব কায়েম হয়ে যায়। সিয়াম পালনের মাধ্যমে মুমীন ব্যক্তি সত্যের সাক্ষ্য দান করার দায়িত্ব পালন করে। সিয়াম সাধনা মানুষের দৃঢ় ইচ্ছা ও মজবুত সংকল্পের বহিঃপ্রকাশ। সিয়াম পালনের মাধ্যমে আল­াহ রাব্বুল আলমীনের সাথে মানুষের আনুগত্যের বন্ধন স্থাপিত হয়। আর এভাবেই আল­াহ সুবহানাহু তায়ালার দেয়া সীমার মধ্যে তার জীবন যাপন করার অভ্যাস গড়ে উঠে। আল­াহ রাব্বুল ইজ্জত যা কিছু নির্দেশ দিয়েছেন সেগুলো নিছক আখিরাতের জীবনের জন্য নয়। বরং প্রতিটি নির্দেশের পেছনে মানুষের পার্থিব জীবনের বহুমুখী উপকারিতা নিহিত। কিন্তু আল­াহর সাথে সম্পর্ক মুক্ত হলে এই অনুষ্ঠানগুলোর কোন ফললাভ হবে না। মূলতঃ মানুষের জ্ঞান, বুদ্ধি ও চিন্তা শক্তি সীমাবদ্ধ। তাই আল­াহ নির্দেশিত ইবাদতগুলোর মূল উদ্দেশ্য যখন সে অনুভবের চেষ্টা করে এবং সেসবের বাস্তব ফায়দা বুঝতে চেষ্টা করে তখন আল­াহ পাক নিজেই তার জন্য তার জ্ঞান ভান্ডারের দুয়ার অবারিত করে দেন। আর তখনই সে আল­াহর সন্তষ্টি ও রহমত অনুভব করে এবং একই সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মানুষ দুনিয়াবী বিভিন্ন কল্যাণও বুঝতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com