এফএনএস : মাহে রমজানের আজ নবম দিবস। সিয়াম সাধনা বা রোজা পালনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হচ্ছে বাক-সংযম বা কথা কম বলা। ইসলামে মানুষের মুখের কথার গুরুত্ব অনেক বেশি। জিহবা হচ্ছে কথা বলার বাহন বা মাধ্যম। তাই জিহŸাকে সংযত করা জরুরি। বিশেষ করে সিয়াম পালন বা রোজা অবস্থায় জিহŸার সংযম অতীব গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র কুরআন মজিদে আলাহ সুবহানুতায়ালা বলেছেন, কোন কথা উচ্চারণ করার সাথে সাথে অপেক্ষমাণ পর্যবেক্ষক তা রেকর্ড করে থাকেন (সুরা কাফÑ১৮)। অর্থাৎ মানুষের উচ্চারিত সকল শব্দের তদারক করা হয়। এরও হিসেব দিতে হবে। তাই সর্বদা কথা বলার সময় বিবেচনা করতে হবে এবং ভাল কথা ছাড়া খারাপ কথা বলা যাবেনা। পবিত্র কুরআনে অপ্রয়োজনীয় কথা পরিহার করাকে মুমিনের বিশেষ গুণ বলে উলেখ করে আলাহ বলেন, তারাই মুমিন যারা বেহুদা কথা থেকে বিরত থাকে। (সুরা আল মুমিনুনÑ৩)। মহানবী সা. দুই ঠোঁট ও জিহবার হেফাজতকারীকে বেহেশতের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। জিহবা হচ্ছে শয়তানের অন্যতম বড় হাতিয়ার। জিহবার কারণে মানুষ কষ্ট পায়। তাই আলাহর রসুল বলেছেন, সেই ব্যক্তি মুসলমান যার জিহবা ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে। প্রবাদ আছে অন্য সব আঘাতের ঘা শুকিয়ে যায়, কিন্তুু জিহবর আঘাতের ঘা শুকায় না, দগ দগ করে। তাই জিহবার ব্যাপারে সংযম ও সতর্কতা মাহে রমজানের সিয়াম পালনের অন্যতম শিক্ষা। কারণ কথা কম বললে ভুল কম হবে এবং অপরাধ বাড়বে না। তাই রাসুলুলাহ সালালাহু আলাইহিস সালাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আলাহ ও আখিরাতের উপর ঈমান রাখে সে যেন কথা বললে ভাল কথা বলে অন্যথায় চুপ থাকে। তিনি আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ ত্যাগ করলো না তার খানাপিনা বন্ধ রাখাতে আলাহর কোন প্রয়োজন নাই। কেবল খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত থাকার নামই রোজা নয়। রোজা হচ্ছে বেহুদা কথা ও গুনাহর কাজ থেকে বিরত থাকা। আলাহর রসুল রোজাকে জিহŸার অনিষ্ট থেকে বিশুদ্ধ রাখার পদ্ধতিও বাতলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তোমাদের কেউ রোজা রাখলে সে যেন গুনাহ, অজ্ঞতা ও জাহেলিয়াতের কাজ না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় কিংবা ঝগড়া করতে আসে, সে যেন বলে দেয়, আমি রোজা রেখেছি, আমি রোজাদার। হাদীসে বর্ণিত এই পদ্ধতিই জিহŸার অপরাধ থেকে বাঁচার উত্তম উপায়। কেউ রোজাদারকে ঝগড়া ফাঁসাদে জড়াতে চাইলে সে জড়িয়ে যাবেন না, এড়িয়ে যাবে। যে ব্যক্তি জিহবার লাগাম খুলে দেয় তার রোজা কিভাবে হয় ? যে ব্যক্তি মিথ্যা বলে ও কথার মাধ্যমে ধোকা দেয় তার রোজার অর্থ কি দাঁড়ায়। যে ব্যক্তি পরনিন্দা করে, গালি দেয়, অন্যকে কষ্ট দেয় তার রোজার ফলাফল কি হবে ? রোজার উদ্দেশ্য হচ্ছে আদব, শিষ্টাচার ও সংযম শিক্ষা করা ও তার প্রয়োগ করা। তাই রোজাদার সর্বদা ভাল কথা, কুরআন তিলাওয়াত, তাওবা, তাসবিহ ও আলাহর পথে দাওয়াত দানের কাজে ব্যস্ত থাকবে এবং আলাহর রহমতের আদ্রঁতায় ভিজা থাকবে।