দৃষ্টিপাত ডেস্ক \ মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং ৬ দশমিক ৮ মাত্রার পরাঘাতে এ পর্যন্ত অন্তত ১৪৪ জন নিহত হয়েছে এবং ৭৩২ জন আহত হয়েছে। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা নেতা এ তথ্য জানিয়েছেন। ওদিকে, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে নির্মীয়মাণ একটি বহুতল ভবন ভেঙে প্রাথমিকভাবে ৩ জন নিহত এবং ৮১ জন নির্মাণ শ্রমিক ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ার তথ্য জানিয়েছিলেন থাইল্যান্ডের উপ—প্রধানমন্ত্রী। তবে পরে বিবিসি ব্যাংককের মেট্রোপলিটন প্রশাসনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা অন্তত ৭ জন। ওদিকে, উদ্ধারকারীরা ১১৭ জন নিখোঁজ হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন বার্তা সংস্খা রয়টার্সকে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের হিসাবে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের ১৭ দশমিক ২ কিলোমিটার দূরে, মাটির ১০ কিলোমিটার গভীরে। মান্দালয়ে একটি মসজিদ ভেঙে পড়ে প্রাথমিকভাবে ৩ জন নিহত এবং রাজধানী নিপিধোর একটি হাসপাতাল থেকে ২০ জন নিহতের খবর জানা গিয়েছিল। পরে বিবিসি বার্মিজ জানায়, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা নেতা মিন অং হ্লায়িং ভূমিকম্পে শত শত মানুষ হতাহত হওয়ার ওই তথ্য জানান। কোথায় কোথায় কতজন নিহত হয়েছে সে হিসাব দিয়ে হ্লায়িং বলেছেন, নিপিধোয় ৯৬ জন,সাগাইংয়ে ১৮ জন এবং মান্দালয়ে ৩০ জন নিহত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তিনি। আহত যারা হয়েছেন তাদের ১৩২ জনই নিপিধোর এবং ৩০০ জন সাগাইংয়ের বাসিন্দা বলে জানান হ্লাইং। ভূমিকম্প—বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিয়ানমারে গত ২০ বছরের মধ্যে এত তীব্র ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি। মিয়ানমার জান্তা জরুরি অবস্থা জারি করেছে এবং আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য আবেদন করেছে। ওদিকে, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পয়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রাও দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন এবং বিশেষ করে রাজধানী ব্যাংকককে ‘বিপর্যয় এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের রেল চলাচল শুক্রবারের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। রয়টার্স জানায়, ব্যাংককে ধসে পড়া আকাশচুম্বী ৩০ তলা ভবনের ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকাজ চলছে। নিখোঁজদের হন্যে হয়ে খোঁজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা। শুক্রবারের এই ভূমিকম্পের আঁচ লেগেছে চীনের কিছু এলাকায়ও। এনডিটিভি জানায়, চীনের ইউনান প্রদেশে শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়েছে। চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক কেন্দ্র বলেছে, এই ভূকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৯। তবে সেখানে কেউ নিহত হওয়ার খবর এখনও পাওয়া যায়নি। ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকাতে কম্পন অনুভূত হয়েছে। কলকাতায় কোথাও কোথাও মৃদু কম্পন টের পাওয়া গেছে। কম্পন অনুভূত হয়েছে দিল্লি পর্যন্ত। কেঁপেছে বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনামও।