এফএনএস: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি, মর্টারশেল ছোড়ার ঘটনায় সীমান্তের নিকটবর্তী বাংলাদেশি বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া গুলি এরইমধ্যে কয়েক বার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়েছে। এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা মিয়ানমারকে প্রথমে ডেকে বলেছি। এরপর যদি (গুলি) আসে বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামে জানানো হবে। গতকাল শনিবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান ও নিরাপত্তা: ভিশন-২০৪১’ শীর্ষক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সীমান্ত অতিক্রম করে দু-একটি গোলা আমাদের সীমান্তের কাছাকাছি এসে পড়েছে। আমরা প্রতিবাদ করেছি। আমাদের বিজিবি (সীমান্তরক্ষী বাহিনী) তাদের বিজিপির (সীমান্তরক্ষী বাহিনীর) কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মেসেজ দেওয়া হয়েছে, সবকিছু বলা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে সব পর্যায়ে প্রতিবাদ করেছি। আমরা মনে করি শিগগির তারা সংযত হবে। তাদের গোলাগুলি যেন এদিকে না আসে সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য আমরা তাদের বলেছি। মিয়ানমার বারবার একইভাবে গোলা ফেলছে। সেক্ষেত্রে বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামে তোলা হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা তো তাদের (মিয়ানমার) প্রথমে ডেকে বলেছি। এরপর যদি আসে আমরা বিষয়টি জানাবো। দীর্ঘদিন ধরে আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার নিরাপত্তাবাহিনীর মধ্যে তুমুল গুলিবর্ষণ ও সংঘর্ষ চলছে। গত শুক্রবারও ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাইশফাঁড়ি বিজিবি বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত পিলার ৩৬ এর বিপরীতে আনুমানিক তিন কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষ শুরু হয়। উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আনুমানিক ৪০০-৫০০ রাউন্ড ক্ষুদ্রাস্ত্র ফায়ারের শব্দ ও ২০-২৫টি মর্টারশেল ফায়ারের শব্দ শোনা যায়। সন্ধ্যার দিকে ২ নম্বর ওয়ার্ড তমব্র“ ঘোনার পাড়া এলাকায় ক্ষুদ্রাস্ত্রের একটি গুলি এসে পড়ে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ফের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এর আগে গত ২৮ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিক্ষিপ্ত দুটি মর্টারশেলের গোলা একই ইউনিয়নের তুমব্র“ উত্তরপাড়া জামে মসজিদ এলাকায় এসে পড়েছিল। গোলাগুলো বিস্ফোরিত না হওয়ায় তখন কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পরে ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় যুদ্ধবিমান থেকে ফায়ার করা দুটি গোলা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রেজু আমতলী বিজিবি বিওপি আওতাধীন সীমান্ত পিলার ৪০-৪১ এর মাঝামাঝি এলাকায় পতিত হয়। এদিকে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার যে অভিযোগ করেছেন সেগুলো বাস্তবসম্মত কি না, তদন্ত হলেই বোঝা যাবে বলে মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাবুল আক্তার অত্যন্ত চতুর মানুষ। কাজেই সে কখন কী বলে, সেটা তার ব্যাপার। এখানে আমার মন্তব্য নেই। তদন্তের পরই সব চলে আসবে। গতকাল শনিবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাবুল আক্তারের বিষয়টা যেহেতু পিবিআই তদন্ত করছে, তদন্ত শেষ করার আগে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। বাবুল আক্তার যে কথা বলেছেন, সেগুলো বাস্তবসম্মত কি না সেটা তদন্ত হলেই বোঝা যাবে।তিনি বলেন, পিবিআইয়ের ওপর আমাদের ভরসা রয়েছে। পিবিআই যতগুলো অনুসন্ধান করেছে সবগুলোই বাস্তব সম্মত এবং অত্যন্ত সু²ভাবে তারা অনুসন্ধান করেছে। গত ৩০ বছর আগের খুনের মামলারও তারা আসামি চিহ্নিত করেছে এবং আসামি গ্রেপ্তার করেছে। পিবিআই যেটা করবে সেটা ভুল করবে না বলে আমার বিশ্বাস। বাবুল আক্তার যে প্রশ্নগুলো তুলেছেন আমার মনে হয় তদন্তের পর আপনারা সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। যারা তদন্ত করছেন তাদের প্রধানের বিরুদ্ধেই অভিযোগ, সেক্ষেত্রে তদন্তে গাফিলতির আশঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে আমার মন্তব্য নেই। তদন্তের পরেই সব চলে আসবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে থানায় থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের তালিকা করা হচ্ছে, এমন কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা অনেক সময় অনেক কথা বলেন। এগুলো বিএনপির আরেকটা কৌশল।