এফএনএস: গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সময়ের প্রয়োজনে জন—আকাঙ্ক্ষা পূরণে সংবিধান সংশোধন—কিংবা যুগোপযুগি করা রাষ্ট্রের জন্য চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের অর্জিত ও মীমাংসিত বিষয়গুলিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হলে তা আমাদের অগ্রসরমাণ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাকে বাধাগ্রস্ত করবে। এ বিষয়ে আমাদের সবার দায়িত্বশীল হওয়া কর্তব্য। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘গণফোরামের জাতীয় কাউন্সিল—২০২৪ পরবর্তী পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা ও সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি’ সম্পর্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। কামাল হোসেনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সভাপতি পরিষদ সদস্য জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সারা জীবন ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেছি। জনগণের ঐক্যের বিরুদ্ধে তারা (ষড়যন্ত্রকারী) সবসময় ষড়যন্ত্র চালিয়ে যায়। ভালো কাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের আভাস সবসময়ই থাকে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেই এসব মোকাবিলা করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের ঐক্যকে সংহত করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের সব পরিকল্পনা হবে জনগণকে নিয়ে। দুর্নীতি, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।’ লিখিত বক্তব্যে কামাল হোসেন বলেন, ‘বর্তমান বাংলাদেশের চলমান রাজনীতিতে যে অস্থিরতা বিরাজ করছে, তা সমাধানের একমাত্র পথ রাজনৈতিক ঐক্য। এই ঐক্যের ভিত্তি হলো আমাদের জাতীয় চেতনা, যা বাহান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, বাহাত্তরের সংবিধান এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের চেতনা।’ সংবাদ সম্মেলনে দলের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধানের কবর রচনার কথা যারা বলছেন, তারা কী বুঝে বলছেন নাকি না বুঝে? বাহাত্তরের সংবিধান ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সংবিধান। সংবিধান নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারে। এতে সংবিধানের সংকট না, যারা অপব্যবহার করেছে তাদের সংকট। সংবিধান নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এ ধরণের বক্তব্য দিয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধ, রাষ্ট্র সংবিধান নিয়ে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছেন, তাদের এমন বিষয় থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে যদি আমরা জাতীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে না পারি, তাহলে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান বিফলে যাবে।’ এ সময় দলের নবগঠিত কমিটি ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমান। তিনি জানান, মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে সভাপতি এবং ডা. মো. মিজানুর রহমানকে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০ সদস্য বিশিষ্ট সভাপতি পরিষদ ও ১০ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছে দলটি। সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন– গণফোরামের সভাপতি পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট এস এম আলতাফ হোসেন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ কে এম জুগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট সুরাইয়া বেগম, কোষাধ্যক্ষ শাহ নূরুজ্জামান প্রমুখ।