কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি ॥ উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের জন্য ২৬ জুলাই ২০২৩ তাং ১৬৬১/২৩ নং দলিলের মাধ্যমে আশ্রয়ন প্রকল্প ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা সদরে মদিনাবাদ মৌজায় নাসির উদ্দিন এর নিকট থেকে ৪৮ হাজার টাকা প্রতি শতকে ৭২ লক্ষ টাকায় ১৫০ শতক একর জমি ক্রয় করেন। যাহা কৃষি ফসলি জমি এবং নীতিমালা উপেক্ষা করে জেলা প্রশাসক খুলনার নামে রেজিষ্ট্রি কোবলা করা হয়েছে। যার রেজিস্ট্রি খরচ সহ ব্যায় হয়েছে প্রায় ৭৭ লক্ষ টাকা। অথচ বাজার মূল্য ছাড়া প্রায় তিনগুণ মূল্যে ক্রয় করা হয়েছে বলে স্থানীয় অভিজ্ঞমহল প্রশ্ন তুলেছেন। এছাড়া জমি ক্রয় সংক্রান্ত সরকারি নীতিমালা সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উক্ত জমি ক্রয় করেছেন। যাহা কমিটির ৫ সদস্যরা এ বিষয়ে অবগত নয় বলে জানিয়েছেন। অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এই জমি ক্রয়ে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা তসরুপ করেছেন এবং এ ধরনের খবর স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে। সূত্র জানায় কয়রা উপজেলায় বিপুল পরিমাণ খাস জমি থাকা সত্ত্বেও এবং নীতিমালা অনুসারে অকৃষি জমি ক্রয়ের নিয়ম থাকলেও তা না মেনে নির্বাহী অফিসার একক ভাবে অধিকমূল্যে জমি কিনেছেন। যে কারনে জমি ক্রয় এবং জমিতে বালু ভরাট নিয়ে জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার দক্ষিণ মদিনাবাদ গ্রামের কোহিনুর আলম জানান, কয়েক মাস আগে ১৮ হাজার টাকা শতক দরে উল্লেখিত জমির পাশর্^বর্তী একই ধরনের বিলান জমি বিক্রয় হয়েছে। তিনি বলেন, প্রকল্পের ক্রয়কৃত জমি বিলের মাঝখানে সেই হিসাবে ওই জমির প্রকৃত মূল্য শতক প্রতি ১৭ থেকে থেকে সর্বোচ্চ ১৮ হাজারের বেশি হবে না। অপর দিকে উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে খবর নিয়ে জানা গেছে, মদিনাবাদ মৌজায় বিলান জমি প্রতি শতক সরকারি মূল্য ২৬ হাজার টাকা। এদিকে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পূর্ণবাসনের জন্য ২০২১ সালের নীতিমালা অনুসারে জমি ক্রয় সংক্রান্ত ছয় সদস্যের কমিটি দিয়েছেন সরকার এবং কমিটির সদস্যরা হলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, সাব-রেজিষ্ঠার, সংশ্লিষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যান ও সহকারী কমিশনার ভূমি। তবে কমিটির সদস্য উপজেলা কৃষি অফিসার, সহকারি কমিশনার(ভূমি), উপজেলা প্রকৌশলী সহ কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল ইসলাম আবাসন প্রকল্পের জমিক্রয়সহ ফসলি জমি নষ্ট করে বালু ভরাট বিষয়ে অবগত নয়। জমি ক্রয় কমিটির সদস্য উপজেলা কৃষি অফিসার অসীম কুমার দাস বলেন, কৃষি জমি ভরাট করে আশ্রয়ন প্রকল্প করার কোন সুযোগ নেই। আমি ওই কমিটির সদস্য হলেও ফসলি জমি ভরাট করে আশ্রয়ন প্রকল্প করার বিষয়টি আমাকে জানানো হয়নি। কৃষকরা আমাকে জানানোর পর আমি অবগত হই এবং তাৎক্ষণিক নির্বাহী অফিসার স্যার কে বালু উত্তোলন বন্ধের অনুরোধ জানাই। কমিটির সদস্য কয়রা সদর চেয়ারম্যান বাহারুল ইসলাম বলেন, আমি এই কমিটির সদস্য আমি নিজেও জানিনা। কিছুদিন আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার অফিসের পিয়নের মাধ্যমে আমার স্বাক্ষর নিতে আমার বাসায় কিছু কাগজ পাঠায় বিষয়টি আমি মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন তুমি সই করে দাও সকল বিষয় পরে তোমাকে জানাবো। তিনি আরো বলেন, ইউ এন ও এর নিকট আত্মীয় সাবেক ছাত্রদল নেতা কে সাড়ে চার লক্ষ টাকায় মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। তার এই মোটরসাইকেল ক্রয়ের বিষয়ে ইউএন ও এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ওই মোটরসাইকেল আমি কিনে দেইনি জমি মালিক কিনে দিলে আমার করার কিছু নাই। উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো: তারিক উজ-জামান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই আমি এখানে যোগদানের আগে এই জমি ক্রয় করা হয়েছে। এবং অফর সদস্য উপজেলা মোঃ দারুল হুদা এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোমিনুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি কমিটির সকল সদস্যকে জানিয়ে জমিক্রয় সহ জমিতে বালু ভরাট করা হচ্ছে। তবে বিভিন্ন কারনে এ মহুর্তে বালু ভরাট বন্ধ রয়েছে।