এফএনএস: সরকারকে উদ্দেশ করে গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুলাহ চৌধুরী বলেছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তা না হলে আপনাদের অবস্থাও শ্রীলঙ্কার মতো হবে। মেগা প্রজেক্ট না করে আগে জনগণকে বাঁচান। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভোজ্যতেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদে উদ্যোগে এই বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজিত হয়। ডা. জাফরুলাহ বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম কমানো কঠিন কিছু নয়, আগে দুর্নীতি কমান তাহলেই হবে। মেগা প্রজেক্ট না করে আগে জনগণকে বাঁচান। তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু জুন মাসে উদ্বোধন হবে। ওটার নাম নাকি শেখ হাসিনা ব্রিজ করা হতে পারে শুনলাম। তেলবাজির একটা সীমা আছে। সেতুর নাম শেখ হাসিনা ব্রিজ করার প্রস্তাবনা তেলবাজির সীমার বাইরে চলে গেছে। সরকারি দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদ নেতা নুরুল হক নুর বলেন, জনগণ রাস্তায় নামলে, আপনাদের অবস্থাও শ্রীলঙ্কার মতো হবে। নুর বলেন, একসময় শ্রীলঙ্কায় উন্নয়নের ঢোল বেজেছে। আজ তাদের অবস্থা আপনারা দেখছেন। আমাদের দেশের জনগণ ধৈর্য ধরছে বলেই যে দেশ শ্রীলঙ্কার মতো হবে না, তা ভাবার কারণ নেই। ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, আজ যদি বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন, আপনারা দেখবেন মাসে মাসে নয়, সপ্তাহে সপ্তাহে দাম বাড়ছে। হঠাৎ করেই বাজার থেকে সয়াবিন তেল উধাও, এর পরেই দাম বাড়তে থাকলো। তিনি বলেন, সারাদেশে অভিযান চালিয়ে একদিনে তিন লাখ লিটার অবৈধ মজুত রাখা সয়াবিন তেল আটক করেছে। কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো, একজন ব্যবসায়ীকে ৭৩ হাজার লিটার সয়াবিন তেল ও এক লাখ ৬০ হাজার লিটার পাম ওয়েল মজুত করার জন্য মাত্র এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সে যদি লিটার প্রতি দুই টাকাও লাভ করে, তাতেও তো দেড় লাখ টাকার মতো হয়ে যায়। এত কম জরিমানা তো হাস্যকর। এসব নামে মাত্র অভিযানের কারণেই অসৎ ব্যবসায়ীরা তাদের সিন্ডিকেট থেকে সরে আসছেন না। শুধুমাত্র তাই নয়, যখন তাদের জরিমানা করা হয়, তখন সরকারি দলের নেতারাই তাদের রক্ষা করতে ছুটে আসেন। কারণ তারা সেখান থেকে কমিশন পায়। ব্যবসায়ীদের কাছে সরকার জিম্মি মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি কমছে। তার বিপরীতে আমদানি ব্যয় বাড়ছে। আগামীতে আমদানি পণ্যের দাম আরও বাড়বে। কারণ সরকার ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি। আবার অবৈধ ভোটেই এই সরকার সংসদ সাজিয়েছে। যেখানে বেশিরভাগই ব্যবসায়ী। অতএব অবৈধ সংসদের পতন না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থার পরিবর্তন হবে না। এই সরকার গত ১৩ বছরে দেশকে মুমূর্ষু অবস্থায় নিয়ে গেছে, দেশ এখন আইসিইউতে রয়েছে। সংসদের শতকরা ৬২ জন এমপি ব্যবসায়ী। তারা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। আমরা দেখেছি, মানুষ যেখানে খেতে পারে না, সেখানে সরকার উন্নয়ন প্রচার করার জন্য জেলায় জেলায় এলইডি বোর্ড স্থাপন করছে। সরকার যদি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম না কমায়, তাহলে পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে সচিবালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণাও দেন নুরুল হক নুর।